ব্যাটে হরমনপ্রীত, বলে ঝুলন: আজ ভারতের দুই অস্ত্র
Jhulan Goswami

দুই দিদির হয়তো শেষ বিশ্বকাপ! উপহার দিতে লড়বেনই স্মৃতি-পুনমরা

পনেরো বছরেরও উপর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে রয়েছেন মিতালি, ঝুলনরা। মিতালি শুরু করেছিলেন ১৯৯৯-এ। ঝুলনের শুরু ২০০২-এ। বারো বছর আগে যখন ভারত বিশ্বকাপ ফাইনালে উঠেছিল, সেই দলেও ছিলেন তাঁরা।

Advertisement

রাজীব ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৭ ০৭:১৪
Share:

ঝুলন গোস্বামী ও মিতালি রাজ। ছবি: সংগৃহীত।

হরমনপ্রীত কৌর-দের দুই দিদির এটাই শেষ বিশ্বকাপ। মিতালি রাজ ও ঝুলন গোস্বামী।

Advertisement

রবিবার লর্ডসের ফাইনালে জিতে নিশ্চয়ই তাঁদের বিদায়ী উপহার দিতে চাইবেন পুনম রাউত, স্মৃতি মানধানা, রাজেশ্বরী গায়কোয়াড়রা। ২০১১-র ২ এপ্রিল ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে যেমন সচিন তেন্ডুলকর নামের এক কিংবদন্তিকে সেরা উপহার দিয়েছিলেন ধোনি, কোহালি, রায়না-রা। মিতালি-ঝুলনদের জন্যই ফাইনালটা জেতা তাঁদের কাছে বাড়তি প্রেরণা হয়ে উঠতে পারে।

পনেরো বছরেরও উপর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে রয়েছেন মিতালি, ঝুলনরা। মিতালি শুরু করেছিলেন ১৯৯৯-এ। ঝুলনের শুরু ২০০২-এ। বারো বছর আগে যখন ভারত বিশ্বকাপ ফাইনালে উঠেছিল, সেই দলেও ছিলেন তাঁরা। সে বার পারেননি। এ বার পারলে সেই আফসোস মিটিয়ে ক্রিকেটকে বিদায় জানাতে পারবেন। যেমন সচিন পেরেছিলেন। না পারলে সারা জীবন থেকে যাবে বিশ্বকাপ হাতে না তুলতে পারার আফসোস। লর্ডসের ফাইনালে আজ মিতালি-ঝুলনদের জন্যই হয়তো ভারতীয় দলের স্লোগান ‘নাউ অর নেভার’। হয় এ বার কাপ জেতো, নয়তো আর হবে না।

Advertisement


অভিজ্ঞ বোলার ঝুলন গোস্বামী। ছবি: রয়টার্স

ঝুলন যেমন ইংল্যান্ড থেকে ফোনে আনন্দবাজার-কে বলেছেন, ‘‘আর বিশ্বকাপ খেলা হবে না বোধহয়। তাই এই শেষ সুযোগটা হাতছাড়া করতে চাই না। আমাদের দলের মেয়েরা যে এই সুযোগ এনে দিয়েছে, সে জন্য ওদের ধন্যবাদ।’’ তেমন মিতালিও এ দিন আইসিসি-র ওয়েবসাইটে বলেন, ‘‘এই বিশ্বকাপটা অবশ্যই স্পেশ্যাল। সেই ২০০৫ বিশ্বকাপ ফাইনালে ফিরে যাচ্ছি যেন। সেই সময়ের কথাই মনে পড়েছে বারবার। সে বার আমরা পারিনি। এ বার পারলে আমাদের কাছে এটা সেরা স্মারক হয়ে থাকবে।’’

ঝুলনের এটা চার নম্বর বিশ্বকাপ। এতগুলো বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ হয়নি অনেকেরই। ২০০৯ বিশ্বকাপে ভারত ঝুলনেরই নেতৃত্বে নেমেছিল অস্ট্রেলিয়ায়। ঝুলনের চেয়ে একটা বেশি, ২০০০ বিশ্বকাপেও খেলেছিলেন মিতালি। সবচেয়ে বেশি ওয়ান ডে উইকেট যাঁর দখলে, সেই ঝুলন সম্প্রতি বিশ্বকাপে ভারতের সবচেয়ে বেশি উইকেটের মালকিন হলেন ডায়না এডুলজিকে ছাপিয়ে। একটা সময় দেশের মহিলা পেসারদের মধ্যে সবচেয়ে জোরে বল করতেন তিনিই। আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ে সেরাও ছিলেন এক সময়। ক্রিকেট থেকে এত সম্মান পাওয়ার পর আর একটাই রত্ন পাওয়া বাকি আছে তাঁর, বিশ্বকাপ।

তাঁর ২০০৫-এর সতীর্থ দিল্লিবাসী বাঙালি ক্রিকেটার রুমেলি ধরের আশা, এ বার পারবেন ঝুলন। শনিবার দিল্লি থেকে রুমেলি ফোনে বলেন, ‘‘বিশ্বকাপটা ঝুলনের প্রাপ্য। এত দিন ধরে সাফল্যের সঙ্গে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলে চলেছে ও আর মিতালি। এ বার কাপ জিতে ওদের কেরিয়ারের বৃত্ত সম্পূর্ণ হোক।’’ এ বার বিশ্বকাপ জিতবে ভারত? অলরাউন্ডার রুমেলি বলেন, ‘‘সে বার আমরা চাপের মুখে ভেঙে পড়েছিলাম। এ বার যদি তা না হয়, তা হলে কেন নয়? নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর পর মনে হচ্ছে, আমাদের মেয়েদের কাপ জেতার শক্তি রয়েছে।’’

সে বার কুড়ি উইকেট নেওয়ার পরেও ফাইনালে ব্যর্থতার আফসোস আজও রয়ে গিয়েছে বাঁ হাতি স্পিনার নিতু ডেভিডের। কানপুর থেকে তিনি জানালেন, এ বার ঝুলনরা জিতলে তাঁর সেই আফসোস মিটবে। আবেগপ্রবণ হয়ে নিতু ফোনে বলে চলেন, ‘‘অস্ট্রেলিয়াকে ছিটকে দিয়ে তো সে বারের হারের বদলা নেওয়া হয়েই গিয়েছে। এ বার ইংল্যান্ডের পালা। সে বারের আফসোস কিছুটা হলে তো মিটবে ওদের হারালে। আর এটাই মিতালি, ঝুলনের সেরা প্রাপ্তি হবে। ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি, যেন ওরা বিশ্বকাপ জিতেই দেশে ফিরে আসে।’’

শুধু নিতু বা রুমেলি কেন, সারা দেশ ঝুলনদের জন্য একই প্রার্থনা নিয়ে আজ বসবে টিভির সামনে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন