ফিটনেসের এভারেস্টে উঠতে চান কোহালি, বলছেন ট্রেনার

ভারতীয় ক্রিকেট দলে এত ফিট ক্রিকেটার তো কেউ নেই-ই, এমনকী সারা দেশে তাঁর মতো ফিট খেলোয়াড় কেউ আছেন কি না, সন্দেহ।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০১৬ ১০:৪৩
Share:

নিয়মরক্ষার ম্যাচের আগের দিন পুলিশ বাইকে ধোনি। হারারেতে।

ফিটনেসের চরমে তিনি। বিরাট কোহালি।

Advertisement

ভারতীয় ক্রিকেট দলে এত ফিট ক্রিকেটার তো কেউ নেই-ই, এমনকী সারা দেশে তাঁর মতো ফিট খেলোয়াড় কেউ আছেন কি না, সন্দেহ।

কিন্তু এখানেই থেমে থাকতে রাজি নন ভারতীয় টেস্ট ক্যাপ্টেন। ফিটনেসের এভারেস্টে উঠতে চান তিনি। এই নিয়ে তাঁর সঙ্গে সমানে কাজ করে চলেছেন যিনি, সেই ট্রেনার ও ফিটনেস কোচ শঙ্কর বাসু নিজেই জানিয়েছেন কোহালির এই বিরাট ইচ্ছার কথা। মুগ্ধ শঙ্কর জানিয়েছেন, ‘‘লোকে ভাল কোচ পেয়ে বর্তে যায়। আমি তো কোচ হয়ে বিরাটের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়ে বর্তে গিয়েছি।’’

Advertisement

ভারতীয় ক্রিকেট দল ও রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু— এই দু’দলেই কোহালিকে একেবারে কাছ থেকে দেখে আসছেন কর্ণাটকের এই ফিটনেস কোচ। সেই শঙ্কর বিসিসিআই ওয়েবসাইটকে জানান কোহালির এই ফিটনেস-পাগলামির কথা। শঙ্কর বলেন, ‘‘বিরাট এখন বিশ্বের সেরা অ্যাথলিট হওয়ার দিকে দৌড়চ্ছে। যার কোনও সীমা নেই। এই ব্যাপারে ওর কয়েকজন রোল মডেল আছে। আর ও তাদের মতো হওয়ার জন্য বোধহয় কোনও চ্যালেঞ্জের সঙ্গেই সমঝোতা করবে না। বরং ঝাঁপিয়ে পড়বে।’’

শঙ্করের মতে, শরীরের শক্তি বাড়াতেই ফিটনেস বাড়ানোর উদ্দেশ্য কোহালির। যার ফলে তিনি এখন অনায়াসে বড় শট নিতে পারেন। আগে যে সব শট নিতে তাঁকে বাড়তি শক্তি প্রয়োগ করতে হত।

কিন্তু নিজেকে ফিটনেসের এই চরম জায়গায় আনলেন কী ভাবে কোহালি? শঙ্কর বলেন, ‘‘যখনই প্রয়োজন পড়েছে, তখনই বিরাট সমানে প্রচন্ড পরিশ্রম করে গিয়েছে। শৃঙ্খলা ও নিজের খাওয়ার অভ্যাসের দিক থেকে ও প্রচন্ড কঠোর।’’ এ জন্য নিজের লাইফস্টাইলে আমূল পরিবর্তন এনেছেন কোহালি, জানান শঙ্করই। বলেন, ‘‘তবে আমি ওর এই উদ্দেশ্যকে সফল করতে সাহায্য করেছি মাত্র। ও কিন্তু পুরোটা নিজেই করেছে ভারতীয় দলে আমার আগের ফিটনেস কোচের সাহায্য নিয়ে।’’

গত বছর শ্রীলঙ্কা সফরের সময় ওয়েট ট্রেনিং করা শুরু করেন কোহালি। ওই সময় থেকেই নিজের শারীরিক সক্ষমতায় বড় পরিবর্তন টের পেতে শুরু করেন তিনি। এ কথা নিজেই এক সাক্ষাৎকারে সম্প্রতি জানিয়েছেন ভারত অধিনায়ক। তার পর থেকে নিয়মিত ওয়েট ট্রেনিং করে যে শক্তি কতটা বাড়িয়েছেন, তার প্রমাণ মিলেছে এ বার আইপিএলেই। এ বার সব মিলিয়ে তিনি ৩৮টি ছয় মেরেছেন, গত আইপিএলের চেয়ে ১৫টি বেশি। শঙ্কর জানান, ‘‘গত সেপ্টেম্বরে বিরাটের পেশিশক্তির পরীক্ষা করা হয়েছিল। তখন তার যা ফল পাওয়া গিয়েছিল, মরসুমের শেষে দেখা যায়, ওর পেশিশক্তিতে অভাবনীয় পরিবর্তন এসেছে। গত ছ’মাসে শক্তি ও সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য প্রচুর সময় দিয়েছে। এখন তারই ফল পাচ্ছে।’’

ফিটনেসের শিখরে নিজেকে নিয়ে যাওয়ার নেশা এখন বিরাট কোহালি থেকে ছড়িয়ে পড়ছে টিম ইন্ডিয়ার অন্য সদস্যদের মধ্যেও। শঙ্কর বলেন, ‘‘ভারতীয় দলে অনেকেই আছে, ফিটনেস বাড়ানো যাদের কাছে নেশা। বিরাট ওদের মধ্যে সবার আগে। দলের অন্যরা ওকে অনুসরণ করছে এখন। তাই আমার কাজটা অনেক সোজা হয়ে গিয়েছে। তাদের আর আলাদা করে তাগিদ অনুভব করাতে হয় না। বিরাটকে দেখে ওরা নিজেরাই ফিটনেস নিয়ে সমানে খাটছে।’’

বিরাট কোহালি তাই এখন শুধু তাঁর ভক্তদের কাছেই রোল মডেল নন, তাঁকে দেখে অনুপ্রেরণা পান তাঁর সতীর্থরাও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন