ইয়র্কারে বাজিমাত বুমরাদের

কিছু দিন আগে সৌমিত্রদার সঙ্গে কথা হচ্ছিল। সৌমিত্রদা মানে কিংবদন্তি অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের কথা বলছি। জানতে চাইছিলাম, আপনি আইপিএল দেখছেন? সৌমিত্রদা খুব সুন্দর একটা উত্তর দিয়েছিলেন।

Advertisement

সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৭ ০৪:৪১
Share:

কিছু দিন আগে সৌমিত্রদার সঙ্গে কথা হচ্ছিল। সৌমিত্রদা মানে কিংবদন্তি অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের কথা বলছি। জানতে চাইছিলাম, আপনি আইপিএল দেখছেন? সৌমিত্রদা খুব সুন্দর একটা উত্তর দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘দেখে মনে হচ্ছে গল্ফগ্রিনের মাঠে কখনও ধোনি, কখনও স্মিথ, কখনও কোহালি, কখনও স্টোকস খেলছে।’ সে দিনই বুঝে যাই সৌমিত্রদা সাদা জামা-প্যান্ট পরা ক্রিকেটটা দেখতেই ভালবাসে। ইডেনে অনেক টেস্ট ম্যাচেই সৌমিত্রদাকে দর্শক হিসেবে দেখতে পেয়েছি আমরা।

Advertisement

রবিবার রাত পৌনে বারোটা নাগাদ আইপিএল ফাইনাল শেষ হওয়ার পরে একটা কথা মনে হচ্ছে। আপনি টেস্ট ক্রিকেটের ভক্ত হতে পারেন, কিন্তু এ রকম একটা ম্যাচ না দেখলে সেটা আপনারই ক্ষতি। আমার দেখা আইপিএলের সেরা ফাইনাল। নিঃসন্দেহে এ বারের আইপিএলের সেরা ম্যাচ।

মুম্বই ইনিংস ১২৯ রানে আটকে যাওয়ার পরে আমারও মনে হয়েছিল ট্রফিটা স্টিভ স্মিথের হাতেই উঠছে। ভাল উইকেট, অল্প টার্গেট, ব্যাটিং লাইনে স্মিথ, মহেন্দ্র সিংহ ধোনির মতো ব্যাটসম্যান। যারা এর চেয়ে অনেক কঠিন পরিস্থিতিতে রান তাড়া করে ম্যাচ জিতিয়েছে। কিন্তু উল্টো দিকে এমন একটা টিম ছিল, যারা কোনও অবস্থাতেই হার মেনে নেয় না। মুম্বইয়ের প্লেয়ার হয়তো টিমটায় বেশি নেই, কিন্তু মুম্বইয়ের খারুস মনোভাবটা ছিল।

Advertisement

আরও পড়ুন: শেষ ওভার নিজে এসে চেয়ে নেন জনসন

মুম্বইয়ের ম্যাচ জেতার পিছনে দু’জন নায়ক এবং দু’টো টার্নিং পয়েন্টের কথা বলব। দুই নায়ক অবশ্যই দুই পেসার— যশপ্রীত বুমরা এবং লাসিথ মালিঙ্গা। অবিশ্বাস্য বল করল দু’জন। ডান হাতি ব্যাটসম্যানদের ডান পায়ের গোড়ালিতে ইয়র্কার মারলে শট খেলা সম্ভব নয়। মালিঙ্গা আর বুমরা নিয়ম করে ওই জায়গায় বলটা ফেলে গেল। ১৯তম ওভারে একটা মাত্র ডেলিভারি ছাড়া বুমরা নিখুঁত ছিল।

প্রথম টার্নিং পয়েন্ট আমার কাছে বুমরা-র বলে ধোনির কট বিহাইন্ড। স্লো বলটা মারতে গিয়ে ক্যাচ তোলে ধোনি। দ্বিতীয় টার্নিং পয়েন্টটা শেষ ওভারে। মিচেল জনসনের তৃতীয় বলটা অফে তুলে দিয়েছিল স্মিথ। খুব ভাল শট। বিশেষ করে যখন সার্কলের বাইরে চার জন ফিল্ডার ছিল লেগ সাইডে। কারণ স্মিথের অন সাইডে লিফ্ট করার প্রবণতা আছে। অফ সাইডে ফিল্ডার ছিল এক জনই। স্মিথের দুর্ভাগ্য আর মুম্বইয়ের চ্যাম্পিয়ন্স লাক, স্মিথের মারা বল ঠিক ওই এক জন ফিল্ডারের হাতেই চলে গেল। অম্বাতি রায়ডু চাপের মধ্যে অসাধারণ একটা ক্যাচ নিল।

শেষ ওভারে পুণের দরকার ছিল ১১। জনসন ওই রানটা করতে দিল না। কিন্তু আমি যদি রোহিতের জায়গায় থাকতাম, তা হলে অঙ্ক কষে বুমরা-কে শেষ ওভারে নিয়ে আসতাম। যাই হোক, জনসন ম্যাচ জিতিয়ে দেওয়ায় আর কোনও প্রশ্ন উঠবে না।

অনেকে বলবেন, এই ম্যাচটা পুণে হেরে গেল ব্যাটিং ব্যর্থতার জন্য। আমি কিন্তু বলব, পুণেকে হারিয়ে দিল মুম্বই। ওদের বোলিং, গ্রাউন্ড ফিল্ডিং, রোহিতের ক্যাপ্টেন্সি— সব মিলিয়ে বাজিমাত করে গেল দু’বারের চ্যাম্পিয়ন টিম।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন