১৬ বছর পরে কলকাতায় টেনিস-উৎসব প্রত্যাবর্তনের যাবতীয় আয়োজন তৈরি। ছবি: পিটিআই।
সকাল থেকেই সাউথ ক্লাবে তুমুল ব্যস্ততা। ক্লাবের প্রবেশ পথের পাশেই বড় হোর্ডিংয়ে রজার ফেডেরার, রাফায়েল নাদাল, নতুন প্রজন্মের তারকা আলেকজান্ডার জেরেভদের ছবি। একটু এগোতেই দেখা গেল ইটালির বিরুদ্ধে ভারতের ডেভিস কাপ দ্বৈরথের মঞ্চে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে। ১৬ বছর পরে কলকাতায় টেনিস-উৎসব প্রত্যাবর্তনের যাবতীয় আয়োজন তৈরি। কিন্তু সেটা যে এ রকম চমক দিয়ে শুরু হবে, তখনও বোঝা যায়নি।
বোঝা গেল বৃহস্পতিবার ড্র অনুষ্ঠানে। ইটালির তরফে জানানো হয়, বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে তাদের সব চেয়ে এগিয়ে থাকা খেলোয়াড় মার্কো চেখিনাতো (র্যাঙ্কিং ১৯) সিঙ্গলসে নামছেন না। তাঁর জায়গায় ২২ বছর বয়সি মাতেও বারেত্তিনির (সিঙ্গলস র্যাঙ্কিং ৫৩) অভিষেক হবে। আর এক সিঙ্গলস খেলোয়াড় অভিজ্ঞ আন্দ্রেয়া সেপ্পি (সিঙ্গলস র্যাঙ্কিং ৩৭)। চেখিনাতো নামবেন ডাবলসে। তাঁর সঙ্গী ২০১৫ অস্ট্রেলীয় ওপেন ডাবলস চ্যাম্পিয়ন সাইমন বোলেল্লি।
ফলে শুক্রবার প্রথম সিঙ্গলসে সেপ্পির মুখোমুখি হবেন র রামকুমার রমানাথন। দ্বিতীয় সিঙ্গলসে প্রজ্ঞেশ গুণেশ্বরনের লড়াই বারেত্তিনির বিরুদ্ধে। দ্বিতীয় দিন ডাবলসে রোহন বোপান্না-দ্বিবীজের বিরুদ্ধে চেখিনাতোদের টক্কর এবং বাকি দুই সিঙ্গলস ম্যাচ। কিন্তু কেন চেখিনাতোকে সিঙ্গলসে? খোলসা করে বলা হয়নি অতিথিদের তরফে। জয়দীপ মুখোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘আমিও অবাক হয়েছি। হতে পারে বারেত্তিনি ঘাসের কোর্টে যে রকম ছন্দে আছে তার উপর ভরসা রাখছে দল। হয়তো চেখিনাতোকে সিঙ্গলস থেকে সরিয়ে ভারতীয় দলকে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী করাই লক্ষ্য ইটালির।’’
বিপক্ষের এই স্ট্র্যাটেজির জন্য অবশ্য তৈরি ভারতীয় দল। মহেশ ভূপতি বললেন, ‘‘ওরা যে দল ঘোষণা করেছে সে রকমই প্রত্যাশিত ছিল। রামকে প্রথম ম্যাচ খেলতে হচ্ছে, তাতেও কোনও সমস্যা নেই। ’’
আখতার আলি মনে করছেন, প্রথম ম্যাচে সেপ্পির মতো অভিজ্ঞ প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে পড়লেও ঘাসে রামকুমার যে রকম স্বচ্ছন্দ, তাতে তিনি ভারতকে এগিয়ে দিতেই পারেন। আর যদি তা পারেন, তা হলে প্রথমেই চাপে ফেলে দেওয়া যাবে ইটালিকে। পরে সেই চাপ সামলানো সহজ হবে না চেখিনাতোদের পক্ষে। সেপ্পিও স্বীকার করলেন রামকুমার বিপজ্জন, ‘‘ঘাসের কোর্টে খুব ভাল খেলার ক্ষমতা রয়েছে রামকুমারের। নিউপোর্টে ফাইনালে খেলেছে। ওর সার্ভ আর ভলি সামলানো সহজ হবে না।’’
পাঁচ ম্যাচের মধ্যে অন্তত তিনটি জিতে টাই দখল করতে মহেশের মূল ভরসা ডাবলস জুটি এবং প্রজ্ঞেশের ছন্দ। তার সঙ্গে ঐতিহাসিক সাউথ ক্লাবের পয়মন্ত রেকর্ড আছেই। যেখানে ভারত ১০ ম্যাচে জিতেছে আটটি। বহু ঐতিহাসিক জয়ের সাক্ষী এই সাউথ ক্লাব। যার মধ্যে ১৯৮৫ সালে ইটালির বিরুদ্ধে ওয়ার্ল্ড গ্রুপের প্রথম রাউন্ডে জয়ও রয়েছে।
ভারতীয় টেনিসের আঁতুরঘরে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তির খোঁজে থাকবে মহেশের ভারত!