ATK

রবি কিনের সমারসল্টেই ঘরের মাঠে বাজিমাত এটিকের

এল ক্লাসিকোর রাতেই কলকাতার মাঠে খেলতে নেমেছিল এটিকে ও দিল্লি। তুলনা হয় না ঠিকই কিন্তু টেলিভিশনে যত মানুষ এল ক্লাসিকো দেখেছে তত মানুষও হয়তো এ দিন এটিকে-দিল্লি ম্যাচে ছিল না। আইএসএল-এর মোহ হারিয়েছে কলকাতা তা পরিষ্কার।

Advertisement

সুচরিতা সেন চৌধুরী

শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৭ ২২:৫৭
Share:

গোলের পর রবি কিনের সমারসল্ট। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।

কলকাতা ১ (রবি কিন)

Advertisement

দিল্লি ০

গোল করেই সমারসল্ট। ম্যাচের ৭৮ মিনিটটাই যেন লেখা হয়ে থাকল গুটিকয় মানুষের মনে। এটিকে জিতল। গোল করলেন রবি কিন। এই আইএসএল-এর সেরা তারকা তিনিই। চোটের জন্য শুরুর দিকে খেলতেই পারেননি। কলকাতার সমর্থকদের গোল উপহার দিলেন শেরিংহ্যাম তাও আবার রবি কিনের পা থেকে। ম্যাড়ম্যাড়ে ম্যাচের এটাই যা প্রাপ্তি। বাকিটা বেশ অসহ্য ফুটবলের নজির রেখে গেল দুই দল।

Advertisement

এই আইএসএল মানুষের মনের কাছে পৌঁছতে পারল না সেটা নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে এখনই। না হলে গত বছর পর্যন্ত যেখানে এটিকের ম্যাচের জন্য টিকিটের হাহাকার থাকত সেখানে এ বার ফাঁকা গ্যালারি। কলকাতার মাঠে প্রথম ম্যাচ বিকেলে হওয়ায় ভাবা হয়েছিল সময়ের জন্য হয়তো গ্যালারি ফাঁকা। কিন্তু রাত আটটার ম্যাচও সেই দিনের ছবিরই কার্বন কপি। ফাঁকা গ্যালারি। মিডল টিয়রও পুরো ভরেনি। ইতস্তত-বিক্ষিপ্ত ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কিছু সমর্থক। ঠিক যেমনটা সমর্থনের দশা তেমনই হাল ফুটবলেরও। যদিও আয়োজকদের হিসেবে যখন ঘোষণা হল তখন তার সংখ্যা ২২ হাজার ৪৭৮।

এল ক্লাসিকোর রাতেই কলকাতার মাঠে খেলতে নেমেছিল এটিকে ও দিল্লি। তুলনা হয় না ঠিকই কিন্তু টেলিভিশনে যত মানুষ এল ক্লাসিকো দেখেছে তত মানুষও হয়তো এ দিন এটিকে-দিল্লি ম্যাচে ছিল না। আইএসএল-এর মোহ হারিয়েছে কলকাতা তা পরিষ্কার। বিশেষ করে উচ্চমানের যুব বিশ্বকাপ দেখার পর যেন এই খেলা কিছুতেই মনে ধরছে না। সঙ্গে আই লিগ খেলছে ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান। এটিকের ভাঁড়ার তাই শূন্য।

আরও পড়ুন: কেরল-চেন্নাই ‘দক্ষিণী ডার্বি’ ড্র, শীর্ষে উঠল অভিষেকের দল

এল ক্লাসিকো: বার্সার রিয়েল বধ

শূন্য শুধু সমর্থকের বিচারে নয়, শূন্য পারফরম্যান্সেও। এখনও পর্যন্ত দু’টি ম্যাচই জিতেছে কলকাতা দল। পাঁচ ম্যাচে পাঁচ পয়েন্ট সঙ্গে হাতে একটি মাত্র জয় নিয়েই খেলতে নেমেছিল কলকাতা। তাও আবার ঘরের মাঠে। প্রতিপক্ষ যেখানে লিগ টেবলের একদম নীচে থাকা দিল্লি তখন এটাকেই জয় ধরে রাখার মঞ্চ করার কথা ছিল শেরিংহ্যামের ছেলেদের। কিন্তু যা ফুটবল হল তাতে তেমন আশা প্রথম থেকে ৭৭ মিনিট পর্যন্ত কোথাও তৈরি হয়নি। একবারও মনে হয়নি জিততে পারে কলকাতা। উল্টোদিকে দিল্লিরও একই অবস্থা। একইভাবে একটি জয় নিয়ে কলকাতায় খেলতে এসেছিল দিল্লি। বাকি চার ম্যাচে হার। তার উপর হেড কোচ নির্বাসিত। তাই সমানে সমানে লড়ার বদলে ড্র ম্যাচের লক্ষ্যেই নেমেছিল দিল্লি ডায়নামোস। সেই ফাঁদেই পা দিতে দিতেও শেষ বেলায় কলকাতাকে বাঁচিয়ে গেলেন রবি কিন।

গোলের পর কোচের সামনে রবি কিনের সেলিব্রেশন। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।

ছন্নছাড়া ফুটবল। যা এক দু’বার আক্রমণে উঠল কলকাতা তাও ফিনিশিংয়ের অভাবে ভুগতে হল পুরো দলকে। ৪ মিনিটে জয়েশ রানের হেড বাইরে গেল। সেখান থেকে গোল এলেও আসতে পারত। সেই জয়েশ আবার বক্সের মধ্যে থেকে সহজ সুযোগ নষ্ট করলেন ম্যাচের ৫০ মিনিটে। তাঁর পর তাঁকে তুলে বিপিনকে নামিয়েছিলেন এটিকে কোচ। আর সেই বিপিন সিংহর হেড থেকেই গোল করে গেলেন রবি কিন। সঠিক পরিবর্তন এখন বলা যেতেই পারে।

বল দখলের লড়াইয়ে দুই দলের ফুটবলাররা। ছবি: আইএসএল।

মাঝ মাঠ থেকে লম্বা বল পাঠিয়েছিলেন কোনর থমাস। দিল্লি বক্সের বাঁ দিকে সেই বল পেয়ে গিয়েছিলেন বিপিন সিংহ। সেখান থেকেই বিপিনের হেড বক্সের মধ্যে বুক দিয়ে নামিয়ে শরীরের ছোট্ট মোচড়ে ডান পায়ের জোড়াল শট। দিল্লি গোলের নিচে নড়তে পারেননি অর্ণব দাশশর্মা। এখানেই শেষ হয়ে গেল ম্যাচ। দিল্লির ফেরার কোনও জায়গা ছিল না। কলকাতাকে বাঁচিয়ে গেল একটা মাপা মুভ। ছয় ম্যাচ আট পয়েন্ট নিয়ে সাত নম্বরে উঠে এল কলকাতা।

এটিকে: দেবজিৎ মজুমদার, থমাস জোসেফ, আনোয়ার আলি, আসুতোষ মেহতা (কিগান পেরেরা), প্রবীর দাস, রায়ান অ্যান্থনি, জয়েশ রানে (বিপিন সিংহ), হিতেশ শর্মা, ডস স্যান্টোস (শঙ্কর সাম্পিয়াঙ্গিরাজ), কোনোর থমাস, রবি কিন।

দিল্লি: অর্ণব দাশ শর্মা, রোউইলসন রডরিগেজ (ডেভিড নাইতে), প্রতীক চৌধুরী, প্রীতম কোটাল, মুনমুন লুগুন (রালতে), পাওলিনহো ডায়াস, ক্লডিও মাতিয়াস, এদুয়ার্দো মোয়া, রোমিও ফার্নান্ডেজ, জেরোয়েন লোম্বে(ছাংতে), লুই ফার্নান্ডেজ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন