অস্ট্রেলিয়ার জার্সি খুলে রেখেছেন এক বছরেরও বেশি। বিতর্ক আর মাইকেল ক্লার্কের সম্পর্ক কিন্তু এখনও অটুট।
ব্যাগি গ্রিনের পুরনো বিতর্ক ফের প্রকাশ্যে নিয়ে এসেছেন ক্লার্ক। এবং সেই বিতর্কে টেনে এনেছেন শেন ওয়াটসনকে। প্রাক্তন অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক বলে দিয়েছেন, ওয়াটসন ছিলেন সেই সমষ্টির সদস্য, তাঁর টিমে যারা ছিল টিউমারের মতো বিষাক্ত।
ঘটনাটা আবার ভারত সফর ঘিরে। ২০১৩ সালে যে অস্ট্রেলীয় দল ভারতে টেস্ট সিরিজ খেলতে এসেছিল, সেই টিমের সহ-অধিনায়ক ছিলেন ওয়াটসন। মোহালিতে তৃতীয় টেস্টের আগে নজিরবিহীন পদক্ষেপ করে ওয়াটসন-সহ চার ক্রিকেটারকে দেশে পাঠিয়ে দেন ক্লার্ক এবং তৎকালীন কোচ মিকি আর্থার।
‘হোমওয়ার্ক বিতর্ক’ হিসেবে কুখ্যাত সেই ঘটনার রেশ অনেক দূর গড়ায়। সেই সিরিজ ০-৪ হারের পর আর্থারকে সরিয়ে দেয় ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। আর্থারও বোর্ডের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেন। যে সূত্রে আর্থার বলেন, শেন ওয়াটসনকে টিমের ‘ক্যানসার’ বলেছিলেন ক্লার্ক।
ঘটনার তিন বছর পর সেই প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন ক্লার্ক। একটা বিতর্ক এড়াতে গিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছেন নতুন বিতর্কের আগুন। শেন ওয়াটসনকে কি তিনি সত্যি সত্যিই দলের ‘ক্যানসার’ বলেছিলেন? একটি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ক্লার্ক বলেছেন, ‘‘না, আমি সেটা বলিনি। আমি বলেছিলাম যে, ওই টিমে প্লেয়ারদের একটা সমষ্টি আছে যারা টিউমারের মতো। আর আমরা যদি সেটাকে না সারাই, তা হলে সেটা ক্যানসারে পরিণত হবে।’’ ওয়াটসন কি সেই সমষ্টির সদস্য ছিলেন? ‘‘হ্যাঁ, ওদের একজন ছিল শেন।’’
ঘটনা হল, এ দিনই প্রকাশিত হয়েছে মাইকেল ক্লার্কের আত্মজীবনী। যার প্রচারের জন্য বিভিন্ন চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন প্রাক্তন অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক। হাঁটছেন স্মৃতির সরণিতে। ২০০৯-এ দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট জয়ের পরে সাইমন কাটিচের সঙ্গে ড্রেসিংরুমের ঝামেলা এমনই একটা স্মৃতি। টিম সং কখন গাওয়া হবে, সেই নিয়ে মতবিরোধে তৎকালীন সহ-অধিনায়ক কাটিচের গলা টিপে ধরেছিলেন ক্লার্ক।
সেই ঝামেলার জেরে সিনিয়রদের সঙ্গে যে তাঁর সম্পর্ক অনেকটা শীতল হয়ে গিয়েছিল, মেনে নিয়েছেন ক্লার্ক। বলেছেন, ‘‘আমরা সবাই তখন প্রচণ্ড উত্তেজিত ছিলাম। আমার মেজাজ গরম হয়ে যাওয়ার যথেষ্ট কারণ ছিল। তবে কাটিচের সঙ্গে যে ভাষায় কথা বলেছিলাম, সেটা উচিত হয়নি।’’ সেই টেস্টের পর অবসর নিয়েছিলেন ম্যাথু হেডেন। নিজের শেষ টেস্টে এ রকম বিতর্ক পছন্দ হয়নি তাঁরও।
শুধু কাটিচ বা হেডেন নয়, ক্লার্কের ভাবমূর্তি অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটমহলের একটা বড় অংশের কাছেই খুব একটা সুখকর নয়। ক্লার্ক মনে করেন, তাঁকে রিকি পন্টিংয়ের সহ-অধিনায়ক করার পরেই বেশির ভাগ সমস্যার সূত্রপাত। ‘‘মনে হয় না আমি খুব ভাল ভাইস ক্যাপ্টেন ছিলাম। সবাই ভেবে নিয়েছিল আমিই এর পর অধিনায়ক হব। সেটা মাথায় ঘুরত,’’ বলে ক্লার্ক আরও যোগ করেছেন, ‘‘মিডিয়া বা সাধারণ মানুষ কেন আমাকে পছন্দ করত না, তার কারণ বুঝতে পারতাম না বলে খুব রাগ হত। খুব কষ্টে ও সব সামলেছিলাম।’’
এক প্রাক্তন অধিনায়ক যখন অতীতে পড়ে আছেন, আর এক প্রাক্তন অধিনায়কের ভাবনায় ভবিষ্যৎ। জাতীয় নির্বাচক হওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন স্টিভ ওয়। এই মরসুমের শেষে সরে দাঁড়াবেন প্রধান নির্বাচক রড মার্শ। স্টিভের ভাই মার্ক ওয় ২০১৪ থেকে জাতীয় নির্বাচক। এ বার সেই ভূমিকায় আসতে ইচ্ছুক স্টিভও। তিনি বলেছেন, ‘‘সুযোগটা এলে আমি অবশ্যই ভেবে দেখব। এখনও পর্যন্ত কেউ আমাকে কিছু বলেনি। তবে বললে আমি শুনব।’’