কোটলায় কালবৈশাখী।
বৃহস্পতিবার রাতে ঋষভ পন্থের ব্যাটে ঝড় ওঠার পর সচিন তেন্ডুলকর থেকে ক্রিকেটের সেরা তারকাদের প্রশংসা তখন উপচে পড়ছিল টুইটার, ফেসবুকে। এরই মধ্যে এক বাঙালি ক্রিকেটপ্রেমীর এই পোস্টের উদয় হল সোশ্যাল মিডিয়ায়। কেউ বলছেন ঋষভ সুনামি। কেউ তাঁর নতুন নাম রেখেছেন ঋষভ প্যান্থার।
আগের রাতে ইডেনে রাহুল ত্রিপাঠীর ৫২ বলে ৯৩ রানের ইনিংসের রেশ কাটতে না কাটতেই আর একটা রান-ঝড় আছড়ে পড়ল আইপিএলের আসরে। তাঁর ৪৩ বলে ৯৭ রানের ইনিংস দেখে ক্রিকেটের বিখ্যাত থেকে অখ্যাতরা যখন মুগ্ধ, আপ্লুত, তখন তাঁর মোবাইলে যে মেসেজ দুটো এসে পৌঁছয়, তা দেখে বোধহয় নিজেই অবাক হয়ে গিয়েছিলেন দিল্লির দিল জিতে নেওয়া তরুণ ব্যাটসম্যান।
দু’জন জাতীয় নির্বাচক তাঁকে অভিনন্দন জানিয়ে মেসেজ করেন শুক্রবার সকালে। ঋষভ নিজেই জানান সে কথা। তবে তাঁদের নাম কিছুতেই বলতে রাজি নন তিনি। বারবার অনুরোধ জানাতে ঋষভ ফোনে বললেন, ‘‘নাম বলতে পারব না। আমি নিজেই বুঝতে পারিনি। ওঁদের নাম্বার যে আমার কাছে সেভ করা নেই। তাই বুঝতে পারিনি। মেসেজ খুলে দেখলাম, শেষে তাঁদের নাম লেখা। তখনই বুঝলাম।’’
তার মানে কি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে তাঁর ডাক আসছে ? ও সব মাথাতেই নেই অল্প কথার ছেলেটির। বলে দিলেন, ‘‘কী জানি! সে তো ওঁরাই বলতে পারবেন। আমার কাজ ভাল ব্যাটিং করে যাওয়া।’’ শুধু চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি কেন, বৃহস্পতিবার রাতে গুজরাত লায়ন্সের বোলিংয়ের বিরুদ্ধে ধ্বংসলীলা চালানোর সময় তাঁর মাথায় অন্য কিছুই ছিল না বলে জানালেন ঋষভ। ফোনে দিল্লি থেকে তিনি বলেন, ‘‘মাথায় দুটো কথা ছিল, যত পারো রান করো আর দলকে জেতাও। আর ক্রিজে নেমে ব্যাটিং উপভোগ করো।’’ এতই তৃপ্তি পেয়েছেন ইনিংসটা খেলে যে, তিন রানের জন্য সেঞ্চুরি হাতছাড়া হওয়া সত্ত্বেও তাই কোনও হেলদোল নেই। বললেন, ‘‘বিশ্বাস করুন, আমি আউট হওয়ার পর বুঝতে পারি যে সেঞ্চুরি থেকে তিন রান দূরে ছিলাম। মাঠের জায়ান্ট স্ক্রিনে শুধু একটা দিকেই নজর ছিল আমার। কত বলে কত রান করতে হবে আমাদের। দু-তিন বল অন্তর ওটাই দেখে নিচ্ছিলাম। নিজের রান যে কখন ৯০ পেরিয়ে গিয়েছে বুঝতেই পারিনি।’’
কথাগুলো শুনতে শুনতে মনে পড়ে যাচ্ছিল বীরেন্দ্র সহবাগের কথা। তিনিও তো এ রকমই বলতেন। আরও একটা কথা বলতেন তিনি, ‘‘মারার বল মারবই, সে সেঞ্চুরির মুখে হোক বা ইনিংসের শুরুতে।’’
ঋষভের মুখ থেকেও সে রকমই কথা শোনা গেল।