‘ব্যাটে ও বলে এত ভয়ঙ্কর কলকাতাকে কমই দেখেছি’

কেকেআর ব্যাট করার সময় ট্রেন্ট বোল্টের প্রথম ওভার মেডেন। কেকেআর ইনিংসের শেষ ওভারে দিল্লির রাহুল তেওয়াটিয়ার বলে রান উঠল মাত্র এক। উইকেট গেল তিনটি।

Advertisement

সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৮ ০৪:৩৫
Share:

ব্যর্থ: ইডেনে নাইটদের বিরুদ্ধে রান পেলেন না গম্ভীর। নিজস্ব চিত্র

অদ্ভুত একটা ম্যাচ দেখলাম কলকাতা নাইট রাইডার্স বনাম দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের মধ্যে। কেকেআর ব্যাট করার সময় ট্রেন্ট বোল্টের প্রথম ওভার মেডেন। কেকেআর ইনিংসের শেষ ওভারে দিল্লির রাহুল তেওয়াটিয়ার বলে রান উঠল মাত্র এক। উইকেট গেল তিনটি। তবুও নির্ধারিত কুড়ি ওভারের শেষে কেকেআরের রান ২০০-৯।

Advertisement

কেকেআর ম্যাচটা জিতেও ফিরল ৭১ রানে। দুরন্ত এই জয়ের পিছনে দুই ক্যারিবিয়ান আন্দ্রে রাসেল (১২ বলে ৪১) ও সুনীল নারাইনের (৩-১৮) যতটা কৃতিত্ব, ঠিক ততটাই অবদান কুলদীপ যাদব (৩-৩২) ও নীতীশ রানার (৩৫ বলে ৫৯ রান)। এর সঙ্গে উল্লেখ করতে হবে দীনেশ কার্তিকের দুর্দান্ত অধিনায়কত্বের। যে ভাবে বোলিং পরিবর্তন করে সোমবার ইডেনে দীনেশ টেক্কা দিয়ে গেলেন তাঁর দলের প্রাক্তন অধিনায়ককে, তার প্রশংসা করতেই হবে। এই দলগত পারফরম্যান্সের জন্যই ১২৯ রানে অলআউট করে দিতে পারল কলকাতা।

কেকেআর অধিনায়ক জানতেন ২০০ রান তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই আক্রমণে আসবেন দিল্লির দুই ওপেনার জেসন রয় (১) এবং গৌতম গম্ভীর (৮)। তাই প্রথম ওভারেই পীযূষ চাওলাকে আক্রমণে এনে ওদের সেই পরিকল্পনা নষ্ট করে দেন দীনেশ। ওই ওভারেই দুরন্ত স্টাম্প করে জেসন রয়কে ফিরিয়ে কাঁপিয়ে দেন দিল্লি ডেয়ারডেভিলসকে। এই ধরনের ম্যাচ বার করার একটা সহজ সূত্র হচ্ছে, প্রথম ছয় ওভারে স্কোরবোর্ডে ৭০-৮০ রান তুলে বিপক্ষকে চাপটা ফিরিয়ে দাও। কিন্তু দিল্লি সেখানে প্রথম তিন ওভারে ২৪-৩ হয়ে গিয়ে ম্যাচটা থেকেই হারিয়ে গেল।

Advertisement

এমনিতেই কলকাতা বোলিংয়ে এক জন লেগ স্পিনার (পীযূষ), এক জন চায়নাম্যান (কুলদীপ) আর এক জন রহস্য স্পিনারকে (নারাইন) খেলতে গিয়ে বিপক্ষের যে কোনও ব্যাটসম্যান চাপে পড়েন। দীনেশ পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে সেই নারাইনকে এনে চাপটা আরও বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। নারাইনের ঝুলিতে অস্ত্র হচ্ছে তিন ধরনের বল। অফ ব্রেক, লেগ ব্রেক এবং ‘স্ট্রেটার’। ইডেনে এ দিন বুদ্ধি করে বলগুলো এমন জায়গায় রাখছিলেন যে ঋষভ পন্থ (২৬ বলে ৪৩) বা গ্লেন ম্যাক্সওয়েল (২২ বলে ৪৭) পুল বা হুক করার জায়গা পাননি। একই সঙ্গে তিন উইকেট নিয়ে হরভজন সিংহ ও লাসিথ মালিঙ্গার পরে তৃতীয় ক্রিকেটার হিসেবে আইপিএলে একশো উইকেট দখল করলেন এই ক্যারিবিয়ান স্পিনার। ঋষভ ও ম্যাক্সওয়েল বাদে দিল্লির বাকি ব্যাটসম্যানরা দাঁড়াতেই পারেননি। নারাইন ও কুলদীপের দাপটে এতটাই শোচনীয় অবস্থা দিল্লির যে, এই দুই ব্যাটসম্যান বাদে বাকি কেউ ১০ রানও করতে পারেননি।

দিল্লি অধিনায়ক গম্ভীর পাওয়ার প্লে-তে (প্রথম ছয় ওভার) ৫০ রানের বেশি তুলতে দেননি কলকাতাকে। কিন্তু সেই জায়গা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে বাকি ১৪ ওভারে (৮৪ বলে) কলকাতা যে ১৫০ রান করে গেল, তার জন্য পুরো কৃতিত্ব দিতে হবে রাসেল এবং নীতীশকে।

রাসেলের ইনিংস দেখে দেখে মনে হচ্ছিল আইপিএলে কে এল রাহুলের দ্রুততম হাফসেঞ্চুরির রেকর্ড না ভেঙে যায়। ছয়টা ছক্কার মধ্যে একটা শামিকে পয়েন্টের ওপর দিয়ে মারা। বাকি পাঁচটি মেরেছেন মিড উইকেট, মিড অফ, মিড অন ও স্কোয়ার লেগ অঞ্চল দিয়ে। এতেই বোঝা যাচ্ছে, ব্যাট করতে নেমে শক্তিকে তিনি কী রকম কাজে লাগিয়েছিলেন। নীতীশও ওর সঙ্গে দারুণ খেললেন। তবে নজর কাড়লেন শিবম মাভি। ১৪০ কিলোমিটারের ওপর গতি। গম্ভীর তাতেই ঠকে ব্যাট তোলার সুযোগ না পেয়ে বোল্ড হয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন