শ্যামো, তুমি চেস্ট প্যাড পরেছ?

কোহালির সুপার স্লেজিং, ধোনির অস্ত্র হিন্দি

অতীতের কথা ভুলে গিয়ে শামসি শুরুতেই কোহালিকে স্লেজ করতে শুরু করে দিয়েছিলেন। এটাও তাঁর মাথায় ছিল না যে, স্লেজিং করলে আরও বেশি করে খেলা খোলে ভারত অধিনায়কের।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৪:২০
Share:

তাঁর নেতৃত্বে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে দল। পঁচিশ বছরে এই প্রথম দক্ষিণ আফ্রিকায় কোনও সিরিজ জিতেছে ভারতীয় দল। পোর্ট এলিজাবেথে জেতার সঙ্গে সঙ্গে ৪-১ এগিয়ে গিয়ে ওয়ান ডে সিরিজ জয় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

কিন্তু তাঁর ব্যাটিং বা অধিনায়কত্বের চেয়েও ক্রিকেট দুনিয়ায় চাঞ্চল্য ফেলে দিয়েছে কোহালির অভিনব স্লেজিং। পোর্ট এলিজাবেথে মঙ্গলবারের ম্যাচে ভারত অধিনায়ক যখন ব্যাট করছিলেন, তাঁকে প্রচুর কথা শোনান তাব্রেইজ শামসি। দক্ষিণ আফ্রিকার স্পিনার এবং কোহালি একটা সময়ে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরে সতীর্থ ছিলেন। পরে অবশ্য শামসি-কে আর রাখেনি আরসিবি।

অতীতের কথা ভুলে গিয়ে শামসি শুরুতেই কোহালিকে স্লেজ করতে শুরু করে দিয়েছিলেন। এটাও তাঁর মাথায় ছিল না যে, স্লেজিং করলে আরও বেশি করে খেলা খোলে ভারত অধিনায়কের। অতীতে অস্ট্রেলিয়ার জেমস ফকনার বা মিচেল জনসনের ক্ষেত্রে সেটাই দেখা গিয়েছে। শামসি সে সবের তোয়াক্কা না করেই অবশ্য অনর্গল কথা বলে যেতে থাকেন। ব্যাট করার সময় শামসি-কে উত্তর দিতে যাননি কোহালি। ফের বড় রান করার সম্ভাবনা তৈরি করেও তিনি রান আউট হয়ে যান রোহিত শর্মার সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে।

Advertisement

তা বলে কোহালি পাল্টা কিছু না বলে শামসি-কে ছেড়ে দেবেন, তা-ও বা কী করে হয়? দক্ষিণ আফ্রিকা যখন হারের মুখে এবং শামসি ব্যাট করতে আসেন, তাঁর সামনে ছুটে আসেন কোহালি। স্টাম্প মাইক্রোফোনে পরিষ্কার ধরা পড়েছে, কোহালি তাঁকে বলছেন, ‘‘চেস্ট প্যাড? শ্যামো, কী করেছ? তুমি চেস্ট প্যাড পরেছ?’’ সাধারণত খুব বাউন্সি পিচে ফাস্ট বোলারদের খেলতে গেলে এই প্রতিরক্ষা ব্যবহার করেন ব্যাটসম্যানেরা। কিন্তু শামসি যখন ব্যাট করতে আসেন, সেই সময়ে বল করছিলেন স্পিনার কুলদীপ যাদব। তাতেও চেস্ট প্যাড পরে নেমেছেন বলেই প্রাক্তন আরসিবি সতীর্থকে কটাক্ষ ফিরিয়ে দিতে ছাড়েননি কোহালি। আর তাঁর কথার জেরেই কি না কে জানে, মাত্র এক বল খেলেই আউট হয়ে যান শামসি।

কথায়-কথায়

• এক ফিল্ডারকে ধোনি: (হিন্দিতে বলে চলেন স্টাম্পের পিছন থেকে) তুই তৈরি থাক। বেশি আগে আসিস না। খুব জোরে তোর কাছেই ক্যাচ যাবে। পরে এসে অজুহাত দিস না। বলিসও না যে, আমি আগে থেকে সাবধান করিনি।

• চহালকে ধোনি: (ব্যাট করছেন হাসিম আমলা) এ কিন্তু বলের লাইনের ভিতরের দিকে বেশি খেলে। এই বলটা ঠিক আছে, কিন্তু খুব সোজা
করবি না একে।

• টিমকে ধোনি: (দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ১২৭-৩, উইকেট চাই) চলো। চলো লড়কো, খালি একটা উইকেটের তো ব্যাপার।

• চহালকে ধোনি: (বোলিং পরামর্শ) গতি আস্তে কর। জোরে বল করবি না। (বলের গতি কমিয়ে দিলে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানদের মারতে অসুবিধে হয়)।

• টিমকে কোহালি: (দক্ষিণ আফ্রিকা তখন ১৫৬-৪, ফের উইকেট দরকার। ধোনির মতো হিন্দিতে নয়, মূলত ইংরেজিতেই বললেন) কাম অন ল্যাড্‌স, দারুণ জোশ দেখাচ্ছ তোমরা।

• শামসিকে কোহালি: (দক্ষিণ আফ্রিকা ৪১.৪ ওভারে ১৯৭-৮। ম্যাচের ভাগ্য ঠিকই হয়ে গিয়েছে) এ কী! চেস্ট প্যাড? শ্যামো, এটা কী করেছ? তুমি চেস্ট প্যাড পরে এসেছ? (তখন বল করছেন স্পিনার, সে দিকে তাকিয়ে বাঁকা হাসি ভারত অধিনায়কের)!

কারও কারও মনে পড়ে যেতে পারে যে, কোহালি নিজে কখনও ফাস্ট বোলারদের খেলার সময়েও চেস্ট প্যাড পরেন না। এমনকী, তাঁকে কখনও বাঁ হাতে আর্ম গার্ড পরতেও দেখা যায় না। চেতেশ্বর পূজারা বা অজিঙ্ক রাহানের মতো ব্যাটসম্যানদের যা বেশির ভাগ সময়ে পরতে দেখা যায়। ওয়ান্ডারার্সে তৃতীয় টেস্টে বিপজ্জনক পিচে প্রায় সব ব্যাটসম্যান আর্ম গার্ড, চেস্ট প্যাড পরেছিলেন। কোহালি সেখানেও সে সব পরেননি।

তবে পোর্ট এলিজাবেথে মঙ্গলবারের ম্যাচে শুধু কোহালি একা নন, উইকেটের পিছন থেকে সারাক্ষণ হিন্দিতে কথা বলে যান ‘ক্যাপ্টেন কুল’ মহেন্দ্র সিংহ ধোনি-ও। তাঁর কথা অবশ্য দক্ষিণ আফ্রিকান-রা কিছুই বুঝতে পারছিলেন না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বোলারদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছিলেন ধোনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন