গেইলদের দেশে ভারতের প্রাপ্তি কুলদীপ, ফিরল শামিও

শামির সবচেয়ে বড় গুণ ওর লাইন আর লেংথ। সঠিক লাইনে বল করতে পারে। সিমটা সোজাসুজি রাখে। আউটসুইং আর ইনসুইং করতেও ওস্তাদ। ভুবনেশ্বর কুমার আর উমেশ যাদবের মতো পেসাররা ভাল ফর্মে থাকায় সুযোগ পাচ্ছে না শামি।

Advertisement

সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৭ ০৫:৩৭
Share:

সিরিজে শামি এবং কুলদীপ যাদব ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ভারত সিরিজ জিতবে এটাই স্বাভাবিক। অ্যান্টিগায় ভারতের হার দেখে একটু অবাকই হয়েছিলাম। মনে হয়েছিল যেন আত্মতুষ্ট হয়ে পড়েছিল দল। তবে সাবাইনা পার্ক কিন্তু অ্যান্টিগার ভুলগুলো শুধরে দিল।

Advertisement

সেই দাপুটে ভারতকেই দেখলাম। আগ্রাসী অধিনায়ক। আগুনে পেসার। পোক্ত টপ অর্ডার। এ রকম ভারতকেই আমি দেখে এসেছি। সাবাইনা পার্কে বিপক্ষকে কোনও রকম সুযোগ দেয়নি বিরাট কোহালিরা। টস হেরে প্রথমে ফিল্ডিং করলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে মাত্র ২০৫ রানে আটকে দেয় ভারত। কোনও বড় পার্টনারশিপ গড়তে দেয়নি। এমনিতেও এই ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে বড় রান করার মতো ব্যাটসম্যান নেই। তার ওপরে আবার মহম্মদ শামি ফর্মে। আরও একবার প্রমাণ হল শামি ছন্দে থাকলে যে কোনও ব্যাটিং লাইন আপকে সমস্যায় ফেলতে পারে।

শামির সবচেয়ে বড় গুণ ওর লাইন আর লেংথ। সঠিক লাইনে বল করতে পারে। সিমটা সোজাসুজি রাখে। আউটসুইং আর ইনসুইং করতেও ওস্তাদ। ভুবনেশ্বর কুমার আর উমেশ যাদবের মতো পেসাররা ভাল ফর্মে থাকায় সুযোগ পাচ্ছে না শামি। কিন্তু এই সিরিজটায় অন্তত দেখিয়ে দিল দিনের দিনে কতটা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে। শামি ছাড়াও কুলদীপ যাদবও ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে। গোটা সিরিজ দারুণ বল করেছে। ওর বিশেষত্ব ব্যাটসম্যানকে খুব বেশি জায়গা দেয় না শট খেলার। শর্ট বলটাও কম করে।

Advertisement

অ্যান্টিগায় হারার পরে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের সমালোচনার মুখে পড়েতে হয়েছিল। অনেকে বলেছিল ভারতীয় টপ অর্ডার ছন্দ হারিয়েছে। আত্মতুষ্ট হয়ে পড়েছে। কিন্তু জবাবটা চলে এল। মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে ভারত রান তুলে দিল। রান তাড়া করতে গিয়ে আবার সেঞ্চুরি কোহালির।

একটা খুব বিখ্যাত প্রবাদ আছে— ফর্ম সাময়িক কিন্তু প্রতিভা চিরস্থায়ী। বিরাটের ক্ষেত্রে সেটাই প্রযোজ্য। আইপিএলের পর অনেকে বলেছিল কোহালি নাকি আগের মতো ধারাবাহিক নেই। কিন্তু বিরাটের মতো প্রতিভারা ফোরায় না। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ফাইনাল ছাড়া ধারাবাহিক খেলেছে বিরাট। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে পঞ্চম ওয়ান ডে-তেও সেই বিরাটোচিত ব্যাটিং। আগ্রাসী, শৈল্পিক। রান তাড়া করার ক্ষেত্রে আমার মনে হয় বিশ্বের সেরা ব্যাটসম্যান বিরাট। যে আগে থেকেই অঙ্ক কষে নামে কী রকম ভাবে খেলবে। স্কোরবোর্ডে বিপক্ষ যতই তুলুক না কেন। রান রেট বজায় রাখার চাপ যতই থাকুক না কেন। রান তাড়া করার ক্ষেত্রে বিরাটের মতো ঠান্ডা মাথার ব্যাটসম্যান বিরল।

পুল বা হুক থেকে শুরু করে কভার ড্রাইভ। ডিফেন্সিভ শট। প্রতিটা ক্ষেত্রেই দক্ষ বিরাট। সঙ্গে দুর্দান্ত ফুটওয়ার্ক তো আছেই। শেষ ওয়ান ডে-তে বিরাটকে শর্ট বল দিয়ে বিপদে ফেলার চেষ্টা কিন্তু করা হয়েছিল। তবে লাভ হয়নি। ওর শট বাছাইও অনবদ্য। কখন চালিয়ে খেলতে হবে আবার কখন ধরে, বিরাট খুব ভাল করে জানে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে শেষ ম্যাচটায় ১১১ রানের ইনিংসে আবার প্রমাণ হল রান তাড়া করতে ঠিক কতটা ভালবাসে বিরাট।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ থেকে সেরা প্রাপ্তি কিন্তু কুলদীপ যাদব। অশ্বিন, জাডেজার মতো স্পিনারদের মাঝেও সিরিজে কুলদীপের বোলিং নজর কেড়েছে। মহম্মদ শামির ফর্মে ফেরাও ভাল একটা ব্যাপার। কিন্তু সিরিজ জয়ের মধ্যেও আক্ষেপ থেকে গেল ঋষভ পন্থকে না খেলানো নিয়ে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন