ওয়ার্নার ঝড় থামাতে বোলিং ওপেন করুক নারাইন

বেঙ্গালুরুতে না গিয়ে মুম্বইয়ে কোয়ালিফায়ার খেলার একটা দারুণ সুযোগ ছিল কলকাতা নাইট রাইডার্সের সামনে। শনিবার মুম্বই ইন্ডয়ান্স ইডেনে এমন একটা দল নামিয়েছিল, যাদের প্রথম দলের ছ’জনই বাইরে।

Advertisement

সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৭ ০৫:২৭
Share:

নাইটদের প্লে-অফ তাস নারাইন।

বেঙ্গালুরুতে না গিয়ে মুম্বইয়ে কোয়ালিফায়ার খেলার একটা দারুণ সুযোগ ছিল কলকাতা নাইট রাইডার্সের সামনে। শনিবার মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ইডেনে এমন একটা দল নামিয়েছিল, যাদের প্রথম দলের ছ’জনই বাইরে। আর সেই ছ’জন কারা? লাসিথ মালিঙ্গা, জস বাটলার, নীতীশ রানা, হরভজন সিংহ, পার্থিব পটেল এবং— যশপ্রীত বুমরা। যাকে আমি এই আইপিএলের অন্যতম সেরা বোলার বলে মনে করি। প্রায় দ্বিতীয় সারির মুম্বইয়ের কাছে হারের জেরে পয়েন্ট টেবলে শুধু নেমে যাওয়া নয়, মানসিক ভাবেও ধাক্কা খেল কেকেআর।

Advertisement

এ বার নক আউট ম্যাচে কেকেআর-কে খেলতে হবে সেই সানরাইজার্স হায়দরাবাদের সঙ্গে, যাদের কাছে শেষ ম্যাচে হারতে হয়েছিল গৌতম গম্ভীরদের। একটু ঠিক করে বললে, হারতে হয়েছিল ডেভিড ওয়ার্নার নামের প্রতিভার কাছে। ক্রিকেট যদিও টিম গেমের খেলা, কিন্তু এক এক জন ক্রিকেটার এমন থাকে, যারা নিজেদের দিনে আর কাউকে দাঁড়াতে দেয় না। ওয়ার্নার সেই গোত্রের। ওকে না থামাতে পারলে কেকেআরের এ বারের আইপিএল অভিযান কিন্তু শেষ।

ওয়ার্নারকে নিয়ে স্ট্র্যাটেজি করার সময় অবশ্যই চিন্নাস্বামীর উইকেটকে হিসেবের মধ্যে রাখতে হবে। বেঙ্গালুরুর উইকেট লাল-মাটির। ওখানে কিন্তু বাউন্স থাকবে। এ বারের আইপিএলে চিন্নাস্বামীর উইকেটের যা চরিত্র দেখছি, তাতে বল টার্ন করেছে। বুধবারের ম্যাচেও সেই সম্ভাবনা আছে। আর সেটা না হলেও ক্ষতি নেই। ওয়ার্নারের জন্য শুরুতেই কিন্তু একটা বিশেষ স্ট্র্যাটেজি নেওয়া উচিত গম্ভীরদের। অন্তত আমি যদি কলকাতার টিম ম্যানেজমেন্টে থাকতাম, তা হলে সে রকম পরামর্শই দিতাম।

Advertisement

আরও পড়ুন: প্লে-অফে গম্ভীররা এ বার যুবিদের সামনে

কী সেটা? সানরাইজার্সের বিরুদ্ধেও সুনীল নারাইন ওপেন করুক। তবে ব্যাট হাতে নয়, বল হাতে। বাঁ-হাতি ওয়ার্নারকে দ্রুত ফেরানোর জন্য নারাইনই কলকাতার সেরা অস্ত্র। চিন্নাস্বামীর বাউন্সি উইকেটের কথা ভেবে শুরুতে দরকার হলে নারাইনের জন্য দু’টো স্লিপও রাখতে পারে গম্ভীর।

হায়দরাবাদ টিমটার ব্যাটিংয়ের চেয়ে বোলিং অনেক ভাল। এ বারের আইপিএলের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি ভুবনেশ্বর কুমার আছে। কিন্তু যারা পার্থক্য গড়ে দিতে পারে, তাদের নাম এ বারের আইপিএলের আগে বিশেষ কেউ শুনেছিল বলে মনে হয় না। তারা দুই আফগান স্পিনার— রশিদ খান এবং মহম্মদ নবি।

পুণে টিমের এক ক্রিকেটার আমাকে বলছিল, এই দুই স্পিনারকে নেওয়ার কথা পুণেও ভেবেছিল। কিন্তু গুগল সার্চে পাওয়া তথ্য আর স্কোরকার্ডের বাইরে বিশেষ কিছু জানতে পারেনি বলে নেয়নি। হায়দরাবাদ এই ঝুঁকিটা নিয়েছে এবং সফল হয়েছে।

লেগস্পিনার রশিদ লোয়ার ট্র্যাজেক্টরিতে বল করছে। ফলে ওকে লিফট করা খুব কঠিন। অফস্পিনার নবির লাইন-লেংথও খুব আঁটসাঁট। এই দুই স্পিনারকে সামলানোর জন্য কলকাতার মিডল অর্ডারে এক জনকেই দেখছি। মণীশ পাণ্ডে। বাকিদের অবস্থা কিন্তু খুব একটা ভাল নয়। মুম্বই ম্যাচেই বোঝা গেল, রবিন উথাপ্পা চোট সারিয়ে ফিরে আসার পরে একটু আত্মবিশ্বাসের অভাবে ভুগছে। মুম্বইয়ের দ্বিতীয় সারির বোলিংয়ের বিরুদ্ধেও ইউসুফ পাঠান যে ভাবে ব্যাট করল, তাকে একটা লাইনে বোঝানো যায়— ‘ভানু পেল লটারি’ মার্কা ব্যাটিং। কবে যে লটারি লাগবে কেউ জানে না। নিউজিল্যান্ডের কলিন গ্র্যান্ডহোম মনে হয় না জোড়া স্পিনারের বিরুদ্ধে কিছু করতে পারবে।

তবে সব কিছুর পরে একটা কথাই বলব। ওয়ার্নারের ব্যাট চললে কিন্তু সব আশা শেষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন