গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
বিশ্বজুড়ে ইলেকট্রনিক বর্জ্যের পরিমাণ বেড়েই চলেছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের ২০১৬-র রিপোর্ট অনুযায়ী সারা বিশ্বে ইলেকট্রনিক বর্জ্যের পরিমাণ ছিল সাড়ে ৪ কোটি টন। আর প্রতি বছরে সেই বর্জ্যের পরিমাণ বাড়ছে ৩-৪ শতাংশ করে।অনেক দেশই ই-বর্জ্যকে রিসাইকেল করে বিভিন্ন কাজে লাগাচ্ছে। কিন্তু জাপান এই ই-বর্জ্যকে যে কাজে লাগাচ্ছে তা শুনলে আশ্চর্য হবেন।
২০২০-তে টোকিও অলিম্পিক্স। সোনা, রুপো ও ব্রোঞ্জ মিলিয়ে প্রায় ৫ হাজার পদক দেওয়া হবে প্রতিযোগীদের। আয়োজকরা জানিয়েছেন, পদক তৈরিতে যে পরিমাণ সোনা, রুপো এবং ব্রোঞ্জ লাগবে তার সবটাই আসবে ‘আরবান মাইনিং’-এর মাধ্যমে। অর্থাত্ এ ধরনের ইলেকট্রনিক বর্জ্য থেকে।তাই অলিম্পিক্স আয়োজক দেশ জাপান এই বর্জ্য থেকেই সোনা-রুপো-ব্রোঞ্জ সংগ্রহ করে সেই পদক বানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাই আয়েজকরা জাপানের নাগরিকদের কাছে ইলেকট্রনিক বর্জ্য দান করার আবেদন জানিয়েছেন।
এ বছরের এপ্রিল থেকেই এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। আয়োজকরা এখনও পর্যন্ত ইলেকট্রনিক বর্জ্য থেকে সাড়ে ১৬ কেজি সোনা এবং ১৮০০ কেজি রুপো সংগ্রহ করতে পেরেছেন। টোকিও অলিম্পিক্স অর্গানাইজিং কমিটির মুখপাত্র মাসা তাকায়া জানান, ৫৪.৫ শতাংশ সোনা এবং ৪৩.৯ শতাংশ রুপো এখনও পর্যন্ত সংগ্রহ করেছে আয়োজক কমিটি।
আরও পড়ুন: জানেন কি আপনার পকেটেই রয়েছে সোনার ‘খনি’!
এই অলিম্পিক্সের দু’টি বিশেষত্ব রয়েছে। এক, প্রতিটি পদক তৈরি হবে রিসাইকেলড জিনিস থেকে। দুই, একমাত্র জাপানিরাই ইলেকট্রনিক বর্জ্য দান করতে পারবেন আয়োজক কমিটিকে। এ বছরের জুনের মধ্যেই প্রায় ৪ কোটি ৩২ লক্ষ অচল মোবাইল ফোন সংগ্রহ করেছে জাপান। আয়োজক সূত্রে খবর, ৩৫-৪০টা মোবাইল থেকে এক গ্রাম করে সোনা পাওয়া যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক অলিম্পিক্স কমিটির মতে, অলিম্পিক্সের একটা সোনার পদক তৈরিতে ৬ গ্রাম সোনা লাগে।
এই উদ্যোগ আবার একটা প্রশ্ন তুলে দিয়েছে ইতিমধ্যেই। অলিম্পিক্স আয়োজক কমিটি জানিয়েছে, তারা ইলেকট্রনিক বর্জ্য থেকে শুধু সোনা, রুপো, ব্রোঞ্জ বার করে নেবে।প্রশ্ন উঠছে, পড়ে থাকা বাকি অংশগুলোর তা হলে কী হবে? যদিও এ বিষয়ে কোনও কিছুই জানায়নি জাপান।
আরও পড়ুন: অ্যাডিলেডে ঐতিহাসিক টেস্ট জয় ভারতের, দেখুন কিছু মুহূর্ত
এই প্রথম নয়, এর আগেও রিসাইকেল জিনিস দিয়ে অলিম্পিক্সের পদক তৈরি করা হয়েছে। ২০১৬-র রিও অলিম্পিক্সে রুপোর পদক বানাতে যে পরিমাণ রুপো লেগেছিল তার প্রায় ৩০ শতাংশ অব্যবহৃত আয়না, এক্স-রে প্লেট থেকে। ওই অলিম্পিক্সেইব্রোঞ্জের যে পদক তৈরি হয়েছিল তাতে ব্যবহৃত ৪০ শতাংশ তামা এসেছিল টাঁকশালের বর্জ্য থেকে।