দ্বিতীয় টেস্টে নেই মুরলী বিজয়

অজানা আতঙ্কও কাঁপাতে পারছে না কোহালিদের

সাবাইনা পার্ক নর্থ স্ট্যান্ডের সিঁড়ি ধরে যে যুবক শুক্রবার সকালে তরতরিয়ে উঠছিলেন, বয়স তাঁর মাত্র উনিশ। দেশজ সতীর্থদের সঙ্গে জীবনের প্রথম আন্তর্জাতিক প্র্যাকটিস সেশনে যোগ দেওয়া হয়নি তখনও।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৬ ০৩:৪২
Share:

আলজারি জোসেফ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের নতুন তাস।

সাবাইনা পার্ক নর্থ স্ট্যান্ডের সিঁড়ি ধরে যে যুবক শুক্রবার সকালে তরতরিয়ে উঠছিলেন, বয়স তাঁর মাত্র উনিশ। দেশজ সতীর্থদের সঙ্গে জীবনের প্রথম আন্তর্জাতিক প্র্যাকটিস সেশনে যোগ দেওয়া হয়নি তখনও। নিজের ইচ্ছেয় যে গ্যালারির সিঁড়ি ধরে উঠছেন, এমনও নয়। উঠতে হচ্ছে, নির্দেশ মেনে। কারণ ততক্ষণে ওয়েস্ট ইন্ডিজ মিডিয়া ম্যানেজার যুবকের দিকে ক্যামেরার লেন্স তাক করে ফেলেছেন। এবং সঠিক ফ্রেমিং হওয়া মাত্র দু’টো জিনিস দেখা যায়। রেলিংয়ে হাত দিয়ে ঝুঁকে পড়েছেন যুবক। যার নীচে লেখা— কোর্টনি ওয়ালশ স্ট্যান্ড!

Advertisement

না, ওয়ালশ এবং উনিশ বছরের আলজারি জোসেফকে এক ফ্রেমে ভাবার ধৃষ্টতা কোনও ক্রিকেট-অজ্ঞও করবে না। টেস্ট ক্রিকেটে তিরিশ হাজারের উপর বল করেছেন ওয়ালশ। জোসেফ সেখানে টেস্ট ক্রিকেট কী, তার আস্বাদ পাননি এখনও। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তাঁর ডেলিভারির সংখ্যা হাজারের নীচে।

তবে টিনএজার ক্যারিবিয়ান পেসারের দু’টো ‘বদভ্যাস’। ব্যাটসম্যানের স্টাম্প ওড়ানো এবং তাকে বাউন্সারে-বাউন্সারে জর্জরিত করে তোলা। অনূর্ধ্ব উনিশ বিশ্বকাপে জিম্বাবোয়ের ব্রেন্ডন স্লাইয়ের লেগস্টাম্প তাঁর বলে হাওয়ায় গোটা কয়েক পাক খেয়ে তার পর মাটিতে পড়েছিল। বাংলাদেশ ওপেনার পিনাক ঘোষকে আবার বাউন্সারের সমুদ্রে ফেলে দিয়েছিলেন। সাবাইনা পার্কের সবুজ পিচে জোসেফকে খেলানো ছাড়া আর উপায় কী ওয়েস্ট ইন্ডিজের?

Advertisement

মার্লন স্যামুয়েলস তো পারলে এ দিনই নামিয়ে দেন। হুঙ্কারও ছেড়েছেন, ‘‘এখন না খেলালে আর খেলাবে কবে? এ রকম ফিট, গতিসম্পন্ন আর ভয়ডরহীন বোলারই চাই আমাদের।’’ কোহালির ভারতের বিরুদ্ধে চলতি টেস্ট সিরিজে সমতা ফেরাতে সাবাইনার সবুজ আর পেস আক্রমণেই ভরসা রাখছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সাবাইনা পার্ক কিউরেটর মাইকেল হিলটন বলেও দিয়েছেন, ‘‘উইকেটে ভাল গতি থাকবে, বাউন্সও।’’ তাই নবাগত আগুনে পেসার জোসেফকে ডেকে নেওয়া। স্যামুয়েলস সতীর্থদের ডাক দিয়েছেন ঘুম ভেঙে জেগে উঠতে। বলেছেন, ‘‘ও সব নতুন টিম, তরুণ টিমের অজুহাত দিয়ে লাভ নেই। টেস্ট ক্রিকেটটা পুরুষ মানুষের খেলা। যা এ বার খেলতে হবে।’’

ঘরের মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সবুজ পিচ। অজানা-আতঙ্ক দিয়ে ভয় ধরানোর চেষ্টা। কিন্তু চিন্তিত নন কোহালি। সাংবাদিক সম্মেলনে এ দিন বলে দেন, ‘‘ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোলারদের যতই পেস আর গতি থাক, আমাদের ব্যাটসম্যানরা যে কোনও বোলিং সামলে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। বরং উইকেটে বাউন্স আছে শুনে খুশিই হয়েছি।’’ ডান হাতের বুড়ো অঙুলে চোট থাকায় ভারত দ্বিতীয় টেস্টে পাচ্ছে না ওপেনার মুরলী বিজয়কে। তাঁর জায়গায় সম্ভবত কে এল রাহুল খেলবেন। কোহালি যাঁর প্রশংসায় বলেছেন, ‘‘রাহুল একদম জোন-এ আছে। জিম্বাবোয়ে সফর আর আইপিএলের সাফল্য ওকে আত্মবিশ্বাস দিয়েছে। ভাল ফিল্ডার, প্রয়োজনে সাহার কিছু হলে উইকেটকিপিংটাও করতে পারবে।’’ নিজে জেতা ছাড়া তিঠু ভাবছেন না। বলেছেন, ‘‘প্ল্যানটা হল প্রথম টেস্টের মতোই এখানেও জেতায় ফোকাস রেখে খেলা। তবে এই মাঠে যে বেশির ভাগ টেস্টেরই ফয়সালা হয়, সেটা মাথায় রেখে কন্ডিশনস বুঝে খেলাটাই লক্ষ্য।’’ বার্তাটা খুব পরিষ্কার। যে যা বলুক, যে যা করুক। ভারত বিদেশের মাটিতে চুনকাম দেখছে, দেখবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন