ফের ধাক্কা, বিদায়ের মুখে বাংলা

বল হাতে ভয়ঙ্কর কুলদীপ, ব্যাটে বিধ্বংসী রায়না

চেন্নাই সুপার কিংগসের তাঁকে দলে রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্তেও আরও উজ্জীবিত রায়না। সোমবার ইডেনে নেমে যে ইনিংসটা খেললেন, তাতেই বুঝিয়ে দিলেন, তিনি কতটা তৈরি।

Advertisement

রাজীব ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:৪৫
Share:

বাংলাকে হারালেন যে দু’জন। কুলদীপের চার উইকেট। রায়নার ৫৯ বলে ১২৬। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

এক জনের জায়গা ভারতীয় দলে পাকা। তাঁর এখন পিছনের দিকে না তাকিয়ে এগিয়ে যাওয়ার পালা। আর এক জনের জাতীয় দলে ফেরার মরিয়া লড়াই চলছে। দু’জনের রাস্তা ভিন্ন। তবে একটা ব্যাপারে কুলদীপ যাদব ও সুরেশ রায়নার মধ্যে কোনও তফাৎ নেই। ফিটনেস মন্ত্রই এখন তাঁদের এগিয়ে যাওয়ার রসদ। ভারতীয় ক্রিকেটে বিরাট কোহালি আসার পরে দেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে ফিটনেস নিয়ে যে সচেতনতা বেড়েছে, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কুলদীপ, রায়না— দুজনেই জানিয়ে দিলেন, ফিটনেসের শীর্ষে থেকেই ক্রিকেট জীবনে এগিয়ে যেতে চান তাঁরা।

Advertisement

সোমবার উৎসবের শহরে যিনি রানের ফুলঝুরি ছোটালেন তাঁর ব্যাটে, সেই সুরেশ রায়না বললেন, ‘‘গত দু’বছর ধরে ফিটনেস বাড়ানোর জন্য প্রচুর পরিশ্রম করেছি আমি। সঙ্গে অনুশীলনও। সেই পরিশ্রমের ফল পাচ্ছি এখন। এখনকার ক্রিকেটে যে ফিটনেসই আসল ব্যাপার। সেটা উপলব্ধি করেছি আমি।’’

অন্য দিকে ভারতীয় ক্রিকেটের চায়নাম্যান বোলার কুলদীপ যাদব বলছেন, ‘‘ভারতীয় ক্রিকেটে থাকতে গেলে নিজেকে চূড়ান্ত ফিট থাকতেই হবে। আর এখন ভারতীয় দলে এই ফিটনেস সংস্কৃতিটা সাঙ্ঘাতিক। ফিটনেস নিয়ে আগের চেয়ে এখন অনেক বেশি কাজ করি আমরা। দলের বাইরে থাকলেও এই কাজটা করে যেতে হয় আমাদের।’’

Advertisement

৩১ বছর বয়সি রায়না ভারতের হয়ে শেষ মাঠে নেমেছেন গত বছর ফেব্রুয়ারিতে। বেঙ্গালুরুতে সেই টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৪৫ বলে ৬৩ রান করেছিলেন রায়না। তার পরেও অবশ্য তাঁকে ভারতীয় টি-টোয়েন্টি দলে ডাকা হয়নি। জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে ইয়োইয়ো পরীক্ষায় ব্যর্থ হওয়ায় দলে ফেরার রাস্তাটা আরও কঠিন হয়ে ওঠে রায়নার। তাই ফিটনেস নিয়ে আরও কঠিন পরিশ্রম করছেন। পরে অবশ্য ইয়োইয়ো পরীক্ষায় সফল হয়েছেন। বলেন, ‘‘এই টুর্নামেন্টের আগে কোচ আমাকে বলেন, তোমাকে চোট সারিয়ে মাঠে নামতে হবে। দলের দায়িত্বও তোমাকে নিতে হবে। আমার উপরে আমার রাজ্যের দলের ভরসাই তাতিয়ে দেয় আমাকে।’’

তার উপর চেন্নাই সুপার কিংগসের তাঁকে দলে রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্তেও আরও উজ্জীবিত রায়না। সোমবার ইডেনে নেমে যে ইনিংসটা খেললেন, তাতেই বুঝিয়ে দিলেন, তিনি কতটা তৈরি। বলেন, ‘‘গত কয়েক ম্যাচেই রানে ফেরার চেষ্টা করেছি। প্রচুর পরিশ্রম করেছি। অনেক দিন রানে ছিলাম না। যেটা আমাকে খুব কষ্ট দিচ্ছিল। আজকের এই সেঞ্চুরিটা আমাকে সেই জায়গা থেকে বেরিয়ে আসতে সাহায্য করবে। এই সময়ে রানে ফেরাটা আমার পক্ষে ভালই হবে।’’

অন্য দিকে কুলদীপের সামনেই বড় ‘অ্যাসাইনমেন্ট’, দক্ষিণ আফ্রিকায় ওয়ান ডে সিরিজ। তাই চলতি মুস্তাক আলি ট্রফিতে ম্যাচ প্র্যাকটিস সেরে নিচ্ছেন। বললেন, ‘‘যে কোনও ম্যাচই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। আর রাজ্য দলের যখন আমাকে প্রয়োজন, তখন তো খেলতেই হবে। রাজ্য দলে খেলেই তো ভারতীয় ক্রিকেটে উঠে এসেছি। দক্ষিণ আফ্রিকায় যাওয়ার আগে এখানে ভাল ম্যাচ প্র্যাকটিস পাব বলেই এসেছি। ভাল ভাল ক্রিকেটাররা এখানে খেলছে। একটা ভাল ক্রিকেট পরিবেশ রয়েছে এখানে। ভাল ফর্মে আছি। আশা করি এই ফর্মটা দক্ষিণ আফ্রিকাতেও নিশ্চয়ই থাকবে।’’

ইডেন এখন তাঁর ঘরের মাঠ। এই ইডেনেই কয়েক মাস আগে হ্যাটট্রিক করে গিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের এই স্পিনার। সেই ইডেনেই ফিরে আসা নিয়ে বললেন, ‘‘পাঁচ বছর খেলেছি এখানে। হোম গ্রাউন্ড হয়ে গিয়েছে প্রায়। এই মাঠের প্রতিটা অ্যাঙ্গল আমার জানা। উইকেটের কোথায় বল ফেললে ভাল হবে, তাও মুখস্থ। এটা সব সময় আমার লাকি গ্রাউন্ডও। তাই এখানে এলেই একটা আলাদা উত্তেজনা অনুভব করি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন