দক্ষিণ আফ্রিকায় চমক

টেস্ট দলের ভাবনাতেও বুম বুম বুমরা

দক্ষিণ আফ্রিকার পেস-সহায়ক পিচ এবং পরিবেশ পেয়ে বুমরা আরও ধারালো হয়ে উঠতে পারেন বলেও মনে করা হচ্ছে। কেউ কেউ মনে করছিলেন, শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে চলতি সিরিজেই এক বার বুমরাকে টেস্টে খেলিয়ে দেখে নেওয়া হবে কি না।

Advertisement

সুমিত ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৭ ০৪:১৪
Share:

এ বার টেস্টেও দেখা যেতে পারে বুমরাকে। ফাইল চিত্র

নতুন বছরে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে ভারতীয় দলে সেরা চমক হতে পারেন তিনি। চিন্তাভাবনা চলছে, আফ্রিকান সাফারিতে যশপ্রীত বুমরাকে টেস্ট দলের সঙ্গেও নিয়ে যাওয়া হবে কি না।

Advertisement

এমনিতে বুমরাকে এতদিন শুধুই সীমিত ওভারের ক্রিকেটের জন্য ভাবা হচ্ছিল। প্রচলিত ধারণা হচ্ছে, তিনি টেস্টের বোলার নন। কিন্তু হালফিলে ডানহাতি পেসার এতটাই উন্নতি করেছেন যে, তাঁর সম্পর্কে প্রচলিত সেই ধারণা ভেঙে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। একেবারেই অবাক হওয়ার থাকবে না যদি অদূর ভবিষ্যতে বুমরাকে টেস্টের সাদা জার্সিতে দেখা যায়। এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়াও শুরু হয়েছে। বুমরাকে জাতীয় অ্যাকাডেমিতে বিশেষ কয়েকটি কসরতের মাধ্যমে শারীরিক শক্তি বাড়ানোর জন্য পাঠানো হয়েছে।

সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ওয়ান ডে হলে বল করতে হয় দশ ওভার। টি-টোয়েন্টি হলে চার ওভার। আর টেস্ট ক্রিকেটে সারা দিনে এক জন পেসারকে পনেরো-কুড়ি ওভারও বল করতে হতে পারে। টেস্ট খেলতে হলে একজন পেসারকে তাই অনেক বেশি শক্তিশালী হতে হয়। বুমরা যে হেতু এতদিন শুধু সীমিত ওভারের ক্রিকেটেই খেলেছেন, তাঁকে শক্তি বাড়ানোর উপর নজর দিতে বলা হয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকা গেলে এই প্রক্রিয়া কাজে লাগবে।

Advertisement

দক্ষিণ আফ্রিকা মানে ধরেই নেওয়া যায় পেসারদের উইকেট হবে। প্রথম একাদশে অন্তত তিন পেসার খেলবেনই। দুই স্পিনারে প্রথম একাদশ গড়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। দেশের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে সিরিজ খেলতে খেলতেই ভাবনাচিন্তা চলছে, দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোয়াড নিয়ে। সবার আগে চূড়ান্ত করার চেষ্টা হচ্ছে পেস বিভাগকে। কারণ, দক্ষিণ আফ্রিকায় জিততে গেলে গতিকে অস্ত্র করেই এগোতে হবে।

এখনও পর্যন্ত যা ইঙ্গিত— ভুবনেশ্বর কুমার, মহম্মদ শামি, উমেশ যাদব পেসার হিসেবে নিশ্চিত। ইশান্ত নাগপুরে খুব ভাল বল করেছেন। তাঁরও দলে জায়গা পাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। কিন্তু সেরা চমক হতে পারেন বুমরা-ই। পঞ্চম পেসার হিসেবে তাঁকে নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে দু’তিনটে কারণে। প্রথমত, লাইন-লেংথ অসাধারণ। সম্প্রতি সব একদিনের ম্যাচে সফল বুমরা মাপা নিশানায় বল করে যেতে পারেন। দ্বিতীয়ত, বোলিংয়ে বৈচিত্র বেশি এবং বুদ্ধি করে বল করতে পারেন। ভারতীয় বোলারদের মধ্যে তিনি সবচেয়ে ভাল ইয়র্কার দিতে পারেন। যা শুধু সীমিত ওভারের ক্রিকেটেই নয়, টেস্টেও খুব কার্যকরী অস্ত্র হতে পারে।

দক্ষিণ আফ্রিকার পেস-সহায়ক পিচ এবং পরিবেশ পেয়ে বুমরা আরও ধারালো হয়ে উঠতে পারেন বলেও মনে করা হচ্ছে। কেউ কেউ মনে করছিলেন, শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে চলতি সিরিজেই এক বার বুমরাকে টেস্টে খেলিয়ে দেখে নেওয়া হবে কি না। তা হলে দক্ষিণ আফ্রিকার আগে কিছুটা প্রস্তুতিও হয়ে যেত। সমস্যা হচ্ছে, নাগপুরের পরে হাতে থাকছে শুধু দিল্লির শেষ টেস্ট। এখন পর্যন্ত যা খবর, সেখানে বুমরাকে নামানোর সম্ভাবনা কম। তাঁর ক্ষেত্রে জাতীয় অ্যাকাডেমিতে ট্রেনিং করাটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে ধরা হচ্ছে।

যদি সত্যিই সমস্ত কিছু ঠিকঠাক থাকে এবং বুমরা টেস্ট দলের সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকাগামী উড়ানে উঠে পড়েন, অত্যাশ্চার্য এক প্রত্যাবর্তনের কাহিনি হবে। গত জুনে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ‘নো বল’ করে তিনি হয়ে গিয়েছিলেন খলনায়ক। জয়পুর পুলিশ এমনকী, তাঁকে কটাক্ষ করে বিজ্ঞাপনও করেছিল। তার ছ’মাসের মধ্যেই সীমিত ওভারের সেরা অস্ত্র হয়ে ওঠার পাশাপাশি টেস্টের টিকিট।

বলে না, ক্রিকেট মহান অনিশ্চয়তার খেলা!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন