চ্যাম্পিয়নদের হারিয়ে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে আইপিএল ফাইনালের আরও এক ধাপ কাছে নিয়ে যাওয়ার যাবতীয় কৃতিত্ব অবশ্যই বোলারদের। তবে নেথান কুল্টার নাইল ম্যান অব দ্য ম্যাচ হলেও আমার কাছে নায়ক কিন্তু উমেশ যাদব।
নিঃসন্দেহে কুল্টার নাইল ভাল করেছে। তিন উইকেট নিয়েছে। নিজের বলে ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঁ হাতে একটা অসাধারণ ক্যাচও নিয়েছে। যেটা দেখে মনে হল, এই আইপিএলের সেরা ক্যাচগুলো বেশিরভাগই বাঁ হাতে নেওয়া।
কিন্তু সব মাথায় রেখেও আমি উমেশকে (২-২১) এগিয়ে রাখব ওর প্রথম স্পেলটার জন্য। পাওয়ার প্লে-তে তিন ওভার টানা বল করল। শিখর ধবনকে ফিরিয়ে দিল। ডেভিড ওয়ার্নারকে ফ্রন্টফুটে আসতে দিল না। ব্যাক অব লেংথে বল করে ওয়ার্নারকে পিছনের পায়ে ঠেলে দিল। শট নেওয়ার জায়গা দিল না। উমেশ আর ট্রেন্ট বোল্ট মিলে প্রথম ৬ ওভারে হায়দরাবাদকে ৩০ রানে আটকে রাখল। আমাদের ময়দানে একটা কথা আছে। খেলাটাকে ছোট করে দেওয়া। অর্থাৎ বিপক্ষকে ম্যাচ থেকে সরিয়ে দেওয়া। উমেশের স্পেলটা খেলাটাকে ছোট করে দিল।
আরও পড়ুন: লেট নাইট শো-তে এল মুম্বই টিকিট
উমেশের বোলিংয়ে গতি আছে, সুইং করাতে পারে। পুরনো বলে রিভার্স সুইংটাও করায়। শর্ট বলটাও ভাল দেয়। ওকে নিয়ে শুধু একটাই চিন্তা। টানা ক্রিকেট খেলার ধকল যদি উমেশের শরীর দেয়, তা হলে কিন্তু ও সব সময়ই ভয়ঙ্কর। ডেভিড ওয়ার্নাররা যেটা টের পেল প্লে-অফে।
চিন্নাস্বামীর পিচটা কিন্ত ওয়াংখেড়ের পিচের মতো ততটা স্লো লাগেনি। হ্যাঁ, গত বারের চিন্নাস্বামীর মতো অত ভাল নয়, তবে ব্যাটসম্যানরা স্ট্রোক খেলতে পারে। তাই বৃষ্টির পরে ডাকওয়ার্থ-লুইসে যখন কলকাতার টার্গেট স্কোর দাঁড়াল ৪৮, আমি নিশ্চিত ছিলাম কেকেআর জিতছে। কয়েকটা উইকেট তাড়াতাড়ি পড়লেও নাইটরা সব সময়ই ম্যাচে ছিল। গম্ভীরের ঠান্ডা মাথার ইনিংস ওদের শুক্রবারের ম্যাচের টিকিট এনে দিল।
এ রকম একটা চাপের ম্যাচে গম্ভীরের ক্যাপ্টেন্সিও আমার খুব ভাল লাগল। ও বরাবরই আগ্রাসী অধিনায়ক। বুধবার সেটা আরও ভাল করে বোঝা গেল। যুবরাজ যখন ব্যাট করছে, স্বাভাবিক ভাবেই সুনীল নারাইনকে আক্রমণে নিয়ে এল। সেটা চমক নয়। চমক হল, যে ফিল্ডিং ও সাজাল যুবরাজের জন্য। দু’টো স্লিপ, একটা সিলি পয়েন্ট। ৫০ ওভারের খেলাতেও যা দেখা যায় না। আর এ তো একটা টি-টোয়েন্টি ম্যাচ!
এই ম্যাচের জন্য বেশ কয়েকটা পরিবর্তন করে কলকাতা। যার মধ্যে কুলদীপ যাদবের বদলে এল পীযূষ চাওলা। পীযূষ একটু রান দিলেও কাজের কাজটা করে দিল ওয়ার্নারকে আউট করে। কলকাতার এক নম্বর শত্রুর নাম যে ওয়ার্নার ছিল, এটা নিয়ে কোনও দ্বিমত থাকার কথা নয়। সেটা আরও বোঝা গেল গম্ভীরের প্রতিক্রিয়া দেখে। ওয়ার্নার আউট হওয়া মাত্রই ছুটে এসে পীযূষকে যে ভাবে জড়িয়ে ধরল, তাতে পরিষ্কার এই উইকেটটা ওর কাছে কত দামি ছিল।