জয়ের প্রধান স্থপতি কেদার যাদব।বলকে কথা বলাচ্ছেন। দুই উইকেট মহম্মদ শামির। এএফপি, গেটি ইমেজেস।
রাজীব গাঁধী আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে প্রথম ওয়ান ডে ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে ছয় উইকেটে হারিয়ে বিশ্বকাপের প্রথম দলে নিজেদের দাবি জোরাল করল ভারতের দুই ক্রিকেটার। আর এক জন কিন্তু থেকে গেল বিশ্বকাপের দলের ওয়েটিং লিস্টেই।
আমার মতে, ভারতের জয়ের নায়ক মহম্মদ শামি (১০ ওভারে ৪৪ রানে দুই উইকেট ও জোড়া মেডেন) ও কেদার যাদব (৮৭ বলে ৮১ রান) প্রথম একাদশে নিজেদের অবস্থান ক্রমশ জোরাল করছে। আর ওয়েটিং লিস্টে থেকে যাওয়া ক্রিকেটার অবশ্যই অম্বাতি রায়ডু। বিশ্বকাপ দলে থাকতে গেলে কিন্তু রায়ডুকে বাকি চার ম্যাচের তিনটিতেই বড় রান করতে হবে।
সকাল দেখেই যেমন বোঝা যায়, দিনটা কেমন যাবে, তেমনই এ দিন শামির অনবদ্য বোলিং দেখেই মনে হয়েছিল, দিনটা আজ ভারতের। শেষ পর্যন্ত তাই হয়েছে। প্রথম ওভারেই মেডেন দিয়ে দুর্দান্ত শুরু করেছিল শামি। ওর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বল করল কুলদীপ যাদবও (২-৪৬)। এ ক্ষেত্রে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টের প্রশংসা করতে হবে শামি ও কুলদীপকে বুদ্ধি করে ‘রোটেশনে’ ব্যবহার করায়। দু’জনের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সামনে বড় রান করতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া।
শামির বলের বিশেষত্ব হল, বল ছাড়ার সময় সিম-পজিশন একদম সোজা থাকে। হাতের কব্জিও ঠিক জায়গায় রাখে ও। নতুন যে বিষয়টি রপ্ত করেছে, তা হল মাঝে মাঝে চমকে দেওয়ার মতো কিছু বাউন্সার (সারপ্রাইজ বাউন্সার) দিচ্ছে। এই বিষয়টায় ক্রমে ক্ষুরধার হচ্ছে শামি। এ ছাড়াও শনিবার উইকেট টু উইকেট বল করে গিয়েছে ও। শামিকে খেলতে গিয়ে বিভ্রান্ত হয়েই অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানরা উইকেট দিয়েছে ভারতের বাকি বোলারদের।
গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে (৪০) যে বলে শামি বোল্ড করল, সেই বলটা দিনের সেরা। সাদা বল পুরনো হয়ে গেলে এমনিতে সুইং করতে চায় না। সেখানে শামিকে দেখলাম এই অস্ট্রেলিয়া দলের ফর্মে থাকা ব্যাটসম্যান ম্যাক্সওয়েলকে বোকা বানিয়ে আউট করতে। অফ স্টাম্পে বলটা ফেলে লেগ মিডে ছোট ইনসুইং করেছিল শামি। ‘অন দ্য রাইজ’ খেলতে গিয়ে বোল্ড হয় ম্যাক্সওয়েল। এই অস্ট্রেলিয়ার বোলিং যতটা সমীহ করার মতো, ততটা পোক্ত নয় ওদের ব্যাটিং। উসমান খোয়াজা ৫০ রান করলেও ওকে আত্মবিশ্বাসী লাগেনি।
ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের মধ্যে শিখর ধওয়নকে (০) দেখে আমার মনে হল নেথান কুল্টার-নাইলের বলে লেট মুভটা ও বুঝতে পারেনি আউট হওয়ার সময়। চার রানে এক উইকেট চলে যাওয়ার পরে বিরাট কোহালি (৪৪) ও রোহিত শর্মা (৩৭) দুরন্ত ভাবে ধরে নিয়েছিল খেলাটা। শামির দিনের সেরা বলের মতোই সেরা শট এসেছে কোহালির ব্যাট থেকে। প্যাট কামিন্সকে একটা দুর্দান্ত হুক করেছিল কোহালি। ডান পায়ে দ্রুত পিছনের পায়ে চলে গিয়ে বলটা ঠিক ব্যাটে নিতে পেরেছিল চোখ সরেনি বলেই।
ব্যাট হাতে ভারতের জয়ের দুই নায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনি (৭২ বলে ৫৯ রান) ও কেদার যাদব। দু’জনের ১৪৯ বলে ১৪১ রানের জুটিটাই ম্যাচ এনে দেয় ভারতের দিকে। কেদার যখন ব্যাট করতে এসেছিল, তখন ভারত ৯৯-৪। কিন্তু ওই অবস্থাতেও মনে হয়নি ও চাপে আছে। ঠান্ডা মাথায় ধোনির সঙ্গে সিঙ্গলস নিয়ে ও খেলাটাকে ছোট করে আনে।