রবিন সিংহর জোড়া গোলে জয় ইস্টবেঙ্গলের। -ফাইল চিত্র।
বেঙ্গালুরু এফসি ১ (সিকে বিনিথ)
ইস্টবেঙ্গল ৩ (ওয়েডসন, রবিন সিংহ-২)
ম্যাচ শেষের বাঁশি বাজতেই রিজার্ভ বেঞ্চের দিকে পিছন ফিরে আঙুল দিয়ে নিজের জার্সি নম্বর দেখাচ্ছিলেন মেহতাব হোসেন। তার আগে থেকেই উত্তপ্ত হয়েছিল মাঠের পরিবেশ। রিজার্ভ বেঞ্চ থেকে নাকি বেঙ্গালুরু কোচ রোকা ক্রমশ মেহতাবকে উদ্দেশ্য করে গালিগালাজ করছিলেন। ম্যাচ শেষে জার্সি দেখিয়ে তারই শোধ তুলতে চেয়েছিলেন মেহতাব। তা দেখে আরও তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠেন রোকা। সরাসরি এসে তিনি ধাক্কা দেন মেহতাবকে। শুরু হয়ে যায় হাতাহাতি। এর মধ্যেই জুটে যান দু’দলের ফুটবলার থেকে সাপোর্ট স্টাফরা। ম্যাচের মধ্যেও ধাক্কাধাক্কি চলছিলই। পুরো ব্যাপারটাই ঘটে ম্যাচ কমিশনারের সামনে। এখন তাঁর রিপোর্টের উপরই নির্ভর করবে দুই দলের বিরুদ্ধে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে কী না।
আরও খবর: অশ্বিনকে ফলো করে গিয়েছি, বললেন অস্ট্রেলিয়ার আর এক সফল স্পিনার
জয়ে ফিরল ইস্টবেঙ্গল। জোড়া ড্র ও আইজলে গিয়ে হারের পর দলে বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছিলেন কোচ ট্রেভর জেমস মর্গ্যান। এমন কী দেশের এই মুহূর্তের সেরা স্টপার অর্ণব মণ্ডলকেও দলে রাখেননি তিনি। তা নিয়ে কম জলঘোলা হয়নি। কিন্তু আইজলের বিরুদ্ধে একমাত্র গোল হজমের জন্য দায়ী করা হয়েছে তাঁকেই। যদিও ম্যাচ ফিট না হওয়ার জন্যই অর্ণবকে বাদ দেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছিল। শিলিগুড়ির মাটিতে জোড়া ড্র। প্রথম মোহনবাগানের বিরুদ্ধে পরে শিলং লাজংয়ের বিরুদ্ধে। আর তার পর আইজলের বিরুদ্ধে হার।
মেহতাব হোসেন।
বেঙ্গালুরু এফসি অবশ্য বেশ খানিকটা পিছিয়ে রয়েছে। পর পর ড্র করে আত্মবিশ্বাসটাই হারিয়ে ফেলেছে দু’বারের আই লিগ চ্যাম্পিয়নরা। ইস্টবেঙ্গলের কাছে প্রথম লেগের ম্যাচেও হারতে হয়েছিল সুনীল ছেত্রীদের। ফিরতি লেগেও ঘরের মাঠে হারতে হল বেঙ্গালুরুকে। ম্যাচ শুরুর ২৩ মিনিটে মধ্যেই গোল করে ইস্টবেঙ্গলকে এগিয়ে দেন ওয়েডসন আনসেলেম। তখন থেকেই গরম হচ্ছিল মাঠের পরিবেশ। অল্প বিস্তর উত্যক্ত বাক্য বিনিময় চলছিলই। শেষ বেলায় সেটা বড় আকাড় নিল। আর সবটাই ঘটল ম্যাচ কমিশনারের সামনে।
তার আগেই অবশ্য ম্যাচ জিতে নিয়েছে ইস্টবেঙ্গল। দ্বিতীয়ার্ধ ১-০ গোলে এগিয়ে থেকে শুরু করা ইস্টবেঙ্গলকে শুরুতেই এগিয়ে দিয়েছিল রবিন সিংহ। তার আগেই নিশ্চিত গোলের সুযোগ নষ্ট করেছেন দেশের সেরা স্ট্রাইকার। ৫৪ মিনিটে ২-০ করার পাঁচ মিনিটের মধ্যেই ৩-০ করে যান সেই রবিন সিংহই। তার পরই ঝামেলায় জড়িয়ে হলুদ কার্ড দেখেন সুনীল। বেঙ্গালুরুর হয়ে পরের মিস লেখা হল উদান্ত সিংহর নামে। একাধিক মিস না করলে এই ম্যাচ থেকে অন্তত এক পয়েন্ট নিয়ে শেষ করতে পারত গতবারের চ্যাম্পিয়নরা। ৮৫ মিনিটে অবশ্য সান্তনা পুরস্কার হিসেবে একগোল শোধ করেন সিকে বিনিথ। ততক্ষণে অবশ্য ম্যাচ হেরে বসেছে বেঙ্গালুরু। এর মধ্যেই চোট পেলেন ওয়েডসন। কলকাতায় ফিরে তাঁর এক্স-রে হবে।
১১ম্যাচে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষেই থাকল ইস্টবেঙ্গল। সমান সংখ্যক ম্যাচে এদিন ঘরের মাঠে চেন্নাই সিটি এফসিকে ১-০ গোলে হারিয়ে ২৩ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এল আইজল এফসি। দু’ম্যাচ কম খেলে ২১ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় মোহনবাগান।