জোড়া গোলদাতা বাবুনকে অভিনন্দন ডিকার। নিজস্ব চিত্র
গত আই লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা তিনি। এ বার মহমেডান জার্সিতে কলকাতা লিগে নেমে রবিবার কল্যাণীতে জোড়া গোল করলেন সেই দিপান্ডা ডিকা। ম্যাচ হেরে সেই ডিকারই আফসোস, ‘‘গোল করেও তো হেরোদের দলেই থেকে গেলাম।’’
ডিকা যখন এ কথা বলছেন, তখনই পাঠচক্র কর্তা নবাব ভট্টাচার্যের কাছে পাঁশকুড়া থেকে এল ফোনটা। জনৈক ফুটবলপ্রেমী ৬০০ টাকা করে পুরস্কার দিতে চান প্রত্যেককে!
আসলে কল্যাণীতে এ দিন ডিকা বরণের মঞ্চ হাইজ্যাক করেছিল পাঠচক্রের বঙ্গব্রিগেড। ব্যান্ডেলের মনোতোষ চাকলাদার, নৈহাটির বাবুন দাস, সোদপুরের বুঁধিরাম টুডু-রা ।
বড় দলের প্রাক্তনী বুঁধিরাম এ দিন পাঠচক্র মাঝমাঠ যেন রিমোটে পরিচালনা করছিলেন। তাঁর গতির কাছেই হেরে গেল মহমেডান। আর এক নায়ক মনোতোষ গত বছরও মহমেডান এবং ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে কলকাতা লিগে গোল করেছিলেন। এ দিনও দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে দর্শনীয় হেডে দলকে ২-০ এগিয়ে দিয়েছিলেন। জিতে তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘এ রকম গোল করতে থাকলে একদিন চাকরি পাবই।’’
২-০ এগিয়ে গিয়ে রক্ষণাত্মক হতে গিয়েছিল পার্থ সেনের দল। এই সুযোগেই ২-২ করা মহমেডানের। কিন্তু এর পরেই নাটকীয় জোড়া গোল করে যিনি পাঠচক্রের জয় আনলেন সেই বাবুন দাসের জীবনকাহিনি অনুপ্রেরণা জোগায়। পাঁচ জনের সংসারে তিনিই এক মাত্র রোজগেরে। ১৪ মাস মাঠের বাইরে ছিলেন পিঠের চোটে। ডাক্তার সন্দেহ করেছিল ক্যানসার। কিন্তু পরে জানা যায় তা ক্যানসার নয়। প্রত্যাবর্তনেই বড় দলের বিরুদ্ধে জোড়া গোল করে সাড়া ফেললেন নৈহাটির ছেলে। শুরুতে মহমেডানের প্রণীত বল ক্লিয়ার করতে ভুল করায় জোয়েল সানডে-র গোলে এগিয়ে গিয়েছিল পাঠচক্র। মহমেডান দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচে ফিরেও জিতে ফিরতে পারল না নিজেদের বেহাল রক্ষণ ও সুযোগ নষ্টের ভুলে। বরং পাঠচক্রের হয়ে প্রথম ম্যাচেই নজর কাড়লেন তাঁদের জিম্বাবোয়ের ডিফেন্ডার ভিক্টর কামহুক।
মহমেডান কোচ বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বলছেন, ‘‘তিনটে গোল আমরাই উপহার দিয়েছি। তবে ছেলেরা পরের ম্যাচেই ছন্দে ফিরবে।’’
মহমেডান: শঙ্কর রায়, প্রণীত লামা (অঙ্কিত মুখোপাধ্যায়), সোমতোচুকু রিচার্ড, রানা ঘরামি, অমিত চক্রবর্তী, দীপেন্দু দোয়ারি, শেখ ফৈয়াজ, তীর্থঙ্কর সরকার (মুমতাজ আখতার), প্রহ্লাদ রায় (ইফাম তারিক), দিপান্ডা ডিকা, জিতেন মুর্মু।