পবন নেগি।
আইপিএল নাইনের নিলামে একটা ব্যাপার দারুণ লাগল। এ বার কিন্তু বড় নামের পিছনে না ছুটে ইউটিলিটি ক্রিকেটার এবং বোলারদের তুলে নিয়েছে টিমগুলো। শনিবারের নিলামের পর তিনটে ক্যাটেগরিতে ফেলা যেতে পারে দলগুলোকে।
সবচেয়ে ব্যালান্সড দল
নিলাম শুরুর আগে অ্যাডভান্টেজ ছিল তিনটে টিমের। নাইট রাইডার্স, মুম্বই ইন্ডিয়ান্স আর রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর। সেট টিম। তাই খুব বেশি ঝাঁপাঝাঁপি না করে টিমের ফাঁকগুলো ভরাট করাটাই ছিল এদের টার্গেট। আরসিবি শেন ওয়াটসনকে তুলেছে। এতে বিরাট ওপেনিং থেকে তিনে ব্যাট করতে পারবে। ডে’ভিলিয়ার্স চারে। যে পজিশনে ওকে সবচেয়ে স্বচ্ছন্দ লাগে। সঙ্গে একটা বোলিং অপশনও বাড়ল আরসিবির। স্টুয়ার্ট বিনি ছ’নম্বরে মানে ব্যাটিং গভীরতা বাড়ল, বোলিংও। নাইট রাইডার্সের ব্যাটিংটা সেট। বোলিংয়ে স্পিনারদের মতো পেসটা জোরদার ছিল না। এ বার তুলে নিল উনাদকাট, জেসন হোল্ডার, জন হেস্টিংসদের। ছবিটা মুম্বইয়ের ক্ষেত্রেও তাই। বাটলার ব্যাটিং আরও মজবুত করছে। টিম সাউদি আসায় মালিঙ্গার একটা কভার হল।
ব্যাটিং জমজমাট
নতুন দুটো টিমে পুণে আর রাজকোটের মধ্যে কে কাকে টপকে যাবে তার উপর নিলামে নজর ছিল। সে দিক থেকে কিছুটা হলেও এগিয়ে রাখব পুণেকে। ব্যাটিং লাইন আপ জমাট। গুজরাতের রায়না, ম্যাকালাম, দীনেশ কার্তিক, ব্র্যাভোদের থেকে পুণের ধোনি, রাহানে, স্টিভ স্মিথ, পিটারসেন, দু’প্লেসি, মিচেল মার্শরা অনেক বেশি বিস্ফোরক। তবে ইশান্ত-আরপি-ইরফান-ঈশ্বর পাণ্ডে নিয়ে পেস বোলিংটা ব্যাটিং লাইন আপের মতো অতটা জমাট নয়। দুই অশ্বিনের জুটিও (এক জন অফ স্পিনার, এক জন লেগ) কিন্তু নতুন।
সাংবাদিকদের মুখোমুখি বিসিসিআইয়ের কর্তারা।
ডার্ক হর্স থেকে অন্যতম ফেভারিট
নিলামের পর সবচেয়ে ঝকঝকে যে টিমটাকে দেখাচ্ছে সেটা সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। খুব বুদ্ধি করে যুবরাজ, দীপক হুডার মতো দু’জন অলরাউন্ডারকে নিয়েছে। ধবন, ওয়ার্নারের ওপেনিং জুটির পর ওদের মিডল অর্ডার আরও শক্তপোক্ত দেখাচ্ছে যুবরাজ আসায়। বোলিংটাও দারুণ। তিন জন বাঁ হাতি পেসার টিমে। বোল্ট-নেহরা-মুস্তাফিজুর। স্পিনার কর্ণ শর্মা। অলরাউন্ডার মোজেস এনরিকে। সব মিলিয়ে ভাল প্যাকেজ।
একটা ব্যাপারে অবশ্য আমি বেশ হতাশ। সেটা নিলামে বাংলার ক্রিকেটারদের অবস্থা দেখে। একটা সময় বাংলা থেকে আট-ন’টা প্লেয়ার খেলত আইপিএলে। ঋদ্ধিমানকে বাদ দিলে সংখ্যাটা কমতে কমতে একে ঠেকেছে। অশোক দিন্দা। পুণে কিনল। মনোজ, প্রঞ্জান, সায়নশেখর, আমির গনি, সুদীপ কেউ নেই। এমন তো নয়, বাংলায় প্রতিভার অভাব রয়েছে। তার পরও কেন আইপিএলে এই অবস্থা সেটা বোঝা যাচ্ছে না। সমস্যাটা কোথায় সেটা খুঁজে বের করাটাই বোধহয় বাংলার ক্রিকেটার এবং টিম ম্যানেজমেন্টের সামনে এই আইপিএল থেকে পাওয়া সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।