বার্সা-রিয়াল দেয়, আমরাও দিলাম: সনি

শ্যাম্পেন স্নান সেরে ড্রেসিংরুম থেকে বেরিয়ে সনি নর্ডি বলে দিলেন, ‘‘পরের বারও কলকাতায় ফিরছি। হয়তো মোহনবাগানেই।’’ সোনালি চুল, চোখে নতুন চশমা। প্রচণ্ড তৃপ্ত দেখাচ্ছিল হাইতি স্ট্রাইকারকে। রবিবার সকালেই ফিরে যাচ্ছেন কলকাতা হয়ে দেশে। সেন্টিনারি কোপা খেলতে। তার আগে বাগানের হার্টথ্রবের মন্তব্য, ‘‘আমরাই আসলে দেশের সেরা দল। আই লিগ একটুর জন্য পাইনি আমার চোটের জন্য। কাপ ফাইনালে পাঁচ গোল। বার্সেলোনা-রিয়াল দেয়, আমরাও দিলাম।’’

Advertisement

রতন চক্রবর্তী

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৬ ০৩:৫০
Share:

বাগান ড্রেসিংরুমে জোড়া গোলের নায়ক জেজে। ছবি: ফেসবুক

শ্যাম্পেন স্নান সেরে ড্রেসিংরুম থেকে বেরিয়ে সনি নর্ডি বলে দিলেন, ‘‘পরের বারও কলকাতায় ফিরছি। হয়তো মোহনবাগানেই।’’

Advertisement

সোনালি চুল, চোখে নতুন চশমা। প্রচণ্ড তৃপ্ত দেখাচ্ছিল হাইতি স্ট্রাইকারকে। রবিবার সকালেই ফিরে যাচ্ছেন কলকাতা হয়ে দেশে। সেন্টিনারি কোপা খেলতে। তার আগে বাগানের হার্টথ্রবের মন্তব্য, ‘‘আমরাই আসলে দেশের সেরা দল। আই লিগ একটুর জন্য পাইনি আমার চোটের জন্য। কাপ ফাইনালে পাঁচ গোল। বার্সেলোনা-রিয়াল দেয়, আমরাও দিলাম।’’

সনির পাশে তখন দাঁড়িয়ে বাগান সহ-সচিব সৃঞ্জয় বসু এবং অন্য কর্তারা। তাঁদের সামনেই সনি বলে চললেন, ‘‘আশা করছি পরের বার আই লিগও জিতব। মোহনবাগান আমার পরিবার হয়ে গিয়েছে এখন।’’ যে মন্তব্যে পরিষ্কার, সনি পরের মরসুমেও সবুজ-মেরুনে থাকতে চাইছেন। সঙ্গে অবশ্য এটাও যোগ করলেন, ‘‘আটেলেটিকো কলকাতা আমাকে অফার দিয়েছে। এখনও সই করিনি। তবে সব ঠিকঠাক চললে মুম্বই ছেড়ে কলকাতায় চলে আসতেই পারি।’’

Advertisement

সনি যখন তাঁর ভবিষ্যতের দিশা ফাঁস করে বাগান সমর্থকদের হৃৎপিণ্ডের টেনশন থামাতে চাইছেন, তখন জোড়া গোল করা জেজের গলায় আবার অন্য সুর! নিজের রাজ্যের ক্লাবের বিরুদ্ধে খেলতে নামার আগে ধর্মযুদ্ধের কথা বলেছিলেন। এ দিন বিরাট সাফল্যের পর বললেন, ‘‘ফেড কাপ কখনও জিতিনি। যে কোনও ভাবে সেটা জিততে চেয়েছিলাম। শেষ বার যখন বাগান এই ট্রফিটা জেতে তখন আমি সবে ফুটবল খেলতে শুরু করেছি। ফলে আজ কার বিরুদ্ধে খেলছি সে সব নিয়ে কোনও আবেগ ছিল না আমার ভেতর।’’

দেশের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার। চমকে দেওয়ার মতো পারফরম্যান্স জেজের। গত ক্লাব আর দেশের হয়ে এক বছরে চারটে ট্রফি জিতলেন। আই লিগ, আইএসএল, সাফ কাপের পর ফেড কাপও। সোনালি দৌড়ে থাকা মিজো-তারকার গলায় তবু স্বপ্ন উথলে ওঠে, ‘‘আমার লক্ষ্য ভাইচুং, সুনীল ভাইয়ের (ছেত্রী) মতো দেশের সেরা স্ট্রাইকার হওয়া। সেটা পারলে মনে করব কিছু করেছি।’’

গত এক মাসে তিনটে ম্যাচ পাঁচ গোলের ব্যবধানে জিতল সঞ্জয়ের বাগান। আই লিগ চ্যাম্পিয়ন বেঙ্গালুরু, ফে়ড কাপে ইস্টবেঙ্গলকে হারানো শিলং লাজং আর কাপ ফাইনালে আইজলের বিরুদ্ধে। বাগান ড্রেসিংরুমে সেটা নিয়েই চলছিল বেশি আলোচনা। সনি-জেজে দু’জনেই বলছেন, ‘‘এটা টিমগেমের সাফল্য।’’ আর এ সব ভাবতেই রাজি নন বাগানের বিশ্বকাপার কর্নেল গ্লেন। ‘‘ভারতে কয়েক বছর হয়ে গেল খেলছি। কিন্ত এত দিন কোনও ট্রফি পাইনি। এ বার আই লিগ না পাওয়ায় কেমন যেন হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। আজ আমার স্বপ্ন সফল।’’

দলের কোনও টাইটেল স্পনসর নেই। ক্লাব প্রেসিডেন্টের টাকায় চলছে এত বড় একটা ফুটবল টিম। অনেকের বেতন হয়েছে। অনেকের হয়নি। সেই ‘নেই রাজ্যের’ বাসিন্দা হয়েও বাগান ফুটবলাররা যখন টফেড কাপ নিয়ে উৎসব করছিলেন, আবেগে চোখের কোণ দিয়ে জল গড়াচ্ছিল সঞ্জয় সেনের। কোচকে জড়িয়ে ধরলেন সনি-জেজে-প্রণয়। মনে হচ্ছিল, এটাই তো বাগানের জয়ের রেসিপি। দলের জন্য আবেগ আর আবেগ। যা সারা বছর টিমগেমের মধ্য দিয়ে মাঠে বিচ্ছূরিত সবুজ-মেরুনে। দুর্ভাগ্য, সঞ্জয় অ্যান্ড কোম্পানি একটার বেশি ট্রফি পায়নি এ বার!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন