ভয়ডরহীন সেই মেরি, বলছেন কোচ আলি

তৃতীয় বাছাই মেরি ইতিমধ্যেই এই প্রতিযোগিতায় সর্বাধিক অষ্টম পদক নিশ্চিত করে নজির গড়ে ফেলেছেন। সপ্তম সোনা জয়ের লক্ষ্যে ৫১ কেজি বিভাগে মেরির সামনে দাঁড়িয়ে এ বার তুরস্কের ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন বুসেনাজ চাকরু। তিনি দ্বিতীয় বাছাই।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৯ ০৪:১১
Share:

প্রতিজ্ঞ: ইউরোপ সেরার বিরুদ্ধে এ বার দ্বৈরথ মেরি কমের। ফাইল চিত্র

গত বারের মতো এ বারও বিশ্ব বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতের মেয়েদের চারটি পদক নিশ্চিত। চার জন বক্সার বৃহস্পতিবার সেমিফাইনালে পৌঁছে যাওয়ায়। তবে গত বার একটি সোনা একটি রুপো এবং দুটি ব্রোঞ্জ পেয়েছিল ভারত। এ বার সেই রেকর্ড আরও উন্নত করার লক্ষ্যে আজ, শনিবার সেমিফাইনালে রিং-এ নামবেন ভারতের চার বক্সার। যার নেতৃত্বে ছ’বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন মেরি কম।

Advertisement

তৃতীয় বাছাই মেরি ইতিমধ্যেই এই প্রতিযোগিতায় সর্বাধিক অষ্টম পদক নিশ্চিত করে নজির গড়ে ফেলেছেন। সপ্তম সোনা জয়ের লক্ষ্যে ৫১ কেজি বিভাগে মেরির সামনে দাঁড়িয়ে এ বার তুরস্কের ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন বুসেনাজ চাকরু। তিনি দ্বিতীয় বাছাই।

ছ’টি বিশ্বখেতাবের পাশাপাশি মেরি কমের দুরন্ত কেরিয়ারে অলিম্পিক্স ব্রোঞ্জ (২০১২), পাঁচটি এশিয়ান খেতাব, এশিয়ান গেমস ও কমনওয়েলথ গেমসে সোনা ছাড়াও বহু আন্তর্জাতিক খেতাব রয়েছে।

Advertisement

তবে মেরি ছাড়াও শনিবার নজর থাকবে এ বার বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে অভিষেক ঘটানো দুই ভারতীয় মঞ্জু রানি (৪৮ কেজি) যমুনা বোড়ো এবং গত বারের ব্রোঞ্জ পদকজয়ী লভলিনা বরগোহাঁইয়ের উপরেও (৬৯ কোজি)।

‘‘ওরা সবাই দুরন্ত পারফর্ম করেছে। আশা করছি প্রত্যেকেই ফাইনালে উঠতে পারবে,’’ বলেছেন ভারতের জাতীয় বক্সিং কোচ মহম্মদ আলি কামার। যিনি নিজেও কমনওয়েলথ গেমসে ভারতের প্রথম সোনাজয়ী বক্সার।

ফাইনালে উঠতে চার জনের বিরুদ্ধেই কঠিন লড়াই অপেক্ষা করছে। কিন্তু কঠিন চ্যালেঞ্জের সামনেও বিন্দুমাত্র চাপে পড়ার কোনও লক্ষণ নেই চার ভারতীয় বক্সারের। মেরিদের এই ভয়ডরহীন লড়াইটাই সব চেয়ে ইতিবাচক বলে মনে করছেন ভারতের কোচ। ‘‘২০১৮ থেকে আমাদের পারফরম্যান্স এই মঞ্চে খারাপ হয়নি। তাতে আমরা যেমন খুশি, তেমনই কিছুটা হতাশ আরও ভাল করতে পারিনি বলে। চার জনের জায়গায় আমাদের ছ’জন সেমিফাইনালে উঠতে পারত। কিন্তু অল্পের জন্য হেরে গেল দু’জন,’’ বলেছেন আলি কামার।

চার জন সেমিফাইনালে ওঠা বক্সারের মধ্যে নজর কেড়ে নিয়েছেন মঞ্জু রানিও। হরিয়ানার মেয়ে মঞ্জু নিজের রাজ্যের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করতে না পেরে পঞ্জাবের হয়ে জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে নেমে সেরা বক্সার হন। চলতি বছরেই যোগ দেন জাতীয় শিবিরে। তবুও যে ভাবে তিনি এগিয়ে যাচ্ছেন তাঁর প্রশংসা করছেন কোচ। ‘‘অপ্রতিরোধ্য মেজাজে খেলছে মঞ্জু। ওর সামনে যে সুযোগই এসেছে, তার সদ্ব্যবহার করেছে। যার মধ্যে স্ত্রান্দজা স্মৃতি প্রতিযোগিতায় (ইউরোপের অন্যতম পুরনো বক্সিং প্রতিযোগিতা) রুপো জয়ও রয়েছে,’’ বলেন কামার। তাঁর পরবর্তী প্রতিপক্ষ তাইল্যান্ডের চুথামাত রকসাত। পঞ্চম বাছাইকে হারিয়েছেন তিনি কোয়ার্টার ফাইনালে।

অসম রাইফেলসের কর্মী যমুনার উত্থানও কম চমকপ্রদ নয়। তাঁর বক্সার হওয়ার স্বপ্ন সার্থক করতে সব্জি বিক্রেতা মা-কে কম কষ্ট করতে হয়নি। যমুনা নিজেও সময় পেলে মা-কে সাহায্য করতে নেমে পড়েন। বক্সিংয়ের স্বপ্ন আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে মরিয়া যমুনা। সেই লক্ষ্যে তিনি কতটা এগিয়ে যেতে পারেন তার বড় পরীক্ষা এ বার। ২২ বছর বয়সি যমুনার সামনে চ্যালেঞ্জ শীর্ষবাছাই এবং প্রাক্তন এশিয়ান গেমস ব্রোঞ্জ জয়ী চিনা তাইপের হুয়াং সিয়ো ওয়েন-এর।

কঠিন লড়াই অপেক্ষা করছে আর এক সেমিফাইনালিস্ট লভলিনার জন্যও। তাঁকে খেলতে হবে চিনের ইয়াং লু-র বিরুদ্ধে। শীর্ষ বাছাই চেন নিয়েন চিনকে হারিয়ে চমকে দিয়েছেন ইয়াং। এই প্রতিযোগিতায় ভারতের সেরা ফল ২০০৬ সালে। সে বার আটটি পদক জিতেছিল ভারতীয় বক্সাররা। যার মধ্যে সোনা ছিল চারটি, একটি রুপো এবং তিনটি ব্রোঞ্জ। সে বারও চ্যাম্পিয়ন হন মেরি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন