মরিয়া: পুরুলিয়া মানভূম ক্রীড়া সংস্থার মাঠে। নিজস্ব চিত্র
এ বারও খেতাব ধরে রাখল জয়পুর।
টান টান উত্তেজনার মধ্যে সোমবার চলতি বছরের কন্যাশ্রী ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হল জয়পুর আর বি বি হাইস্কুল। এ দিন বিকেলে পুরুলিয়া মানভূম ক্রীড়া সংস্থার মাঠে টাইব্রেকারে তারা কাশীপুরের কন্যাশ্রী দলকে পরাজিত করে। নির্ধারিত সময়ে খেলার ফল ছিল ২-২। যা দেখে অনেকের মত, কেউ কাউকে জমি ছাড়তে রাজি ছিল না।
আজ মঙ্গলবার কন্যাশ্রী দিবস। তার এক মাস আগে ব্লকস্তরে খেলার সূচনা হয়েছিল। ব্লকস্তর থেকে মহকুমাস্তর, মহকুমা পেরিয়ে জেলাস্তরে ফাইনাল। সোমবার জয়পুর ও কাশীপুরের ম্যাচ ঘিরে বর্ণাঢ্য আয়োজনের ব্যবস্থা করেছিল প্রশাসন। দর্শকাসনে প্রশাসনিক কর্তা থেকে প্রাক্তন ফুটবলার, দুই ব্লক থেকে আসা সমর্থক এবং শহরের ফুটবলপ্রেমীরা ছিলেন একেবারে ময়দানি মেজাজে। জেলাশাসক অলকেশপ্রসাদ রায় থেকে পুলিশ সুপার আকাশ মাঘারিয়া, দুই অতিরিক্ত জেলাশাসক উত্তমকুমার অধিকারী, প্রবালকান্তি মাইতি, রঘুনাথপুরের মহকুমাশাসক আকাঙ্ক্ষা ভাস্কর সকলেই ছিলেন মাঠের পোশাকে। খেলা শুরুর আগে ছৌ শিল্পীদের নৃত্যে মেতে উঠল গোটা মাঠ।
ম্যাচ শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই জয়পুরের মাঝমাঠের এক খেলোয়াড়ের দূরপাল্লার শট কাশীপুরের জালে জড়িয়ে যায়। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই গোল শোধ করে কাশীপুর। এরপর কাশীপুর আরও একটি গোল করে এগিয়ে যায়। খেলা শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ আগে গোল শোধ করে দেয় জয়পুর।
গোল হলেই ছৌয়ের বেশে চিয়ার লিডারদের নাচ, গোধুলি বেলার ক্যানভাস জুড়ে আকাশ জুড়ে রঙিন ফানুস— সব মিলিয়ে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ উপভোগ করেছেন দর্শকেরা। কাশীপুর পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়াও এসেছিলেন। কাশীপুরের হয়ে গলা ফাটাতে তাঁকে দেখা যায়। ম্যাচের পরে বললেন, ‘‘আমাদের মেয়েরা লড়াই করেছে। তবে ভাগ্য আজ আমাদের সঙ্গ দেয়নি। তবে আমাদের রজনী বাউরি ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়ের সম্মান পেয়েছে।’’ জয়পুরের বিডিও নয়না দে বলেন, ‘‘আমরা আবার জিতলাম। ভাল লাগছে। খুশির মূহূর্ত।’’
জেলাশাসক অলকেশপ্রসাদ রায় বলেন, ‘‘অনেক দিন এমন উপভোগ্য খেলা দেখিনি। মুখ্যমন্ত্রীর কন্যাশ্রীরা যে ফুটবল চর্চার মাধ্যমে নিজেদের এই জায়গায় নিয়ে গিয়েছে, তা মাঠে না গেলে বোঝা যেত না। আশাকরি সকলেই ম্যাচ উপভোগ করেছেন।’’