সানরাইজার্স হায়দরাবাদের সঙ্গে এলিমিনেটরের ম্যাচে আমরা আমাদের সেরা বোলিং আর ফিল্ডিং করলাম। একেবারে ঠিক সময় সেরাটা বার করে আনা যাকে বলে। সানরাইজার্স কখনও ম্যাচটা ধরতেই পারেনি। একটার পর একটা ওভার চলে গিয়েছে আর বাউন্ডারি মারতে না পেরে ওরা চাপে পড়ে গিয়েছে।
ডেভিড ওয়ার্নারদের বিরুদ্ধে আমাদের পরিকল্পনা পুরোপুরি খেটে গিয়েছে। তবে মনে রাখতে হবে, শুধু পরিকল্পনা করলেই হয় না, সেটা মাঠে নেমে কাজে লাগাতেও হয়। আইপিএলের সব টিমই যখন মাঠে নামে, স্ট্র্যাটেজি কষেই নামে। আর এটা সবার কাছেই প্রত্যাশিত, কারণ সব দলেই বিশ্বসেরা ক্রিকেটার আছে। আসল ব্যাপারটা হল, পরিকল্পনাটা মাঠে নেমে কাজে লাগানো।
হায়দরাবাদের প্রত্যেক ব্যাটসম্যানকে নিয়ে আমরা আলাদা আলাদা প্ল্যান করেছিলাম। ২০ ওভারে আমাদের বোলাররা একবারও নির্দিষ্ট পরিকল্পনার বাইরে গিয়ে বল করেনি। দুর্দান্ত পারফরম্যান্স। এর পরে যদি বৃষ্টির জন্য ম্যাচ ভেস্তে যেত, তা হলে ওদের চেয়ে হতাশ আর কেউ হতো না। একটা সময় তো মনে হচ্ছিল, ম্যাচটা বুঝি গেল। কেকেআর ম্যানেজমেন্টেও উদ্বেগের মুহূর্ত তৈরি হয়েছিল। আমাদের বোলাররা যা বল করেছিল, তার পর অবশ্যই আমাদের একটা সুযোগ প্রাপ্য ছিল ম্যাচটা জেতার।
আইপিএলে আমরা সবাই পায়ে সর্ষে লাগিয়ে ঘুরি। এই এক জায়গায় একটা ম্যাচ খেললাম, তার পরেই সেখান থেকে আর এক জায়গায়। এক দিন বাদে বাদে খেলা। গভীর রাত বা ভোরবেলার বিমান ধরা। সে সব তাও ঠিক আছে। তবে রাত দেড়টার সময় জয়ের রানটা আসছে, এটা সত্যিই একটা পাগলামি।
আরও পড়ুন: গাঁট মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে আজ ‘সেমিফাইনাল’ নাইটদের
ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে যখন আমাদের টার্গেট স্কোর দাঁড়ল ৩৬ বলে ৪৮, বুঝে গিয়েছিলাম ম্যাচ জিতছি। পর পর কয়েকটা উইকেট পড়ে গেলেও আমি নিশ্চিন্ত ছিলাম। এমনকী ছ’-সাতটা উইকেটও যদি পড়ে যেত, আমার কোনও ভাবান্তর হতো না। এতটাই আত্মবিশ্বাসী ছিলাম।
ওই গভীর রাতে খেলে ওঠার পরে ছেলেরা বৃহস্পতিবারটা বিশ্রাম নিয়েই কাটাল। এই বিশ্রামটা দরকার ছিল। আমার মনে হয় না, বৃহস্পতিবার দুপুরের আগে কেউ ঘুম থেকে উঠেছে বলে। আজ, শুক্রবার আমরা মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে খেলতে নামার আগে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী। কারণ, আমাদের পরিচিত পরিবেশ। এক দিন আগেই তো খেললাম। আশা করছি, বৃষ্টি ছাড়া আর সব কিছুই একই রকম থাকবে।
এই রকম লম্বা টুর্নামেন্টে ছোটখাটো চোট আঘাতের সমস্যা থাকবেই। তবে, শেষ মুহূর্তে কোনও সমস্যা না হলে, বলে দেওয়া যায় আমাদের সবাই ফিট। আমরা গোটা টুর্নামেন্ট জুড়ে একটা ব্যাপারের ওপর নজর দিয়েই প্রথম এগারো বেছেছি। সেটা হল, যে পরিবেশের জন্য যে দল নামানো উচিত, সেটাই নামাও। শুক্রবারও চিন্নাস্বামীর পরিস্থিতির কোনও বদল হবে বলে আমার মনে হয় না। তাই আমাদের প্রথম দলেও বদল হওয়ার সম্ভাবনা কম। কলকাতা বনাম মুম্বই ম্যাচ এলেই দু’দলের মুখোমুখি রেকর্ডের কথাটা উঠবেই। তবে আমার কাছে এই তথ্যের কোনও গুরুত্ব নেই। ওগুলো অতীত। মানছি, দশ বছর ধরে মুম্বই আমাদের চেয়ে বেশি জিতেছে, কিন্তু তার সঙ্গে শুক্রবারের ম্যাচের কী সম্পর্ক আছে, আমাকে বোঝান তো?
দু’টো খুব ভাল দল ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে মুখোমুখি হবে। যে টিমটা ঠিকঠাক সিদ্ধান্ত নেবে, তারাই সম্ভবত ফাইনালে খেলবে। তবে একটা ব্যাপারে আমি নিশ্চিত। একটা দুর্দান্ত ম্যাচ দেখতে পাবেন দর্শকরা।