সুনীলদের জয় সেই অধরাই, জামশেদপুরে নায়ক সুব্রত

রবিবাসরীয় সন্ধ্যায় জামশেদপুরে আকর্ষণের কেন্দ্রে ছিল সুনীল-সুব্রতের দ্বৈরথ। যদিও শেষ পর্যন্ত তা হয়ে ওঠে সুব্রত বনাম গুরপ্রীত সিংহ সাঁধু দ্বৈরথ! দুই গোলরক্ষক দুর্ভেদ্য হয়ে ওঠায় ম্যাচ শেষ হল গোলশূন্য ভাবে। 

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০১৯ ০৪:২৩
Share:

সৌজন্য: ম্যাচের পরে বেঙ্গালুরুর গুরপ্রীত (বাঁ দিকে) ও উদান্তের সঙ্গে সুব্রত। রবিবার। জামশেদপুরের জে আর ডি টাটা স্টেডিয়ামে। আইএসএল

জামশেদপুর ০ n বেঙ্গালুরু ০

Advertisement

গত মরসুমে আইএসএল চ্যাম্পিয়ন। কিন্তু এ বার টানা তিন ম্যাচে জয় অধরা বেঙ্গালুরু এফসি-র।

প্রথম ম্যাচে নর্থইস্ট ইউনাইটেডের গোলরক্ষক শুভাশিস রায়চৌধুরীর হাতে শেষ হয়ে গিয়েছিল সুনীল ছেত্রীদের জয়ের আশা। রবিবার জে আর ডি টাটা স্পোর্টস স্টেডিয়ামে আর এক বাঙালি গোলরক্ষক সুব্রত পাল কাঁটা ছড়িয়ে দিলেন গত বারের আইএসএল চ্যাম্পিয়নদের পথে।

Advertisement

রবিবাসরীয় সন্ধ্যায় জামশেদপুরে আকর্ষণের কেন্দ্রে ছিল সুনীল-সুব্রতের দ্বৈরথ। যদিও শেষ পর্যন্ত তা হয়ে ওঠে সুব্রত বনাম গুরপ্রীত সিংহ সাঁধু দ্বৈরথ! দুই গোলরক্ষক দুর্ভেদ্য হয়ে ওঠায় ম্যাচ শেষ হল গোলশূন্য ভাবে।

আদর্শ সুব্রতকে সরিয়েই জাতীয় দলের প্রথম একাদশে নিজের জায়গা পাকা করেন গুরপ্রীত। রবিবার বঙ্গ গোলরক্ষকের দুরন্ত পারফরম্যান্স যেন তাঁকে বাড়তি উদ্বুদ্ধ করেছিল। অসাধারণ খেললেন গুরপ্রীতও। বেঙ্গালুরু গোলরক্ষকের হাতে আটকে গেল ফ্রান্সিসকো মেদিনা লুনা (পিটি), ফারুক চৌধুরীদের গোলের স্বপ্ন।

আইএসএলে প্রথম ম্যাচে নর্থইস্টের বিরুদ্ধে ড্র। দ্বিতীয় ম্যাচে এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে এগিয়ে থেকেও শেষ মুহূর্তে গোল খেয়ে জয় হাতছাড়া করেছেন সুনীলেরা। রবিবার তাই জামশেদপুরের বিরুদ্ধে যে কোনও মূল্যে জিততে মরিয়া ছিলেন বেঙ্গালুরুর স্পেনীয় কোচ কার্লেস কুদ্রাত। ৪-২-৩-১ ছকে তিনি দল সাজিয়েছিলেন। যাতে দুই প্রান্ত দিয়ে আক্রমণের ঝড় তুলে বিপক্ষকে সমস্যায় ফেলা যায়। বেঙ্গালুরু কোচ জানতেন বিপক্ষের পিটি, সের্খিয়ো কাস্তেল, ফারুক চৌধুরীরা চকিতে প্রতি-আক্রমণে আসেন। তাই চার ব্যাকের সামনে দুই হোল্ডিং মিডফিল্ডার দিমাস দেলগাদো ও হরমনজ্যোৎ সিংহ খাবরাকেও রেখেছিলেন। প্রথমার্ধে একাধিক বার গোলের রাস্তা খুলে ফেলেছিলেন রাফায়েল অগুস্তো, উদান্ত সিংহ, সুনীল ছেত্রীরা। কিন্তু সুব্রত একা কুম্ভ হয়ে দলের পতন রুখলেন। রাফায়েল অগুস্তো ও হুয়ানানের হেড গোলে ঢোকার মুহূর্তে বাঁচান তিনি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হরমনজ্যোৎ সিংহ খাবরার নিশ্চিত গোলের সুযোগ ব্যর্থ করা। বেঙ্গালুরু তারকার ফ্লিক গোলে ঢোকার মুখে ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঁচান সুব্রত।

বেঙ্গালুরুর আক্রমণের ঝড় সামলে প্রথমার্ধে মাত্র একবারই এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিল জামশেদপুর। কিন্তু সের্খিয়ো কাস্তেলের শট গুরপ্রীতকে পরাস্ত করে পোস্টে লেগে ফিরে আসে।

ঘরের মাঠে জয়ের লক্ষ্যে দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই মরিয়া হয়ে ওঠেন জামশেদপুরের ফুটবলারেরা। যদিও গতির বিরুদ্ধে ৫০ মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিল বেঙ্গালুরু। কিন্তু মানুয়েল ওনৌও পারেননি সুব্রতকে পরাস্ত করতে। মিনিট চারেক পরেই গোল করার সুযোগ পেয়েছিলেন জামশেদপুরের মোবাশিল রহমান। কিন্তু তাঁর গোলার মতো শট বাঁচিয়ে দেন গুরপ্রীত। তিন মিনিট পরে পেনাল্টি বক্সের মধ্যে থেকে নেওয়া ফারুক চৌধুরীর বাইসাইকেল কিকও অবিশ্বাস্য দক্ষতায় বাঁচান তিনি। তবে ম্যান অব দ্য ম্যাচ পুরস্কারের দৌড়ে অবশ্য পূর্বসূরির কাছে হেরে যান গুরপ্রীত। ম্যাচের পরে সুব্রত বলেছেন, ‘‘এক পয়েন্ট পেয়ে আমরা খুশি। আমার কাজ গোলরক্ষা করা। আমি সেটাই করেছি। বাড়তি কিছুই করিনি। সব ম্যাচেই নিজের কাজটা নিষ্ঠার সঙ্গে করে যেতে চাই।’’

এ দিন ড্রয়ের ফলে এটিকে-কে টপকে তিন ম্যাচে সাত পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবলের শীর্ষে উঠে এল জামশেদপুর। সমসংখ্যক ম্যাচ খেলে ছ’পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে এই মুহূর্তে এটিকে। তৃতীয় স্থানে থাকা এফসি গোয়ার পয়েন্ট তিন ম্যাচে পাঁচ। তিন ম্যাচে তিন পয়েন্ট নিয়ে গোলপার্থক্যে কেরল ব্লাস্টার্সকে পিছনে ফেলে সাত নম্বরে উঠে এল বেঙ্গালুরু। জামশেদপুরের পরের ম্যাচ এটিকের বিরুদ্ধে যুবভারতীতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন