নাগপুরে ফের সেই স্পিন জুটিই ঘাতক

মজার ব্যাপার দেখুন শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ইডেনে প্রথম টেস্টে দুই ইনিংস মিলিয়ে সতেরো উইকেট তুলে নিয়েছিল ভারতীয় পেসাররা।

Advertisement

সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৭ ০৪:৩১
Share:

আগ্রাসী: প্রথম দিন তিন উইকেট জাডেজার। অশ্বিন নিলেন ৪। ছবি: পিটিআই।

একটা ক্রিকেট ম্যাচের মেরুদণ্ড তার বাইশ গজ। ম্যাচটা কেমন হতে চলেছে বা ম্যাচের ফয়সালা হবে কি না তা ঠিক করে দেয় এই বাইশ গজ বা পিচ।

Advertisement

মজার ব্যাপার দেখুন শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ইডেনে প্রথম টেস্টে দুই ইনিংস মিলিয়ে সতেরো উইকেট তুলে নিয়েছিল ভারতীয় পেসাররা। কিন্তু সেই ম্যাচের পর বাহাত্তর ঘণ্টা পার হতেই শুক্রবার সম্পূর্ণ অন্য বাইশ গজ দেখা দিল নাগপুরের জামথা স্টেডিয়ামে। যেখানে ফের দাপট দেখাতে শুরু করে দিল ভারতীয় স্পিন জুটি— অশ্বিন ও জাডেজা।

কলকাতায় প্রথম টেস্টে এই দু’জনে দুই ইনিংস মিলিয়ে বল করেছিল ১০ ওভার। কোনও উইকেট পায়নি। নাগপুরে কিন্তু শুক্রবার শ্রীলঙ্কার দশ ব্যাটসম্যানের মধ্যে সাত জনকেই প্যাভিলিয়নের রাস্তা দেখিয়ে দিয়েছে জাডেজা-অশ্বিন জুটি। ইশান্ত শর্মার তিন উইকেট বাদ দিলে এ দিন, বাইশ গজে রাজত্ব করে গেল এই দু’জনেই। শ্রীলঙ্কাকে ২০৫ রানে বেঁধে রেখে জাডেজা তুলে নিল তিন উইকেট (৩-৫৬)। আর অশ্বিনের শিকার চার উইকেট (৪-৬৭)। যার মধ্যে রয়েছে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজ, দীনেল চণ্ডীমল, নিরোশান ডিকওয়েলা-রা।

Advertisement

একটা বিষয় প্রথম দিনেই পরিস্কার যে, নাগপুর টেস্টও সাড়ে তিন দিনের মধ্যে শেষ হয়ে যেতে পারে। আর যে ম্যাচ জিতে সিরিজে ১-০ এগিয়ে যেতে পারে বিরাট কোহালির ভারত। মহম্মদ শামির চোট। ভুবনেশ্বর কুমারের বিয়ে। শিখর ধবনও ছুটি নয়েছে। দ্বিতীয় টেস্টের দলে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। মুরলী বিজয় খেলছে ধবনের জায়গায়। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের আগে এই ভারতীয় দল শ্রীলঙ্কা সিরিজ খেলেই প্রস্তুতি সারতে চাইছে। তাই রোহিত শর্মাকে খেলাচ্ছে টিম ম্যানেজমেন্ট।

দক্ষিণ আফ্রিকায় ভারতীয় উপমহাদেশের মতো উইকেট থাকবে না। সেখানে পেস সহায়ক পিচে ভারতকে কোণঠাসা করতে প্রস্তুত হচ্ছে ডেল স্টেইন, মর্নি মর্কেল, কাগিসো রাবাডা-রা। ভারতীয় দলের তরফে তার উত্তর নিশ্চয়ই ইশান্ত শর্মা নয়। শামি, উমেশ যাদব, ভুবনেশ্বর কুমার-রাই ডিভিলিয়ার্সের দেশে সেরা পেস অস্ত্র হবে। তবু নাগপুরে ভাল লাইনে বল করে তিন উইকেট তুলে নিল ইশান্ত। শ্রীলঙ্কার দুই ওপেনার সমরাবিক্রমা (১৩) এবং দ্বিমুত করুণারত্নে (৫১)-কে আউট করে প্রথম ধাক্কাটা দিয়েছিল ইশান্তই (৩-৩৭)। তবু বলব, দক্ষিণ আফ্রিকায় কোহালির দল যদি গতিতে পেস বোলিং দিয়ে পাল্টা উত্তর দিতে চায়, তা হলে দ্রুত ম্যাচ ফিট হয়ে উঠতে হবে মহম্মদ শামিকে।

লাঞ্চের পর বল ঘুরতে শুরু করতেই অশ্বিন-জাডেজার সামনে পড়ে দ্রুত শেষ হয়ে গেল শ্রীলঙ্কার ইনিংস। বোঝা যাচ্ছে, প্রথম ইনিংসে ভারত যদি স্কোরে এগিয়ে গিয়ে ভাল জায়গায় থাকে, শ্রীলঙ্কার পক্ষে ভারতীয় স্পিনের বিরুদ্ধে চতুর্থ ইনিংসে ঘুরে দাঁড়ানো বেশ কষ্টকর। জাডেজা এ দিন প্রথম থেকেই ঠিক লাইনে বল করে গেল। অশ্বিন গত কয়েক ম্যাচ ধরে লেগ-মিডল স্টাম্প লক্ষ্য করে বল করছিল। এ দিন নাগপুরে লাইন পরিবর্তন করে সুফল পেয়েছে। প্রমাণ করে দিয়েছে এই মুহূর্তে দেশের সেরা অফস্পিনার ও-ই। অন্য দিকে, জাডেজা বাঁ হাতি স্পিনের সঙ্গে আর্মার মিশিয়ে শ্রীলঙ্কা ব্যাটিংকে দিশাহারা করে তুলল। যেটা বেশি করে নজরে পড়ল, তা হল, অশ্বিন-জাডেজার বোলিংয়ে শৃঙ্খলা।

স্কোরকার্ড

শ্রীলঙ্কা ২০৫

ভারত ১১-১

শ্রীলঙ্কা (প্রথম ইনিংস)

সমরাবিক্রমা ক পূজারা বো ইশান্ত ১৩

দিমুথ করুণারত্নে এলবিডব্লিউ ইশান্ত ৫১

থিরিমানে বো অশ্বিন ৯

ম্যাথিউজ এলবিডব্লিউ জাডেজা ১০

দীনেশ চণ্ডীমল এলবিডব্লিউ অশ্বিন ৫৭

ডিকওয়েলা ক ইশান্ত বো জাডেজা ২৪

দাসুন শনাকা বো অশ্বিন ২

পেরেরা এলবিডব্লিউ জাডেজা ১৫

রঙ্গনা হেরাথ ক রাহানে বো অশ্বিন ৪

সুরঙ্গা লাকমল ক ঋদ্ধি বো ইশান্ত ১৭

লাহিরু গামাগে ন.আ. ০

অতিরিক্ত

মোট ২০৫

পতন: ২০-১ (সমরাবিক্রমা, ৪.৫), ৪৪-২ (থিরিমানে, ২৪.৬), ৬০-৩ (ম্যাথিউজ, ২৯.৬), ১২২-৪ (করুণারত্নে, ৫০.৬), ১৬০-৫ (ডিকওয়েলা, ৬০.৬), ১৬৫-৬ (শনাকা, ৬৫.২), ১৮৪-৭ (পেরেরা, ৭০.৪), ১৮৪-৮ (চণ্ডীমল, ২০.৪), ২০৫-৯ (লাকমল, ৭৮.৬), ২০৫-১০ (হেরাথ, ৭৯.১)।

বোলিং: ইশান্ত শর্মা ১৪-৩-৩৭-৩, উমেশ যাদব ১৬-৪-৪৩-০, আর. অশ্বিন ২৮.১--৭-৬৭-৪, রবীন্দ্র জাডেজা ২১-৪-৫৬-৩।
ভারত (প্রথম ইনিংস)

লোকেশ রাহুল বো গামাগে ৭

মুরলী বিজয় ন.আ. ২

চেতেশ্বর পূজারা ন.আ. ২

অতিরিক্ত

মোট ১১-১

পতন: ৭-১ (রাহুল, ৩.৫)।

বোলিং: সুরঙ্গা লাকমল ৪-১-৭-০, লাহিরু গামাগে ৪-২-৪-১।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন