দেশের জার্সিতেও আয়রনম্যান হয়ে ওঠার চ্যালেঞ্জ মেসির

স্মরণীয় ক্রিকেট কেরিয়ারের শেষে অবসর নিয়েছেন সচিন তেন্ডুলকর। স্যর অ্যালেক্স ফার্গুসনের ২৭ বছরের সাম্রাজ্য শেষ হয়েছে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডে। জিনেদিন জিদান কোচ হয়ে এসে জিতেছেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগ।

Advertisement

সোহম দে

শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৬ ০৩:৪৮
Share:

গত বার ফাইনালে উঠেও পারেননি। এ বার পারবেন আর্জেন্তিনাকে কোপা চ্যাম্পিয়ন করতে?

স্মরণীয় ক্রিকেট কেরিয়ারের শেষে অবসর নিয়েছেন সচিন তেন্ডুলকর। স্যর অ্যালেক্স ফার্গুসনের ২৭ বছরের সাম্রাজ্য শেষ হয়েছে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডে। জিনেদিন জিদান কোচ হয়ে এসে জিতেছেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। লেস্টার সিটি নিচু ডিভিশন থেকে উঠে এসে প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। জোসে মোরিনহো দু’বার চেলসি থেকে বরখাস্ত হয়েছেন।

Advertisement

সবই হয়েছে, কিন্তু আর্জেন্তিনার ট্রফি জেতা হয়নি। শেষ বড় ট্রফি এসেছিল সেই ১৯৯৩-এ। কোপা আমেরিকা। তার পর থেকে উপরের ঘটনাগুলো ঘটে গিয়েছে, কিন্তু আর কোনও বড় ট্রফি তুলতে পারেনি আর্জেন্তিনা। কত তারকা এসেছে, গিয়েছে। লিওনেল মেসির মতো বিস্ময় প্রতিভা পর্যন্ত তিনটে বিশ্বকাপ আর তিনটে কোপা খেলেছেন। কিন্তু ক্লাবের জার্সিতে তিনি আয়রন ম্যান হলেও দেশের হয়ে যেন উইলিয়াম শেক্সপিয়রের রোমিও। যাঁকে দেশের জার্সিতে ট্র্যাজিক নায়ক হয়েই থেকে যেতে হয়েছে।

আর এক দিন বাদেই শুরু শতবর্ষের কোপা আমেরিকা। ফের আর্জেন্তিনার এই ‘রোমিও’র কাছে ট্রফি জেতার সুযোগ। আর এ বার আর্জেন্তিনার হাতে ট্রফি উঠলে কেউ অবাকও হবে না। কারণ কোপার সেরা দল মেসিদেরই। দীর্ঘ ক্লাব মরসুমের পরে সবাই হাঁফিয়ে উঠলেও আর্জেন্তাইন ফেডারেশনের কাছে এটা ট্রফি খরা কাটানোর সুযোগ। মেসি ছাড়া সের্জিও আগেরো, গঞ্জালো ইগুয়াইন, অ্যাঞ্জেল দি’মারিয়া— কে নেই। কিন্তু ফুটবল তো আর খাতাকলমে খেলা হয় না। হয় মাঠে। আর তাতেই সাম্প্রতিক ইতিহাস বলছে আর্জেন্তিনা ‘চোকার্স’ হয়ে উঠেছে। কয়েকটা ছবি হয় না যার ট্রেলার দেখে মনে হবে এই ছবি ইতিহাস পাল্টে দেবে, কিন্তু রিলিজ করার পরে বোঝা যায় ডাহা ফ্লপ। সে রকম অবস্থা আর্জেন্তিনার। দুর্দান্ত দল নিয়ে প্রতিটা টুর্নামেন্টে যাচ্ছে, কিন্তু শেষমেশ কিছুই করতে পারছে না।

Advertisement

সবিস্তারে দেখতে ক্লিক করুন

মেসি অবশ্য বলে দিয়েছেন, ‘‘আমরা যোগ্য কোপা জেতার।’’ কিন্তু প্রথম ম্যাচেই তো সামনে চিলি। হ্যাঁ, সেই চিলি যারা প্রায় এক বছর আগে মেসির যন্ত্রণা আরও বাড়িয়ে দিয়েছিল। ফাইনালে টাইব্রেকারে জিতে আর্জেন্তিনার জঘন্য ট্রফি খরা কাটতে দেয়নি। এ বারও চিলি খারাপ দল নয়। বরং আগের থেকে আর্তুরো ভিদাল অনেক ভাল ফর্মে। সঙ্গে অ্যালেক্সিস সাঞ্চেজও গোল চেনেন। কিন্তু চিলির সবচেয়ে বড় সমস্যা ডাগআউটে। জর্জ সাম্পাওলির মতো কড়া হেডমাস্টার আর নেই। চিলি ছাড়া অবশ্য আর্জেন্তিনার অত বেশি সমস্যা হওয়া উচিত নয়। বলিভিয়া আর পানামাকে নাম কা ওয়াস্তা প্রতিদ্বন্দ্বী বলে আদৌ বাড়াবাড়ি হবে না।

এই তো গেল আর্জেন্তিনা। এ বার আসা যাক ব্রাজিলে। যারা আগেভাগেই সাদা পতাকা উঠিয়ে দিয়েছে। বুঝিয়ে দিয়েছে আর্জেন্তিনা, উরুগুয়ে যতই দারুণ দল পাঠাক না কেন, ব্রাজিলের কোনও ইচ্ছা নেই চ্যালেঞ্জার হয়ে ওঠার। অন্তত তাদের দল দেখে তো তাই মনে হয়। ব্রাজিলের কাছে এখন আসল লক্ষ্য রিও অলিম্পিক্সে ঘরের মাঠে সোনার পদক জেতা। এই কারণেই নেইমারকে কোপায় না রেখে রাখা হয়েছে অলিম্পিক্স দলে। অলিম্পিক্স পদকের মোহে ওয়ান্ডারকিডের কোপা স্বপ্ন শেষ।

দাভিদ লুইজ বিশ্বমানের ডিফেন্ডার না হতে পারেন। কিন্তু ব্রাজিলের ব্যাকলাইনে তিনি নিয়মিত মুখ। তাকেও দুঙ্গা বাড়িতে রেখে আসছেন। ২০০৭ কোপাতেও তরুণ ফুটবলারদের নিয়ে দল সাজায় ব্রাজিল। সেই সময় মরসুমের সেরা প্লেয়ার কাকা আর রোনাল্ডিনহো দলে ছিলেন না। তাতেও অবশ্য ব্রাজিল ট্রফি জিতে বেরিয়ে যায়। কিন্তু তখন তো একজন রবিনহো ছিলেন। আর দলের বেশিরভাগ ফুটবলার অন্তত ইউরোপে খেলত। এখন তো অবশ্য ব্রাজিলীয়রা চিনে খেলেন। আর তাঁরা সুযোগও পান কোপায়। ভাল কয়েকজন তারকা তো চোট নিয়েও বেরিয়ে গিয়েছে। আর পরিবর্তে আনা হয়েছে কাকা-কে। যাঁকে শেষ কবে ব্রাজিল জার্সিতে দেখা গিয়েছিল, মনে করা কঠিন। কিন্তু ব্রাজিলের যা গ্রুপ তাতে অনায়াসে টপকে যাওয়া উচিত। কিন্তু তার পর? এই ব্রাজিল দলের উপর বাজি ধরবে কে?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন