নজির: টানা পাঁচ বার সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ের পরে উল্লসিত ভারতীয় ফুটবলাররা। শুক্রবার নেপালে। টুইটার
চার ম্যাচে আঠারো গোল!
টানা পাঁচ বার সাফ চ্যাম্পিয়ন চ্যাম্পিয়ন হওয়ার চমকপ্রদ গৌরব!
সাফ কাপে টানা ২৩ ম্যাচ অপরাজিত থাকার অনন্য নজির!
এই সাফল্যের রসায়নটা কি? প্রশ্ন শুনে হাসলেন ভারতীয় মেয়ে দলের কোচ মায়মল রকি। শুক্রবার নেপালের বীরনগর থেকে ফোনে তাঁর জবাব, ‘‘কঠোর পরিশ্রম, অদম্য ইচ্ছাশক্তি এবং দলের কুড়িজনের একটা পরিবার হয়ে ওঠাই সাফল্যের আসল কারণ।’’ সংগঠক নেপালকে হারিয়ে এ দিনই ফের সাফ কাপ চ্যাম্পিয়ন ভারতের মেয়েরা। রাংশালা স্টেডিয়ামে কয়েক হাজার প্রতিপক্ষ সমর্থকদের তীব্র চিৎকারের মধ্যে শেষ পর্যন্ত ৩-১ গোলে দালিমা ছিব্বাররা জিতলেন বটে, তবে তাদের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করতে হল। একটা সময় ম্যাচ ১-১ হয়ে গিয়েছিল। ভারতের হয়ে তিনটি গোল করেন দালিমা, সঞ্জু এবং অঞ্জু। দালিমার গোল ৩০ গজ দূর থেকে দুরন্ত ফ্রি-কিকে।
‘‘প্রতিযোগিতায় চারটি ম্যাচ খেললাম। জানতাম, এটাই সবচেয়ে কঠিন হবে। কারণ নেপালের মাঠে খেলা। ওরা বারোজন মানে, সমর্থকদের নিয়ে আমাদের প্রতিপক্ষ হবে। তাই একটা নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে নেমেছিলাম। সেটাই সাফল্য দিয়েছে।’’ কাঠমান্ডু যাওয়ার বিমান ধরতে যাচ্ছিলেন সরাসরি মাঠ থেকে। দেশে ফেরার তাড়াও ছিল। তাড়াহুড়োর মধ্যেও সঙ্গীতা বাঁশফোরদের কোচের মুখ থেকে বেরোল দলগত সংহতির জয়গান। বলছিলেন, ‘‘ইন্দুমতী এ বার পাঁচ গোল করেছে। কিন্তু তবুও আমি ওকে সেরা ফুটবলারের কৃতিত্ব দেব না। কুড়ি জনকে কৃতিত্ব দেব। এ বার লক্ষ্য মায়ানমারে অলিম্পিক্সের যোগ্যতা অর্জন ম্যাচের জন্য প্রস্তুত হওয়া।’’
ভারতের টানা জয়ের ইতিহাসের সঙ্গে এ দিন নিজেও একটা ইতিহাসে ঢুকে পড়লেন সাফ জয়ী কোচ। দেশের মেয়ে ফুটবল দলের ইতিহাসে প্রথম মেয়ে কোচ হিসাবে খেতাব জিতলেন গোয়ার মায়মল। নিজে এক সময় অ্যাথলিট ছিলেন। সেখান থেকে আসেন ফুটবলে। রাইট ব্যাক হিসাবে দেশের হয়ে খেলেছেন। পরে ‘এ’ লাইসেন্স পাস করেন বছর পঁয়ত্রিশের মায়মল। বলছিলেন, ‘‘দেশের প্রথম মেয়ে কোচ হিসাবে সফল হলাম। এই সাফল্যটা জীবনের সেরা প্রাপ্তি।’’
গতবার শিলিগুড়িতে যে মেয়েরা চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন ভারতকে, তাদের পাঁচ জন ছিলেন এই দলে। গোলকিপার অদিতি চৌহান দুর্দান্ত খেলেন। বাঁচান অন্তত তিনটি নিশ্চিত গোল। দলে ছিলেন বাংলার মেয়ে সঙ্গীতা বাঁশফোরও। বলছিলেন, ‘‘আমরা চ্যাম্পিয়ন হব শপথ নিয়েই নেমেছিলাম। এ বারের জয়টা অনেক বেশি কঠিন ছিল।’’