উইলিয়ামসন-লাথামের যুগলবন্দি। গ্রিন পার্কে। ছবি: রয়টার্স।
ভারতের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় দিন, মানে শুক্রবার, ওরা যে ভাবে খেলল তাতে খুশি হওয়ার কথা নিউজিল্যান্ডের। এ দিন সকালের দিকে ভারত কিছু রান করে স্কোরটা তিনশো পার করে দিতে পেরেছিল। কিন্তু তার পর নিউজিল্যান্ড প্রাণপণ লড়াই করে গিয়েছে।
ওদের বোলারদের মধ্যে টেস্টের প্রথম দিন যেমন দেখলাম, ব্ল্যাক ক্যাপস ব্যাটসম্যানরাও দেখছি একটা নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে নেমেছে। মানে, ভারতীয় বোলারদের কী ভাবে মোকাবিলা করবে, সেই পরিকল্পনা। বিশেষ করে ভারতীয় স্পিনারদের। যে বলগুলো ঘুরছিল, সেগুলোর বিরুদ্ধে ওদের ডিফেন্স একেবারে জমাট ছিল। ওরা ধৈর্য ধরে খারাপ বলের জন্য অপেক্ষা করেছিল, যাতে সেগুলোকে বাউন্ডারির বাইরে পাঠাতে পারে। তবে হ্যাঁ, এখনও পর্যন্ত বল মারাত্মক ঘুরছে না।
ভারতের মাটিতে প্রথম আবির্ভাবে টম লাথামের ব্যাটিং আমার বেশ ভাল লাগল। ওর সুইপ করার একটা অভ্যেস আছে ঠিকই। কিন্তু ও সেই শটটাও দারুণ নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে খেলতে পারে দেখলাম। আর সুইপ করার জন্য সঠিক বলটাও বেছে নিতে পারে।
লাথামের সঙ্গী হিসেবে ছিল নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। যে আরও এক বার দেখিয়ে দিল, ওকে কেন আধুনিক ক্রিকেটের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে ধরা হচ্ছে। উইলিয়ামসন বেশ ঠান্ডা মাথার ব্যাটসম্যান। আর ও এমন কিছু শট খেলল, যেগুলো হাজার-হাজার দর্শককে খুশি করে দেবে।
রবিচন্দ্রন অশ্বিন আর রবীন্দ্র জাডেজার বিরুদ্ধে দুই ব্যাটসম্যানের ফুটওয়ার্ক খুব ভাল ছিল। যার জন্য ভারতীয় স্পিনাররা ওদের বিপদে ফেলার বিশেষ সুযোগ পায়নি। যদিও অশ্বিন আর জাডেজা দু’জনেই ভাল বল করেছে। পিচ থেকে সে রকম কিছু সাহায্য না পেয়েও। এই টেস্টে ভারত চার বোলার খেলাচ্ছে। হালফিলে বিরাট কোহালি যেটা করেনি।
টেস্ট ম্যাচটায় নিউজিল্যান্ডের কাজ এখনও অর্ধেক বাকি। তৃতীয় দিন কিন্তু ওদের খুব ভাল ব্যাট করতে হবে। পিচটা ক্রমশ জ্যান্ত হচ্ছে। এ বার উইলিয়ামসন আর ওর টিম যদি ভাল ব্যাট করে যেতে পারে, তা হলে বিরাট কোহালিদের কাজটা বেশ কঠিন হয়ে যাবে।
নিউজিল্যান্ডের জন্য এখন প্রথম ইনিংসে বড় স্কোর করাটা খুব জরুরি। কারণ আমাদের দেশের মাঠে চতুর্থ বা পঞ্চম দিনে খুব তাড়াতাড়ি খেলাটা ঘুরে যায়। শুক্রবার শেষ সেশনে ভাল বৃষ্টি হয়েছে। দেখা যাক, এই আর্দ্রতা তৃতীয় দিনের উইকেটে কোনও প্রভাব ফেলে কি না? আর তাতে অতিথিরা কোনও সাহায্য পায় কি না!
ভারত প্রথম ইনিংস (আগের দিন ২৯১-৯): জাডেজা ন.আ. ৪২, উমেশ ক ওয়াটলিং বো ওয়্যাগনার ৯, অতিরিক্ত ৬, মোট ৩১৮। পতন: ৪২, ১৫৪, ১৬৭, ১৮৫, ২০৯, ২৬১, ২৬২, ২৭৩, ২৭৭। বোলিং: বোল্ট ২০-৩-৬৭-৩, ওয়্যাগনার ১৫-৪-৪২-২, স্যান্টনার ২৩-২-৯৪-৩, ক্রেগ ২৪-৬-৫৯-১, সোধি ১৫-৩-৫০-১।
নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংস: গাপ্টিল এলবিডব্লিউ উমেশ ২১, লাথাম ন.আ. ৫৬, উইলিয়ামসন ন.আ. ৬৫, অতিরিক্ত ১০, মোট ১৫২-১। পতন: ৩৫। বোলিং: শামি ৮-১-২৬-০, উমেশ ৭-২-২২-১, জাডেজা ১৭-১-৪৭-০, অশ্বিন ১৪-১-৪৩-০, বিজয় ১-০-৫-০।