Sunil gavaskar

মেলবোর্নে সানিকে রাগিয়ে দিয়েছিল লিলিদের কটূক্তি

এত দিনে সেই রহস্য প্রাক্তন অস্ট্রেলীয় পেসার ড্যামিয়েন মার্টিনের কাছে এক সাক্ষাৎকারে ফাঁস করলেন স্বয়ং গাওস্কর।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২১ ০৬:৪০
Share:

বিতর্ক: ১৯৮১ সালে মেলবোর্ন টেস্টে লিলি-গাওস্করের সেই বাগ্‌যুদ্ধের মুহূর্ত।

একাশির মেলবোর্ন টেস্টের সেই দৃশ্যের স্মৃতি আজও টাটকা অনেকের মনে। সুনীল গাওস্করকে এলবিডব্লিউ দিয়েছেন আম্পায়ার। সিদ্ধান্তে অত্যন্ত বিরক্ত তিনি। দেখাচ্ছেন, বল আগে ব্যাটে লেগেছে। সে দিন ক্রিজই ছাড়তে চাননি ভারত অধিনায়ক। তাতে দৌড়ে এসে বোলার ডেনিস লিলি আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন বলটা গাওস্করের প্যাডের ঠিক কোথায় লেগেছিল। ঘটনা এখানেই শেষ হয়নি। মাঠ থেকে বেরিয়ে আসার সময় ক্ষিপ্ত গাওস্কর ডেকে নিলেন সঙ্গী ওপেনার চেতন চৌহানকে। সেটা কার্যত ওয়াকআউটের ঘটনা। পরে অবশ্য ভারতীয় দলের ম্যানেজার চেতনকে মাঠে ফেরত পাঠান। গাওস্করের পরে খেলতে নামেন দিলীপ বেঙ্গসরকর। ক্রিকেটে বিতর্কিত এলবিডব্লিউ-র সিদ্ধান্ত এমন কিছু অভিনব ব্যাপার নয়। তা হলে ঠিক কী হয়েছিল যাতে অভিজ্ঞ গাওস্কর মাঠ ছাড়ার সময় সঙ্গী ব্যাটসম্যানকে পর্যন্ত আর না খেলার জন্য ডেকে নিয়েছিলেন?

Advertisement

এত দিনে সেই রহস্য প্রাক্তন অস্ট্রেলীয় পেসার ড্যামিয়েন মার্টিনের কাছে এক সাক্ষাৎকারে ফাঁস করলেন স্বয়ং গাওস্কর। জানা গেল, প্রকৃত ঘটনা সম্পূর্ণ অন্য। আসল কারণ স্লেজিং। আউটের পরে ক্ষোভ প্রকাশ করে বেরিয়ে যাওয়ার সময় অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটাররা গাওস্করকে বলেন, ‘‘নিপাত যাও।’’ সে কথা শুনে মাথা ঠান্ডা রাখতে পারেননি ভারতের সর্বকালের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান। চৌহানকে ডেকে নিয়ে টেস্টই বয়কট করতে চেয়েছিলেন। ‘‘সে দিন বল কিন্তু আগে আমার ব্যাটেই লেগেছিল। সেটা ফরোয়ার্ড শর্ট লেগের ফিল্ডারও দেখেছিল। ও তাই কিছুই করেনি। নিজের জায়গা থেকেও নড়েনি। অথচ ডেনিস (লিলি) আমাকে বলে গেল, বল আমার প্যাডের কোথায় লেগেছিল। আমি বলতে চেয়েছিলাম, না বল ব্যাটেই আগে লেগেছে। এখন সবাই শুধু জানে বিরক্তিতে চেতনকে নিয়েই আমি মাঠ ছাড়তে চেয়েছিলাম,’’ মার্টিনকে বলেছেন গাওস্কর।

তা হলে কি আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে বিরক্ত হয়ে তিনি সে সব করেননি? জবাব, ‘‘ওটা সবার ভুল ধারণা যে, এলবিডব্লিউয়ের সিদ্ধান্তে ভেঙে পড়েছিলাম। হ্যাঁ এটা ঘটনা, আমার খুব খারাপ লেগেছিল। কিন্তু বেরিয়ে যাওয়ার ব্যাপারটা ওই রকম মাত্রা পায় অন্য কারণে। চেতনের পাশ দিয়ে ক্রিজ ছাড়া সময় অস্ট্রেলীয়রা আমার দিকে বাক্যবাণ ছুড়তে শুরু করে। ওরা আমাকে এমনকি মাঠ থেকে বেরিয়ে যেখানে ইচ্ছে যেতে বলে! এটা শুনেই আমি ফিরে আসি এবং চেতনকে বলি আমার সঙ্গে বেরিয়ে আসতে।’’ এখানেই থামেননি গাওস্কর। আরও বলেছেন, ‘‘মনে হতে পারে মাঠ থেকে বেরিয়ে আসার ভাবনাটা কেন? মনে আছে তার আগের দিনই তিন বার আমাদের মনে হয়েছিল, অ্যালান বর্ডার আউট ছিল। যা দেওয়া হয়নি। সেঞ্চুরি করার পরেও একটা বল ওর প্যাডে লাগলে আম্পায়ার স্কোয়ার লেগ আম্পায়ারের সঙ্গে পরামর্শ করতে চলে যান। তখন সৈয়দ কিরমানি আমাকে বলে, এ বারও আউট না দিলে ও নিজেই মাঠ থেকে বেরিয়ে যাবে। ওকে বলেছিলাম, এটা করা যায় না। তাতে ও বলে ‘না করলে আমার দায়বদ্ধতা নিয়েই প্রশ্ন উঠে যাবে।’ এটাই বেরিয়ে যাওয়ার ভাবনা। পরের দিন যেটা সত্যিই ঘটেছিল।’’

Advertisement

সে বার ভারতীয় দলের ম্যানেজার এই ঘটনার পরে বেরিয়ে এসে চেতনকে মাঠে থাকতে বলেন। শেষ পর্যন্ত ভারতই টেস্ট ৫৯ রানে জেতে। অসাধারণ বোলিং করে কপিল দেব ২৮ রানে পাঁচ উইকেট নেন। অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস শেষ হয়ে যায় ৮৩ রানে। সত্যিই গাওস্কররা বয়কট করলে টেস্ট কিন্তু ভারতের জেতা হত না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন