এত দিন নিজের ক্রুদ্ধ ব্যাটটা বিপক্ষের উপর নিয়ম করে লেলিয়ে দিতেন।
এ বার অফস্পিনটাও দেবেন! ওটা দিয়ে ভারতীয়দের ভয় দেখাবেন বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে। টিম কোচের সঙ্গে কথা বলে তাঁর মনে হয়েছে, ওই রান আটকানোর পার্ট টাইম স্পিনারের দায়িত্ব আর তাঁর নেই। ভূমিকা বেড়ে অনেক বড়। তিনিই নাকি টিমের মুখ্য স্পিনার এখন!
গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের কথা হচ্ছে।
সেমিফাইনালে উমেশ যাদব-মহম্মদ শামিদের জন্য ঠিক কতটা ‘বেত্রাঘাত’ বরাদ্দ রাখবেন, সে সব নিয়ে বললে আশ্চর্যের কিছু ছিল না। দশটা ওভার তিনি ব্যাট হাতে ক্রিজে থাকা মানে ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার রমরমা, কিন্তু তাই বলে স্পিন বোলিং? যেখানে গোটা ক্রিকেট বিশ্ব জানে ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা স্পিন খেলার ব্যাপারে বরাবরই সুনামধারী।
“কিন্তু আমি বিশ্বকাপে বেশ কয়েকটা উইকেট নিয়েছি। যেটা খুব ভাল ব্যাপার। আমার তো মনে হয় মাইকেল যে কাজটা আমাকে যখন দিচ্ছে, আমি ঠিকঠাক ভাবে করে দিচ্ছি,” বলে দিচ্ছেন ম্যাক্সওয়েল। অস্ট্রেলীয় বোলিং কোচ জন ডেভিডসনের সঙ্গে শনিবার রাতে একপ্রস্ত আলোচনাও হয়েছে ম্যাক্সওয়েলের। কিন্তু ব্যাটিং নয়, স্পিন বোলিং নিয়ে। “ও আমাকে বলল, একদম ঠিকঠাক বল করছ। মানে ব্যাপারটা কোনও ভাবেই আর রান আটকানোয় আটকে নেই। প্রথম সারির স্পিনার যা করে, সেটাই করতে হবে আমাকে।” আর ব্যাটসম্যানকে ভয় পাওয়ানোর মাত্রাটা কতখানি হবে, সেটারও একটা বিশেষণ খুঁজে পেয়েছেন ম্যাক্সওয়েল।
‘সেমি থ্রেটনিং’!
আসলে সিডনি উইকেট নিয়ে এখনও একটা ধোঁয়াশা আছে। ভারত অবশ্যই চাইবে কোয়ার্টার ফাইনালের শ্রীলঙ্কা-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচের পিচ। যেখানে দুই দক্ষিণ আফ্রিকান স্পিনার জেপি দুমিনি আর ইমরান তাহির মিলে সাত উইকেট তুলেছিলেন। অস্ট্রেলিয়া আবার চাইছে দুটোর যে কোনও একটা। হয় দু’ইনিংস মিলিয়ে সাতশো রানের ইনিংস দাও। যে পিচে খেলে গ্রুপ পর্যায়ে শ্রীলঙ্কাকে উড়িয়ে দিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। আর নইলে ইংল্যান্ড বনাম আফগানিস্তান ম্যাচের মতো সিমিং উইকেট দাও। কিন্তু এখনও উইকেটের চরিত্র নিশ্চিত নয়, তাই ম্যাক্সওয়েলকে সম্ভাব্য সেরা স্পিন অস্ত্র ধরে রাখা হচ্ছে। দ্বিতীয় স্পিনারের কাজ করে দিতে পারেন ক্লার্ক আর স্টিভ স্মিথ মিলে।
ম্যাক্সওয়েল অবশ্য অতশত ভাবছেন না। নিজের স্পিন বোলিং ক্ষমতার উপর আস্থা দেখাচ্ছেন। বলছেন, “গত বছর আমিরশাহিতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে খেলার পর বোলিং নিয়ে অনেক খেটেছি। তার পর একটা সময় মনে হতে লাগল, বল হাতে যা করতে চাইছিলাম, অফস্পিনকে যেখানে দেখতে চাইছিলাম, সেটা হচ্ছে। ফাস্ট বোলারের ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে আসার জন্য আমার লম্বা স্ট্রাইড ছিল। প্রচুর খাটতে হয়েছে অ্যাকশন নিয়ে। ছ’সাত বার পাল্টাতে হয়েছে। তবে এখন মনে হচ্ছে আরও উন্নতির দিকে এগোচ্ছি।”
কিংস ইলেভেন পঞ্জাবে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের সঙ্গে একই ড্রেসিংরুমে থাকা বাঙালি অনেকের চেয়েই ম্যাড ম্যাক্সকে একটু বেশি চেনেন। ম্যাক্সওয়েলের বিরুদ্ধে কী করা যেতে পারে, আইপিএল-অভিজ্ঞতা থেকে বললেন ঋদ্ধিমান সাহা।
ব্যাটসম্যান যেমন
পুরোদস্তুর গেমচঞ্জার। যে দিন থাকবে, খেলা একাই পাল্টে দেবে। কেউ চল্লিশ বলে নব্বই তুলে দিলে কী করার থাকতে পারে?
কোথায় শক্তিশালী
অন সাইড। সামনের বলটাও খুব ভাল মারে।
কোথায় সুবিধে
এ রকম ইমপ্যাক্ট প্লেয়ারের পক্ষে রোজ রোজ বিধ্বংসী ইনিংস খেলা সম্ভব হয় না। তিনটে ম্যাচে খেললে এক-আধটা ম্যাচ খারাপ যাবে।
আটকানোর রাস্তা
পেসারদের সামনে ওর একটা প্রবণতা আছে যে, শর্ট করলেই মারবে। তাতে যেমন চার হবে, তেমন আবার চান্সও দেবে। আসলে সব সময় ব্যাটে-বলে কানেক্ট হয় না।
কোন লেংথে বল
শর্ট বলটা বললাম। পেসার এবং স্পিনার দু’জনই ইয়র্ক লেংথে রাখতে থাকলে কাজ হতে পারে। ভাল বল যে কারও কাছেই ভাল বল। এর বাইরে স্লো বোলিংয়ে লাভ হতে পারে। ব্যাটে বল ভাল না এলে সমস্যা হতে পারে।
প্রেশার ট্যাকটিক্স
আইপিএল আর বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল এক নয়। বিশ্বকাপে চাপ অনেক বেশি। তা ছাড়া ভারতের দু’একটা মাঠ ছাড়া বাকিগুলো খুব বড় নয়। অস্ট্রেলিয়ার প্রায় প্রত্যেকটাই বড়। সিডনিও।