৩৬ বছর পর নকআউটের চ্যালেঞ্জ

ফাইনাল ভেবে আজ মাঠে নামতে হবে সৃজেশদের

হকির জাদুকর ধ্যানচাঁদের ছেলে সর্দারদের অভিযান নিয়ে লিখছেন শুধু আনন্দবাজারে।লেখার শুরুতেই বলে রাখি যে, কানাডার সঙ্গে ভারতকে ড্র করতে দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়ার কিছু নেই। শুক্রবার রাত থেকে অনেককে বলতে শুনছি যে, পনেরো নম্বর টিমের সঙ্গে ভারত পারল না। র‌্যাঙ্কিংয়ে পাঁচ নম্বরে থেকেও।

Advertisement

অশোক কুমার ধ্যানচাঁদ

শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০১৬ ০৩:০৪
Share:

সৃজেশদের সামনে আজ বেলজিয়াম।

লেখার শুরুতেই বলে রাখি যে, কানাডার সঙ্গে ভারতকে ড্র করতে দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়ার কিছু নেই। শুক্রবার রাত থেকে অনেককে বলতে শুনছি যে, পনেরো নম্বর টিমের সঙ্গে ভারত পারল না। র‌্যাঙ্কিংয়ে পাঁচ নম্বরে থেকেও। তারা ফর্মে থাকা বেলজিয়ামের সঙ্গে কোয়ার্টার ফাইনালে পারবে কী করে?

Advertisement

আমি কিন্তু বলব, পারবে। পারবে যদি সৃজেশের ভারত শুক্রবারের কানাডা হয়ে উঠতে পারে। যদি ও রকম খিদেটা বার করে আনতে পারে।

নিঃসন্দেহে কোয়ার্টার ফাইনালে বেলজিয়াম ফেভারিট। একে তো টিমের প্লেয়াররা পুরনো। গত তিন-চার বছর ধরে ভাল খেলছে। অলিম্পিক্সে ওরা কী ফর্মে আছে, তা অস্ট্রেলিয়া-স্পেনকে টপকে গ্রুপ শীর্ষে থাকাতেই পরিষ্কার। কিন্তু আমার মনে হয়, অস্ট্রেলিয়া বা নেদারল্যান্ডস সামনে পড়ে গেলে অবচেতনে যে কাঁপুনিটা থাকত ভারতের, তা থাকবে না। বেলজিয়াম যতই ভাল খেলুক। যতই ওদের দুর্দান্ত দেখাক। নামটা তো আর অস্ট্রেলিয়া বা নেদারল্যান্ডস নয়। সৃজেশদের কিছুটা খোলা মনে কিন্তু নামা উচিত।

Advertisement

আমি দু’টো পরামর্শ দেব সর্দারদের। একটা মানসিক, একটা ট্যাকটিক্যাল। প্রথমত, ম্যাচটা তোমরা ফাইনাল ভেবে নামো। কোয়ার্টার ফাইনাল খেলছ, ভাবতেই যেও না। বরং ভাবতে থাকো যে, এই ম্যাচটা হেরে গেলে এত দিনের পরিশ্রম শেষ। এত বছর পর হকি টিম নিয়ে আবার স্বপ্ন দেখা শুরু হয়েছে। রবিবার হেরে গেলে তার কোনও মানেই আর থাকবে না। দ্বিতীয়ত, যত পারবে বল দখলে রাখবে। এ সব ম্যাচে বল পজেশনটা আসল। বেলজিয়াম যদি বলের দখল নিয়ে নেয়, তা হলে বল্মীকি-নিক্কিন-উথাপ্পাদের নিয়ে ভারতের পাওয়ার লাইনের কাজ হবে সেটা আবার ছিনিয়ে নেওয়া। বলতে চাইছি, বেলজিয়ামকে কোনও সুযোগই তৈরি করতে দেওয়া যাবে না। আমাদের ডিফেন্স নিয়ে কিছু বলার নেই। রিওয় এত দূর আমরা এসেছি, ডিফেন্সের ভরসাতেই। যে পাওয়ার লাইনের কথা বললাম, কানাডা ম্যাচে তাদের আমার বেশ ভালও লেগেছে। শুধু দেখতে হবে পাসিংটা যাতে নিখুঁত হয়। আর পেনাল্টি কর্নার নষ্ট করা যাবে না।

ওহ্, উপরের দিকে শুক্রবারের কানাডা বলতে কী বুঝিয়েছি, পুরোটা বলা হয়নি। একটা গল্প দিয়ে ব্যাপারটা শুরু করি। আটাত্তরের বিশ্বকাপ। সামনে সেই কানাডা। সত্যি বলতে কী, কানাডাকে আমরা সে দিন পাত্তাও দিইনি। ভুগেওছিলাম। ১-৩ হারতে হয়েছিল। স্রেফ ভাল কিছু করে দেখানোর প্রবল ইচ্ছেয়, জোশে ওরা আমাদের সে দিন হারিয়ে দিয়েছিল। সর্দাররাও শুক্রবার একই সমস্যায় পড়ল। কিন্তু এই একই জোশ, জেতার খিদে রবিবার তো ভারতও দেখাতে পারে। এত বছর পর অলিম্পিক্স কোয়ার্টার ফাইনালের মতো মঞ্চে ভারত নামছে, সামনে আবার বেলজিয়ামের মতো টিম, পাল্টা লড়াইয়ে সর্দাররা প্রতিপক্ষের কালঘাম ছুটিয়ে দিলে আমি অন্তত অবাক হব না। একটা ব্যাপার শুধু খচখচ করছে। এসভি সুনীলের চোট। অল্টম্যান্সের প্ল্যানিং কিন্তু অনেকটাই সুনীলকে ঘিরে। যদি রবিবার হাতে চোট পাওয়া সুনীলকে না পাওয়া যায়, উইং প্লে ধাক্কা খাবে। ডিফেন্সের উপর চাপটাও বাড়বে তখন।

প্রার্থনা করছি, সুনীল আজ শুধু খেলে দিক। বাকিটা দেখে নেওয়া যাবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement