একে হার, তার ওপর আবার রান মেশিন বিকল। তীরে এসে তরী ডুববে না তো?
বুধবার রাতে ইডেনে পুণে সুপারজায়ান্টের কাছে হারের পরে এই দুশ্চিন্তা ঢুকে পড়ল গৌতম গম্ভীরদের শিবিরে।
লিগ পর্বের শেষ তিন ম্যাচে রবিন উথাপ্পা খেলতে পারবেন কি না, বুধবার রাত পর্যন্ত সেটা জানে না নাইট শিবির। তার ওপর চাপ তো আছেই। শেষ তিনটে ম্যাচের অন্তত একটাতে জিততেই হবে। এত দিন পর্যন্ত লিগ টেবিলে প্রথম দুইয়ে থাকার স্বপ্ন দেখছিলেন নাইটরা। এখন তাঁদের চিন্তা, প্রথম চারের মধ্যে থাকা নিয়ে।
গৌতম গম্ভীর তো বলেই দিলেন, ‘‘যতক্ষণ না প্লে-অফে পৌঁছচ্ছি, ততক্ষণ কিছু বলা উচিত নয়। এখনও তিনটে ম্যাচ বাকি আমাদের। আশা করি ঘুরে দাঁড়াতে পারব।’’
গম্ভীর যখন এই কথা বলছিলেন, তখন কেকেআর শিবির থেকে ইঙ্গিত পাওয়া গেল, গুরুতর না হলেও উথাপ্পার লো গ্রেড হ্যামস্ট্রিং চোট এবং হয়তো সপ্তাহ খানেক বিশ্রাম নিতে হবে তাঁকে। প্লে-অফের আগে তাঁকে খেলানোর ঝুঁকি নেওয়া হবে কি না, এই ভাবনাও শুরু হয়েছে নাইটদের শিবিরে।
ন’ইনিংসে ৩৮৪ রান যাঁর, পাঁচটা হাফ সেঞ্চুরি এসেছে যাঁর ব্যাট থেকে, নাইটদের সেই রান মেশিন উথাপ্পা হ্যামস্ট্রিং সমস্যার জন্য যদি পরের তিন ম্যাচে খেলতে না পারেন, তা হলে যে সেটা বড় ধাক্কা, এই নিয়ে কোনও সন্দেহই নেই।
গত বছর এমন ভাবেই চোটের জন্য লিগ পর্বের শেষ দিকে ছিটকে গিয়েছিলেন গম্ভীরদের ম্যাচউইনার অলরাউন্ডার আন্দ্রে রাসেল। এ বার চোট পেয়ে লিগ পর্ব থেকে ছিটকে যাওয়ার উপক্রম রবিন উথাপ্পারও। তবে নাইট সমর্থকদের একটাই সান্ত্বনা, তিনি সম্ভবত চোট সারিয়ে প্লে-অফে ফিরে আসতে পারেন। কিন্তু সে জন্য তো তাঁদের আগে প্লে অফে উঠতে হবে।
আরও পড়ুন: ট্রায়ালে পাশ করে নয়া সুপারজায়ান্ট
এই এক সপ্তাহের মধ্যে কেকেআরের দু’টো অ্যাওয়ে ম্যাচ রয়েছে বেঙ্গালুরুতে আরসিবি ও মোহালিতে কিংগস ইলেভেন পঞ্জাবের বিরুদ্ধে। নিজের শহরে উথাপ্পার খেলা হবে বলে মনে হচ্ছে না কেকেআর ম্যানেজমেন্টের। খেলার শেষে তাঁর সতীর্থ ক্রিস ওকস তো বলেই দিলেন, ‘‘হ্যামস্ট্রিং মানে বিশ্রাম ছাড়া উপায় নেই। পরের ম্যাচে তাই ওকে বিশ্রাম দিতে হতে পারে।’’ উথাপ্পাকে বিশ্রাম দেওয়া হলে ক্রিস লিনকে আগেই ফিরিয়ে আনা হয় কি না, সেটাই দেখার।
ব্যাটসম্যানদের উপর বিরক্ত গম্ভীরকে এ দিন বলতে শোনা যায়, ‘‘আমাদের ব্যাটসম্যানদের আরও ইতিবাচক হতে হবে। আরও দায়িত্বশীল হতে হবে। আজ আরও রান দরকার ছিল বোর্ডে। সেটা না পারাতেই হারতে হল।’’
তবে যাঁর ব্যাটের ঝড়ে হারতে হল নাইটদের, সেই রাহুল ত্রিপাঠীই এখন ধোনি, স্টোকস, স্মিথদের ছাপিয়ে পুণের নায়ক। স্বল্প বিনিয়োগ, বেশি লাভ— ব্যবসার মূলমন্ত্র যদি এটাই হয়, তা হলে রাইজিং পুণে সুপারজায়ান্টের সবচেয়ে লাভজনক ‘প্রোডাক্ট’ অবশ্যই রাহুল ত্রিপাঠী। মাত্র দশ লাখ টাকা দিয়ে যাঁকে নিলামে নিয়েছিল পুণে, তিনি দলকে এখনই সাড়ে তিনশোর ওপর রান দিয়ে বসে আছেন!
বুধবার মহারাষ্ট্রের এই সেনা-পুত্র ইডেন মাতিয়ে ৫২ বলে ৯৩ রান করার পর বললেন, ‘‘অসাধারণ লাগছে। ইডেনের মতো মাঠে এমন ইনিংস খেলার অভিজ্ঞতাই আলাদা। চিরকাল মনে রাখব। এত বড় আসরে কী ভাবে নিজের স্নায়ু বজায় রেখে ভাল খেলতে হয়, উপভোগ করতে হয়, তা এই দলের কোচেদের কাছ থেকেই শেখা।’’