ক্ষোভ: ব্যর্থতার পর ক্ষুব্ধ মোরিনহো। ইপিএলে। এএফপি
ফল ৩-০। টটেনহ্যাম হারিয়েছে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডকে। এ হেন সরল পরিসংখ্যানের কিন্তু এক জনের কাছে অন্য অর্থও রয়েছে।
এই একজন জোসে মোরিনহো। ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে এমন লজ্জার হার কেন হারল রেড ডেভিলস? সোমবার ম্যাচ শেষের সাংবাদিক সম্মেলনে এমন প্রশ্নে তিনি বলে ফেললেন, ‘‘আপনারা কি জানেন খেলার ফল? ৩-০, ৩-০। এই ফলের মানেটা কি জানেন (হাতের তিনটি আঙুল দেখিয়ে)? ৩-০ মানে কিন্তু তিনটি প্রিমিয়ারশিপও। আমি একা তিনটি প্রিমিয়ারশিপ জিতেছি। এ বার বাকি যে উনিশ জন ম্যানেজার আছে, তারা সবাই একসঙ্গে দু’টো প্রিমিয়ারশিপ জিতেছে।’’ মোরিনহোর মেজাজ এতটাই চড়ল যে তিনি প্রেসরুম থেকে বেরিয়ে গেলেন বারবার ‘সম্মান’ শব্দটা উচ্চারণ করতে করতে। যেন, এত সাফল্যের পরেও তিনি তাঁর প্রাপ্য মর্যাদা পাচ্ছেন না ইংল্যান্ডে।
এমনিতে অবশ্য ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে এতটা অমর্যাদার হার হজম করতে হত না মোরিনহোকে, যদি রোমেলু লুকাকু ফাঁকায় দাড়িয়ে দু’টি সুযোগ নষ্ট না করতেন। তার একটা আবার গোলরক্ষককে কাটিয়ে বল বাইরে মারার মতো অমার্জনীয় ভুল। এই ফল পল পোগবার কাছেও অবিশ্বাস্য, ‘‘কোনও ম্যাচের এত উদ্ভট ফল কম দেখেছি। দারুণ কিছু করতেই নেমেছিলাম। শুরুটাও ভাল হয়েছিল। অথচ আমরাই ৩-০ হেরেছি।’’ এখানেই না থেমে তাঁর সংযোজন, ‘‘কী যে হল আমরা নিজেরাও বুঝতে পারলাম না। দারুণ শুরু করেও দ্বিতীয়ার্ধে দু’টো গোল খাওয়াটা মেনে নিতে পারছি না। তার পরও কত সুযোগ এসেছে। অথচ ওরা আরও একটা গোল করে চলে গেল।’’
পোগবার খারাপ লাগছে। বেশি খারাপ লাগছে, ওল্ড ট্র্যাফোর্ডের দর্শকেরা সারাক্ষণ তাঁদের উৎসাহ দেওয়ার পরেও এ রকম ফল হওয়ায়। খারাপ লেগেছে মোরিনহোরও। ‘গো ব্যাক ম্যানেজার’ ধ্বনি শোনা যায়নি। উল্টে মাঠ ছাড়ার সময় জনতা তাঁকে অভিবাদনই জানিয়েছে দাঁড়িয়ে উঠে হাততালি দিয়ে। আপ্লুত ম্যানেজারের প্রতিক্রিয়া, ‘‘ওরা, আমার ক্লাবের ভক্তেরাই একমাত্র ফুটবলটা বোঝে।’’
পোগবা বা মোরিনহোর প্রতিক্রিয়ায় মনে হতেই পারে যে এ ক্ষেত্রেও স্কোরবোর্ড আসলে ‘গাধা’। কিন্তু সংখ্যাতত্ত্বের মূল্যই বা অস্বীকার করার উপায় কোথায়। এবং তা বলে দিচ্ছে, টটেনহ্যাম দারুণ শুরু করল এ বারের ইপিএল। তিনটি ম্যাচ খেলে তিনটিই জিতে তাদের পয়েন্ট এখন ৯। অবশ্য টেবলে শীর্ষে রয়েছে লিভারপুল। কারণ য়ুর্গেন ক্লপর দলের গোলসংখ্যা বেশি। ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে ম্যান ইউ-র বিরুদ্ধে নিখুঁত হেড-এ টটেনহ্যামের প্রথম গোল করলেন হ্যারি কেন। খেলার ৫০ মিনিটে। তবে কেনকে ছাপিয়ে গিয়ে অসাধারণ ফুটবল উপহার দিলেন ব্রাজিলীয় লুকাস মউরা। ৫২ ও ৮৪ মিনিটে তিনি জোড়া গোল করলেন। ম্যাচের সেরাও বাছা হল লুকাসকেই। সেই লুকাস, যাঁকে ব্রাজিল বিশ্বকাপ দলে রাখেননি তিতে!