কে টিটকিরি দিয়েছিস বেরিয়ে আয়

হেরে ম্যান সিটি ড্রেসিংরুমে হানা ক্ষিপ্ত মেসির

পুরনো গুরুর চালে শুধু মাতই হলেন না তিনি! মেজাজও হারালেন। তিনি— লিওনেল মেসি।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০১৬ ০৪:১৯
Share:

অচেনা মেসি। তর্ক রেফারির সঙ্গেও। ছবি: রয়টার্স।

পুরনো গুরুর চালে শুধু মাতই হলেন না তিনি! মেজাজও হারালেন।

Advertisement

তিনি— লিওনেল মেসি।

মঙ্গলবার রাতে পেপ গুয়ার্দিওলার ম্যাঞ্চেস্টার সিটির হাতে মেসির বার্সেলোনার ১-৩ হারের পর স্প্যানিশ সংবাদপত্রেরই চাঞ্চল্যকর খবর, খেলার পর ড্রেসিংরুমে ফেরার পথে এতিহাদ স্টেডিয়ামের টানেলে বিপক্ষের জনা কয়েক ফুটবলারের সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন মেসি। তিনি নাকি এতটাই উত্তেজিত ছিলেন যে, জনৈক সিটি ফুটবলারকে ‘স্টুপিড’ পর্যন্ত বলে বসেন। এতেই থামেননি মেসি। একটু পরে সতীর্থ এক বার্সা ফুটবলারকে নিয়ে মহাতারকা রীতিমতো হানা দেন ম্যান সিটি ড্রেসিংরুমে। খুঁজে বার করতে যে, বিপক্ষের কে বা কারা তাঁর সঙ্গে টানেলে অভব্য আচরণ করেছেন! হাবভাবে যেন বলতে চাওয়া— কে টিটকিরি দিয়েছিস, বেরিয়ে আয়!

Advertisement

যদিও আর্জেন্তিনীয় রাজপুত্রের ভাবমূর্তি রক্ষায় ইতিমধ্যে নেমে পড়েছেন বিপক্ষ দলে তাঁর দেশোয়ালি ফুটবলার। ম্যাচে সিটির সেরা প্লেয়ার আর্জেন্তিনার সের্জিও আগেরো দাবি করেছেন, ঘটনা যতটা ঘটেছে বলে খবরে বেরিয়েছে, ততটা নাকি আদৌ নয়। যদিও মি়ডিয়ার খবর অনুযায়ী, আগেরো এমনকী উত্তেজিত মেসি যখন সিটি ড্রেসিংরুমে হানা দেন, তিনিই তখন তাঁর দেশোয়ালি মহাতারকাকে শান্ত করেন। নিজে সিটি ফুটবলার হওয়া সত্ত্বেও সেই সময় আগেরোই সবার আগে এগিয়ে এসে দু’তরফের মাঝে দাঁড়িয়ে মধ্যস্থতার প্রাণপণ চেষ্টা করেছেন।

কিন্তু এটাই এই মহাম্যাচ-উত্তর মেসি-কাণ্ডের সবটা নয়। আরও আছে। ওই স্প্যানিশ সংবাদপত্রের খবর অনুযায়ী, মেসির অত রাগের কারণ শুধু খেলার স্কোরলাইন-ই নয়। আরও একটা কারণে মেসি রেগে ছিলেন। মঙ্গলবার রাতের ম্যাচ শেষে উয়েফার ‘র‌্যান্ডম’ ডোপ পরীক্ষায় মেসিরই ডাক পড়েছিল। ফুটবলের ঈশ্বরের তার পরেই নাকি মেজাজ আরও বিগড়ে যায়। যদিও ম্যাচে মেসিকে এক বারও বিপক্ষের কোনও ফুটবলারের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি করতে দেখা যায়নি। তবে ওই কাগজের রিপোর্টে এ-ও বলা হয়েছে যে, টানেলের ভেতর ম্যান সিটিরই এক ফুটবলার প্রথমে মেসিকে প্ররোচিত করেন টিটকিরি দিয়ে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ম্যান সিটি ফুটবলারকে উদ্ধৃত করে লেখা হয়েছে, ম্যাচ শেষে টানেলের ভেতর দিয়ে ড্রেসিংরুমে যাওয়ার পথে মেসিকে রীতিমতো অপমান করেন বিপক্ষের কয়েক জন প্লেয়ার।

গোল করে ম্যান সিটির উৎসব। ছবি: এএফপি।

আগেরোকে পরে সাংবাদিকেরা জিজ্ঞেস করেন, গোটা ঘটনায় মেসির সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন কি? আগেরো বলেন, ‘‘না, না। আমাদের ড্রেসিংরুমে একজন আমাকে পরে জানায়। আসলে আমি অনেক পরে ড্রেসিংরুমে ঢুকেছিলাম। টানেল দিয়ে আসার সময় কিছুর একটা আওয়াজ পেয়েছিলাম। দেখেছিলাম লিও একটু যেন রেগে আছে। কিন্তু ওকে অনেক পরে জিজ্ঞেস করায় ও বলল, না তো, তেমন কিছু হয়নি! তাই আমারও মনে হয়, আসলে তেমন কিছু ঘটেনি। বরং মেসিকে ম্যাচের ডোপ পরীক্ষায় ডেকে নিয়ে যাওয়াটা আমার কাছে নতুন। আমার মনে হয়, তাতেই ও বেশি রেগে গিয়েছিল। তবে একটু পরেই দেখলাম শান্ত হয়ে গিয়েছে।’’ ডোপ পরীক্ষার জেরে মেসি বার্সেলোনার টিমবাসও ‘মিস’ করেন। ম্যাঞ্চেস্টার বিমানবন্দরে পরে একা পৌঁছন স্পেনে ফেরার উড়ান ধরতে।

আগেরো নিজেও বিতর্কের থেকে রেহাই পাননি। বার্সা প্লেয়ারদের অভিযোগ, গুন্দোগানের দ্বিতীয় গোলটার (ম্যান সিটির তৃতীয়) ফাইনাল পাস স্কোরারের দিকে হাত দিয়ে পাঠিয়েছেন আগেরো। পরে আগেরো ‘‘হ্যাঁ, বলটা আমার হাতে লেগেছিল। তবে আমি বলে হাত লাগাইনি। আমার শেষ সেকেন্ড পর্যন্ত চেষ্টা ছিল বলটা বুকে রিসিভ করে ফাইনাল পাস বাড়ানোর,’’ বলে আরও বিতর্ক বাড়িয়ে বসেন। ম্যান সিটি কোচ গুয়ার্দিওলা অবশ্য বলে দিয়েছেন, ‘‘গুন্দোগানের গোল দু’টোই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট।’’ আর বার্সা কোচ লুইস এনরিকের দাবি, ‘‘আমরা হারলেও ডুবে যাই না।’’

যদিও বার্সেলোনা রাজপুত্রের মঙ্গলবার রাতের কাণ্ড বোধহয় অন্য কথা বলছে!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন