উপাসনা গিল। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
নেপালে খেলতে যাওয়া ভারতের ভলিবল দলকে উদ্ধার করল ভারতীয় দূতাবাস। টেলিভিশন উপস্থাপিকা উপাসনা গিলের সাহায্যের আর্জি সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর উদ্যোগী হয় কাঠমান্ডুর ভারতীয় দূতাবাস। ভলিবল খেলোয়াড় এবং সংশ্লিষ্ট সকলকে কাঠমান্ডুতে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে আনা হয়েছে।
গত বুধবার সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয় উপাসনার আর্জি। তিনি ভিডিয়ো বার্তায় বলেছিলেন, ‘‘আমি উপাসনা গিল। ভারতীয় দূতাবাসের কাছে আমরা সাহায্যের আর্জি জানাচ্ছি। অন্য কেউ যদি আমাদের সাহায্য করতে পারেন, তাঁদেরও অনুরোধ করছি। এখন নেপালের পোখারায় আটকে রয়েছি। ভলিবল লিগ আয়োজন করতে নেপালে এসেছিলাম। যে হোটেলে ছিলাম, সেটা পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ব্যাগ এবং অন্য সব কিছু হোটেলের ঘরে রেখেই বেরিয়ে আসতে হয়েছিল। হামলার সময় স্পা নিচ্ছিলাম। কিছু লোক লাঠি নিয়ে আমাকে তাড়া করেন। তখন পালিয়ে আসা ছাড়া অন্য কিছু ভাবার সুযোগ ছিল না।’’
উপাসনা নেপালে গিয়েছিলেন প্রতিযোগিতার আয়োজক হিসাবে। ভারতের একটি দলও গিয়েছিল ওই প্রতিযোগিতায় খেলতে। তাঁরা যে হোটেলে ছিলেন, মঙ্গলবার সেখানে হামলা চালান প্রতিবাদীরা।প্রাণ হাতে করে পালিয়ে যেতে হয়েছিল তাঁদের। আশ্রয় নিয়েছিলেন পোখারার একটি হোটেলে। উপাসনার সাহায্যের ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়ার পর সক্রিয় হন দূতাবাসের আধিকারিকেরা। উপাসনাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন দূতাবাসের কর্মীরা। স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিরাপদে সকলকে কাঠমান্ডুতে নিয়ে আসা হয়েছে। রাখা হয়েছে নিরাপদ জায়গায়। সেখান থেকে ভারতের ফেরানোর ব্যবস্থা করা হবে। কাঠমান্ডুর নিরাপদ স্থানে পৌঁছোনোর আগে পর্যন্ত উপাসনাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছিলেন ভারতীয় দূতাবাসের কর্মীরা।
গত সপ্তাহে সমাজমাধ্যমের উপর নেপাল সরকার নিষেধাজ্ঞা জারি করে। তার প্রতিবাদে গত সোমবার সকাল থেকে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে ওই দেশের ছাত্র-যুবরা। দেশজুড়ে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। ছাত্র-যুবদের আন্দোলনের মুখে সোমবার রাতেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয় নেপাল সরকার। কিন্তু এর পরেও বিদ্রোহ থামেনি। মঙ্গলবার সকাল থেকে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির পদত্যাগের দাবিতে বিদ্রোহ আরও জোরালো হয়। একের পর এক নেতা-মন্ত্রীর বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করতে থাকে বিক্ষুব্ধ জনতা। এই বিদ্রোহের মাঝেই প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন ওলি। কিন্তু বিক্ষোভ থামেনি। অশান্ত নেপালে এখনও পর্যন্ত ৫১ জনের মৃত্যু হয়েছে।