আইএসএল এবং আই লিগ মিলিয়ে দেওয়া সম্ভব কি না এবং সেটা কী ভাবে— দেখতে কমিটি গড়ছে ফেডারেশন।
তবে কবে দু’টো টুর্নামেন্ট এক হয়ে যাবে, তা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। ক’টা দল হবে তা নিয়েও আলোচনা হয়নি। সভা থেকে বেরিয়ে এক ক্লাব কর্তা বললেন, ‘‘একটা কমিটি মিটিংয়ের পর আর একটা কমিটি হল। তার ফল যে কবে ফলবে কেউ জানে না। তবে আমরা খুশি এই প্রথম স্পনসরদের বড় কর্তাদের সামনে কিছু বলার সুযোগ পাওয়া গেল।’’
আই লিগ ক্লাবগুলির বহু দিনের দাবি মেনে তাদের সঙ্গে স্পনসরদের সর্বোচ্চ পর্যায়ের কর্তারা আলোচনায় বসেছিলেন মুম্বইয়ের পাঁচতারা হোটেলে। আইএমজি-আরের বড় কর্তা নিখিল মেসওয়ানি এবং শ্রীনি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশন প্রেসিডেন্ট প্রফুল্ল পটেল-সহ অন্য কর্তারা। সেখানে আইএসএলের বিপণন ও প্রচারের চাপে দিশাহারা আই লিগের কর্তারা নানা বিষয় নিয়ে সরব হন। তাঁদের সম্মিলিত বক্তব্য, আই লিগের সম্প্রচার থেকে শুরু করে বিপণন, কোনও কিছুই হচ্ছে না। সে দিকে নজরও দেওয়া হচ্ছে না। ফলে ক্লাবগুলি সমস্যায়। অনেকেই লিগ থেকে টিম তুলে নিতে চাইছে।
ক্লাবগুলির সম্মিলিত চাপে শেষ পর্যন্ত তিনটি ভাগে ভাগ করা হয় কাজ। এক) শর্ট টার্ম। অর্থাৎ আসন্ন আই লিগে কী ভাবে ভাল কিছু করা যায় তার রূপরেখা তৈরি। দুই) মিডল টার্ম অর্থাৎ যত দিন দু’টো লিগ এক না হচ্ছে তত দিন কী ভাবে এগনো হবে। তিন) দু’টো টুর্নামেন্ট এক করতে হলে কী সমস্যা হতে পারে বা আদৌ তা সম্ভব কি না, তা নিয়ে কমিটি গঠন।
ঠিক হয়, যে কমিটি গড়া হবে তাতে ফেডারেশন, আইএমজি-আর এবং ক্লাবের প্রতিনিধিরা থাকবেন। দশ থেকে পনেরো জনের কমিটি হবে। তারা খতিয়ে দেখবে সব কিছু। আই লিগের এগারো দলের মধ্যে একমাত্র রয়্যাল ওয়াহিংডো ছাড়া সব ক্লাবের প্রতিনিধিরাই উপস্থিত ছিলেন সভায়। এমনকী পুণের যে দু’টো দল টিম তুলে দেওয়ার কথা ভাবছে সেই পুণে এফসি এবং ভারত এফসি-র প্রতিনিধিরাও ছিলেন সভায়। মোহনবাগানের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সহ সচিব সৃঞ্জয় বসু এবং অর্থসচিব দেবাশিস দত্ত। ইস্টবেঙ্গলের প্রতিনিধি হিসাবে গিয়েছিলেন অমিত সেন এবং অরুণাভ ভট্টাচার্য।
সভায় কলকাতার দুই ক্লাবের কর্তারাই বলেন, ‘‘আইএসএল দারুণ জাঁকজমক করে শেষ হল আর তার পরের দিনই ভারত আট গোলে হারল, এতে ফুটবলের কোনও উন্নতি হবে না।’’ বাগানের এক কর্তা বলেন, ‘‘ভারতীয় ফুটবলের উন্নতির জন্য ক্লাবগুলিকে আরও আলোয় আনা দরকার। আই লিগের সব ডিভিশনকে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া দরকার। কারণ সেখান থেকেই জাতীয় দলের ফুটবলার বেরোবে।’’
প্রায় দু’ঘণ্টা চলে সভা। আলোচনা হলেও কমিটি গড়ার সিদ্ধান্ত ছাড়া আর কিছু হয়নি। যা দেখে টিম তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া পুণের কর্তারা বিরক্ত। সভায় ফেডারেশন প্রেসিডেন্ট প্রফুল্ল বলেন, ‘‘আমরা অদূর ভবিষ্যতে হয়তো দুটো লিগ এক করে দেব। তবে সব দিক খতিয়ে দেখতে হবে।’’ পুণের ক্ষুব্ধ দুই ক্লাবের মালিকরা দেশের বাইরে। তাঁরা ফিরলে তিনি কথা বলবেন বলে ক্লাবগুলিকে আশ্বাস দেন ফেডারেশন প্রেসিডেন্ট।