রামচন্দ্রের তিরে বিদ্ধ ভারতীয় ক্রিকেট

কোহালি-সহ একাধিক ক্রিকেটার যে অনিল কুম্বলেকে আর কোচ চান না, সেই অবস্থানে শুক্রবারেও কোনও নড়চড় নেই। কিন্তু এমন কাজিয়াকেও ছাপিয়ে যাচ্ছে বোর্ডের পর্যবেক্ষক কমিটি থেকে ইতিহাসবিদ রামচন্দ্র গুহের পদত্যাগ এবং তাঁর বিদায়ী চিঠি ঘিরে তোলপাড়।

Advertisement

সুমিত ঘোষ

বার্মিংহাম শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৭ ০৩:৪৩
Share:

—ফাইল চিত্র।

কে বলবে আটচল্লিশ ঘণ্টা পরে ভারত-পাক ম্যাচ! বিরাট কোহালি বনাম মহম্মদ আমির কোথায়, যুদ্ধ লেগে গিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেটের অন্দরমহলে।

Advertisement

কোহালি-সহ একাধিক ক্রিকেটার যে অনিল কুম্বলেকে আর কোচ চান না, সেই অবস্থানে শুক্রবারেও কোনও নড়চড় নেই। কিন্তু এমন কাজিয়াকেও ছাপিয়ে যাচ্ছে বোর্ডের পর্যবেক্ষক কমিটি থেকে ইতিহাসবিদ রামচন্দ্র গুহের পদত্যাগ এবং তাঁর বিদায়ী চিঠি ঘিরে তোলপাড়।

লোঢা কমিটির প্রস্তাবিত সংস্কার কার্যকর করতে প্রেসিডেন্ট-সচিবকে সরিয়ে বোর্ডে চার সদস্যের কমিটি অব অ্যাডমিনিস্ট্রেটর্‌স (সিওএ) নিয়োগ করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। সেই চার জনের অন্যতম রামচন্দ্র পদত্যাগ করেছিলেন গত কাল। আজ তিনি তীব্র পত্রাঘাত করেছেন সিওএ-কে। বিঁধেছেন মহাতারকা-পুজোর রীতিকে।

Advertisement

নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসনের বিরুদ্ধে সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগ ছিল স্বার্থের সংঘাতের। রামচন্দ্র লিখেছেন, স্বার্থের সংঘাত আজও চলছে ভারতীয় ক্রিকেটে। সুনীল গাওস্কর থেকে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, মহেন্দ্র সিংহ ধোনি— কাউকে ছাড়েননি তিনি।

গাওস্কর সম্পর্কে লিখেছেন, খেলোয়াড়দের এজেন্ট হিসেবে কাজ করা একটি সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হয়েও তিনি বোর্ডের বেতনভুক ধারাভাষ্যকার। ওই সংস্থা জাতীয় দলের যে ক্রিকেটারদের সঙ্গে কাজ করে, তাঁদের সম্পর্কেই গাওস্কর ধারাভাষ্য দেন। এটি স্বার্থের সংঘাত। রামচন্দ্র লিখেছেন, ‘গাওস্করের উচিত হয় ওই সংস্থা, নয়তো বোর্ডের চাকরি ছেড়ে দেওয়া।’ রাহুল দ্রাবিড়ের নাম না করে তিনি লিখেছেন, জুনিয়রদের কোচের সঙ্গে বোর্ড দশ মাসের চুক্তি করেছে ইচ্ছাকৃত ভাবে। যাতে বাকি দু’মাস তিনি আইপিএলে মেন্টর হতে পারেন। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় সম্পর্কে রামচন্দ্রের বক্তব্য, সিএবি প্রেসিডেন্ট হয়েও সৌরভ কলাম লেখেন, ধারাভাষ্য দেন। সৌরভকে অবশ্য বোর্ডের ‘অম্বুডসম্যান’-ই ধারাভাষ্যের অনুমতি দিয়েছিলেন।

আরও পড়ুন:কুম্বলে-কোহালি দ্বৈরথ মেটাতে আসরে নামলেন মহারাজ

আর ধোনি? রামচন্দ্রের বক্তব্য, অধিনায়ক থাকার সময়ে খেলোয়াড়দের এজেন্ট সংস্থায় সক্রিয় ছিলেন তিনি। শুধুমাত্র ওয়ান ডে এবং টি-টোয়েন্টি খেলে ধোনি সর্বোচ্চ ‘এ’ গ্রেড চুক্তি পাবেন, অথচ ঘরোয়া ক্রিকেটারদের টাকা বাড়ানোই হবে না— এই ‘অসাম্যের’ কথাও রয়েছে চিঠিতে।

রামচন্দ্রের অভিযোগের সারমর্ম— সুপারস্টার হলেই যেন সাত খুন মাফ! যদিও পাল্টা প্রশ্নও রয়েছে। কুম্বলের প্রশংসা করেছেন এই ইতিহাসবিদ। অথচ কোচ হওয়ার সময়ে কুম্বলের বিরুদ্ধেও যে স্বার্থের সংঘাতের অভিযোগ উঠেছিল, সেই প্রসঙ্গ চিঠিতে নেই। কুম্বলেও তখন খেলোয়াড়দের এজেন্ট হিসেবে কাজ করা সংস্থার কর্ণধার ছিলেন। তাঁকে কোচ বেছে নেওয়া কমিটির সদস্য ভি ভি এস লক্ষ্মণও ছিলেন সেই সংস্থায়।

চিঠির উত্তর কী আসে, বলবে সময়। আপাতত পাক গোলা নয়, রামচন্দ্রের তিরেই বিদ্ধ ভারতীয় ক্রিকেট!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন