Sports News

সহবাগের পর ফের ভারতকে তিনশো রান উপহার, এ বার নায়ার

কেরিয়ারের প্রথম টেস্টেই তিনশো রান করে ইতিহাস গড়লেন করুণ নায়ার। লোকেশ রাহুলের ডাবল সেঞ্চুরির মিসের দুঃখ ভুলিয়ে দিলেন তিনি। চিপকের মাটিতে নিজের প্রথম টেস্ট শতরান বদলে ফেললেন দুর্দান্ত ত্রিশতরানে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৬ ১৬:৩৪
Share:

ইতিহাসে গড়ার দিনে করুণ নায়ার। ছবি: পিটিআই।

কেরিয়ারের প্রথম টেস্টেই তিনশো রান করে ইতিহাস গড়লেন করুণ নায়ার। লোকেশ রাহুলের ডাবল সেঞ্চুরির মিসের দুঃখ ভুলিয়ে দিলেন তিনি। চিপকের মাটিতে নিজের প্রথম টেস্ট শতরান বদলে ফেললেন দুর্দান্ত ত্রিশতরানে। বীরেন্দ্র সহবাগের পর ভারতকে ফের ট্রিপল সেঞ্চুরি উপহার দিলেন ২৫ বছরের এই স্টাইলিশ ব্যাটসম্যান। এমএ চিদাম্বরম স্টেডিয়ামেই ২০০৮-এ দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ৩১৯ রানের ঝোড়ো ইনিংসে খেলেছিলেন সহবাগ। সাড়ে আট বছর পর সেই একই স্টেডিয়ামে তিনশো করে সহবাগকে ছুঁলেন নায়ার।

Advertisement

রবিবার অফ স্টাম্পের বাইরের বল তাড়া করে ১৯৯-এ প্যাভিলিয়নে ফিরে রাহুল জানিয়েছিলেন, ডাবল সেঞ্চুরির চাপ নিতে পারেননি তিনি। কিন্তু, সোমবার সে ভুল করেননি করুণ। চা-পানের বিরতিতে তিনি দাঁড়িয়েছিলেন ১৯৫-এ। ফলে তাঁর পক্ষে মনসংযোগ ধরে রাখাটা আরও কঠিন ছিল, সন্দেহ নেই। কিন্তু, বিরতির কাটিয়ে ক্রিজে ফিরে পাওয়া গিয়েছে পুরনো করুণকেই। কিটন জেনিংসকে কভার ফেন্সে নিখুঁত ভঙ্গিতে তাঁর ২৩তম চার মেরে নিজের প্রথম ডাবল করলেন তিনি। মাত্র তৃতীয় টেস্টেই। তবে তাতেও থেমে থাকেননি তিনি। ৩৮১ বল ক্রিজে কাটিয়ে অপরাজিত ৩০৩ রান (৩২x৪, ৪x৬) ঝুলিতে পুড়লেন তিনি।

আরও পড়ুন

Advertisement

ডাবল সেঞ্চুরির চাপটা নিতে পারলাম না

তিনশো ছোঁয়ার আগের মুহূর্তে কি একটু নার্ভাস ছিলেন? দিনের শেষে রবি শাস্ত্রীর প্রশ্নের উত্তরে আত্মবিশ্বাসী নায়ার, “না! একেবারেই না। বরং শতরান করার পর আমি কোনও চাপ অনুভব করিনি।” নিজের সুইপ খেলা নিয়ে তিনি বলেন, “সুইপটা আমার বেশ স্বাভাবিক ভাবেই আসে। যদিও ওটার জন্য বেশ প্র্যাকটিস করেছি।”

করুণের আগে মাত্র দু’জন ভারতীয় প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি করার পর তা দ্বিশতরানে পরিবর্তিত করেন। এ দিনের পর সেই দুই ভারতীয় দিলীপ সারদেশাই আর বিনোদ কাম্বলির সঙ্গে জায়গা করে নিলেন করুণ। ১৯৬৫-এ নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ২০০ রান করে অপরাজিত থাকেন দিলীপ। আর সফরকারী ইংল্যান্ড দলের বিরুদ্ধে ১৯৯৩-তে ২২৪ রানের চোখধাঁধাঁনো ইনিংস খেলেছিলেন সচিনের ছোটবেলার ক্রিকেট পার্টনার কাম্বলি। কাম্বলি অবশ্য পরের ম্যাচেও ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন। তবে সেই রেকর্ডের পরও যে আরও অনন্য কীর্তি গড়া বাকি ছিল নায়ারের তা বেশ বোঝা যাচ্ছিল। রবি শাস্ত্রীর মতো পোড়খাওয়া ক্রিকেটার থেকে শুরু করে সুনীল গাওস্কর-সহ অনেক প্রাক্তনই নায়ারের ভূয়সী প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন।

তবে কর্নাটকের হয়ে রঞ্জি দাপানো এই ব্যাটসম্যানের কিন্তু এ সিরিজে খেলার কথা ছিল না। অজিঙ্ক রাহানে আর রোহিত শর্মা চোট না পেলে হয়তো রিজার্ভেই থাকতেন তিনি। এ দিন ৩৪ রানে তাঁর ক্যাচ ফেলে দেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক অ্যালিস্টার কুক। তার পর থেকে আর পিছন ফিরে তাকাননি করুণ। ডাবল সেঞ্চুরির পর ভেঙেছেন সুনীল গাওস্করের সর্বোচ্চ টেস্ট রান ২৩৬। ১৯৮৬-তে এই চিপকেই তা করেছিলেন গাওস্কর। আর এ দিন গাওস্করের সামনেই তাঁর রেকর্ড ভাঙলেন করুণ। যিনি গত কালই করুণের রিভার্স সুইপের ভূয়সী প্রসংসা করেছেন। তবে নায়ার-শো’য়ের তখনও শেষ নয়।

ডাবল সেঞ্চুরির করে হেলমেটে চুম্বন। ছবি: রয়টার্স।

৩০৪ বলের ম্যারাথন ডাবল খেলার আগে পাঁচ নম্বরে নেমে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পার্টনারশিপ গড়েছেন তিনি। গত কাল লোকেশ রাহুলের সঙ্গে ১৬১ রানের পর এ দিন ষষ্ঠ উইকেটে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের সঙ্গে দেড়শো রানের জুটি বাঁধেন তিনি। এর পর চালিয়ে খেলে দ্রুত তিনশো করেন তিনি।

নায়ারের তিনশোর সঙ্গে সঙ্গেই ইনিংস ডিক্লেয়ার করতে এক মুহূর্ত দেরি করেননি বিরাট কোহলি। ৭ উইকেট খুইয়ে স্কোরবোর্ডে টিম ইন্ডিয়ার টোটাল তখন ৭৫৭। ফের রেকর্ড। যে কোনও টেস্ট দলের বিরুদ্ধে ভারতের গড়া সর্বোচ্চ রান।

গত কাল পর্যন্ত ড্রয়ের দিকে গড়াচ্ছিল এই টেস্ট। শাস্ত্রীর মতো অনেক ধারাভাষ্যকারই দেড়শো রানের লিডের আশা করেছিলেন। তবে তা ছাপিয়ে গেল নায়ার-শো’য়ের কেরামতিতেই। টিম ইন্ডিয়ার লিড ছিল ২৮২ রান। পাঁচ ওভারে ব্যাট ঘুরিয়ে ইংল্যাল্ডের সংগ্রহ ১২ রান। ফলে পঞ্চম দিনে কোহালিদের সামনে লক্ষ্য ১০ উইকেট।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন