কোহালির এই দলে চার নম্বরে চাই রাহুলকে

শেষ দু’টো ওয়ান ডে ম্যাচে সেই চেনা ভারতকে দেখা গেল না। তৃতীয় ওয়ান ডে-তে উমেশ যাদব এবং কে এল রাহুলকে কেন দলে রাখা হল না, এটা বুঝলাম না।

Advertisement

সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৮ ০৩:০৬
Share:

নজরে: হেডিংলে থেকে ট্রেন যাত্রায় হার্দিক ও রাহুল (ডান দিকে)। টুইটার

ওয়ান ডে সিরিজে কিন্তু দারুণ ভাবে ফিরে এল ইংল্যান্ড। টেস্টের দ্বৈরথ শুরুর আগে দু’ধরনের ফর্ম্যাটের লড়াইয়ে স্কোরটা এখন ১-১। টি-টোয়েন্টি সিরিজ ভারত জেতার পরে ওয়ান ডে সিরিজ জিতল অইন মর্গ্যানের দল। শেষ টি-টোয়েন্টি হারার পরে প্রথম ওয়ান ডে ম্যাচও হেরে গিয়েছিল ইংল্যান্ড। এর পর কিন্তু নিখুঁত রণনীতি এবং পরিকল্পনার সাহায্যে ঘুরে দাঁড়াল জো রুটরা। ভারতীয় ব্যাটিং শক্তিকে থামানোর পাশাপাশি দুই রিস্ট স্পিনারকেও (যাঁরা কব্জির মোচড়ে বল ঘোরান) সামলে দিল ইংল্যান্ড।
শেষ দু’টো ওয়ান ডে ম্যাচে সেই চেনা ভারতকে দেখা গেল না। তৃতীয় ওয়ান ডে-তে উমেশ যাদব এবং কে এল রাহুলকে কেন দলে রাখা হল না, এটা বুঝলাম না। ভুবনেশ্বর কুমার চোট সারিয়ে ফিরেছে। ওকে দেখে একশো ভাগ ফিট লাগেনি। কিন্তু উমেশ রীতিমতো ছন্দে ছিল। লর্ডস ম্যাচটা বাদ দিলে সিদ্ধার্থ কলও ভাল বল করেছে। আর একটা ব্যাপার পরিষ্কার বলে দিতে চাই। বিরাট কোহালির দলে কিন্তু মিডল অর্ডারে কে এল রাহুলকে চাই। না হলে ভারতীয় ব্যাটিংকে সে রকম শক্তিশালী দেখাচ্ছে না। ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টের উচিত, চার নম্বরে রাহুলকে বেশ কয়েকটা ম্যাচ খেলানো। যাতে ও স্বাধীন ভাবে খেলতে পারে। নিজের জায়গা হারানোর আশঙ্কায় না থাকে।
লর্ডস এবং হেডিংলেতে কোহালি যখন ব্যাট করছিল, ম্যাচের রাশ ভারতের হাতেই ছিল। কিন্তু ভারত অধিনায়ক একবার আউট হয়ে যেতেই রান তোলার গতিটা ধরে রাখতে পারল না বাকি ব্যাটসম্যানরা। দক্ষিণ আফ্রিকায় আমাদের দুই স্পিনার ভেল্কি দেখিয়েছিল। কিন্তু বিদেশে আমাদের পেসারদেরও উইকেট তুলতে হবে। সব সময় স্পিনারদের ওপর নির্ভর করে থাকলে চলবে না। যশপ্রীত বুমরার চোটটা একটা ধাক্কা ঠিকই, কিন্তু বাকিদেরও তো দায়িত্ব নিতে হবে। ইংল্যান্ড সফরের দীর্ঘতম অংশটা এ বার শুরু হবে। যেখানে সবার অবদানই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে। টেস্ট সিরিজ শুরুর আগে ওয়ান ডে সিরিজ জিতে ইংল্যান্ড কিন্তু মানসিক ভাবে ভাল জায়গাতেই থাকবে। ইংল্যান্ডের ওয়ান ডে সিরিজ জেতার পিছনে অবশ্যই রুটের অবদান অনেক। ইংল্যান্ড মিডল অর্ডার ব্যাটিংকে শুধু টানাই নয়, রুট ওর সতীর্থদের দেখিয়ে দিয়েছে, কী ভাবে ভারতের দুই রিস্ট স্পিনার— কুলদীপ যাদব এবং যুজবেন্দ্র চহালকে খেলতে হয়। ঠিক মতো লেংথ বুঝতে পারা, ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে এসে বল ঘোরার আগে খেলে দেওয়া, স্ট্রাইক বদল করে স্কোরবোর্ড সচল রাখা, এ সবই করেছে রুট। ওর আত্মবিশ্বাস বাকিদের মধ্যেও ছাপ ফেলেছে। ইংল্যান্ড বোলিংও ভাল হল। আদিল রশিদকে অনবদ্য লাগল। নিখুঁত নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে বৈচিত্রও আছে। আরও দেখলাম, ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের প্রতি মইন আলির ভালবাসা এখনও অটুট! এই দুই স্পিনার মিলে মাঝের ওভারগুলোয় ভারতকে আটকে রাখল।
ইংল্যান্ডের সীমিত ওভারের অধিনায়ক মর্গ্যানকেও আমার ভাল লাগল। শুধু ভাল ব্যাটিং করার জন্যই নয়, টস জিতে একেবারে ঠিক সিদ্ধান্তও নিল। লর্ডসে টস জিতে প্রথমে ব্যাট নিল, কারণ স্থানীয় ছেলে হওয়ার সুবাদে ও বুঝেছিল, পরের দিকে বল ঘুরবে। আবার হেডিংলেতে ফিল্ডিং নিল, কারণ প্রথম দিকে উইকেটের স্যাঁতস্যাঁতে ভাবটা কাজে লাগাতে চেয়েছিল। এক জন অধিনায়কই দলকে ঠিক রাস্তায় চালিত করতে পারে। আমার মনে হয়, দু’টো ম্যাচেই মর্গ্যান সেটা করতে পেরেছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন