সনিকে নামিয়েও মুম্বই জয় হল না মোহনবাগানের

চব্বিশ ঘণ্টা আগেও আই লিগে তাঁর ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় তৈরি হয়ে গিয়েছিল হাঁটুর চোটের জন্য। শল্য চিকিৎসক জানিয়ে দিয়েছিলেন, ফের চোট পেলেই অস্ত্রোপচার করতে হতে পারে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৩:২১
Share:

চোট-আতঙ্ক কাটিয়ে নব্বই মিনিটই মাঠে সনি ।

মোহনবাগান-০ : মুম্বই এফসি-০

Advertisement

চব্বিশ ঘণ্টা আগেও আই লিগে তাঁর ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় তৈরি হয়ে গিয়েছিল হাঁটুর চোটের জন্য। শল্য চিকিৎসক জানিয়ে দিয়েছিলেন, ফের চোট পেলেই অস্ত্রোপচার করতে হতে পারে।

তিনি— সনি নর্দে সব জল্পনা উড়িয়ে মুম্বই এফসির বিরুদ্ধে বুধবার খেললেন পুরো নব্বই মিনিটই। সবুজ-মেরুন শিবিরে সনি নিয়ে শেষ পর্যন্ত স্বস্তি ফিরে এলেও মুম্বই থেকে তিন পয়েন্ট আনার স্বপ্ন সেই অধরাই থেকে গেল।

Advertisement

বুধবার সকালেই এমআরআই হয় সনির। মোহনবাগান কোচ সঞ্জয় সেন বলছেন, ‘‘ডাক্তার এমআরআইতে ভয়ের কিছু পাননি।’’ সনি নিজেও ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছিলেন, ‘‘খেলতে বাধা নেই। কিন্তু ব্যথা হলে অস্ত্রোপচার করতে হবে।’’ এ রকম পরিস্থিতিতেও সনিকে পুরো সময় কেন মাঠে রাখলেন সঞ্জয় সেটাই প্রশ্ন ম্যাচ শেষে। এমনিতেই কুপারেজের মাঠ কৃত্রিম ঘাসের। যা চোট-পাওয়া ফুটবলারদের আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। টিভিতে ম্যাচ দেখে বোঝাই গেল, সনিও দু’একবার তাঁর পুরনো ঝলক ছাড়া খুব বেশি কিছু করতে পারেননি। না বাড়ালেন ঠিকানা লেখা থ্রু না বাড়ালেন ক্রস। পা থেকে বল বেরিয়ে গেলে বল তাড়া করার বদলে ধাক্কাধাক্কি দেখলেই দূরে সরে গেলেন। ফলে সনি নিয়ে বিশেষ মাথা ঘামাতে হয়নি মুম্বইয়ের আফগান স্টপার জেলালুদ্দিনকে। যদিও এরই মাঝে ম্যাচের শুরুতে একটা জোরালো শট নিয়েছিলেন। যা বাঁচান কাট্টিমণি। চোটে কাবু সনিকে নব্বই মিনিট মাঠে রাখলেও মোহনবাগান কোচ বলবন্ত, জেজেকে শুরুতে রিজার্ভ বেঞ্চে রাখলেন কেন, তা নিয়েও কিন্তু প্রশ্ন উঠতে পারে।

গত ছাব্বিশ মাসে মোহনবাগান কোচ হিসেবে সঞ্জয় সেনের ঝুলিতে আই লিগ, ফেড কাপের মতো ট্রফি থাকতে পারে। কিন্তু মুম্বইতে গেলেই তাঁর রথের চাকা বসে যায় কেন তা রহস্যই থেকে গেল।

দু’বছর আগে আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার বছরেও মুম্বইয়ের বাঙালি গোলকিপার সঞ্জীবন ঘোষ আটকে দিয়েছিলেন সনি-কাতসুমিদের। গত বছরও মুম্বই থেকে জিতে ফিরতে পারেননি সঞ্জয়। আর এ বারও দ্বিতীয়ার্ধে শেষের কুড়ি মিনিট কাতসুমি, জেজেরা গোলের সুযোগ তৈরি করলেন প্রচুর। কিন্তু মোহনবাগানের সব আক্রমণই নিষ্ক্রিয় করে দিল মুম্বই গোলরক্ষক কাট্টিমণির হাত। খেলা শেষে ম্যাচের সেরা হওয়ার পুরস্কার নিয়ে হাসতে হাসতে টানেলের দিকে এগোচ্ছিলেন কাট্টিমণি। টানা ছ’ম্যাচ হারের পর ঘরের মাঠে ডাফিদের রুখে হাসতেই পারেন সন্তোষ কাশ্যপের ছেলেরা। কিন্তু ইস্টবেঙ্গল, বেঙ্গালুরু, আইজলের ড্রয়ের দিনে মুম্বই থেকে তিন পয়েন্ট তুলতে না পারায় আক্ষেপ সবুজ-মেরুন শিবিরে।

ম্যাচ শেষে মুম্বই থেকে ফোনে মোহনবাগান কোচের গলাতেও যেন সেই হতাশার ছাপ। ‘‘সুযোগ তৈরি করেও ছেলেরা যদি গোল করতে না পারে, তা হলে যা হতে পারত, তাই হয়েছে। আমরা যে তরীতে ছিলাম সেখানেই রয়ে গেলাম।’’

মিনিট কুড়ির মধ্যেই ম্যাচের রাশ চলে গিয়েছিল মুম্বইয়ের হাতে। লেফ্‌ট ব্যাকে সৌভিক ঘোষকেই নিশানা বানিয়েছিলেন বিপক্ষের থই সিংহ। প্রথমার্ধে এই থই আর ফারুক চৌধুরীর দাপটেই কাঁপল বাগান রক্ষণ। ভাগ্য ভাল আনাস, এডুয়ার্ডো সজাগ থাকায় বিপদ বাড়েনি। হ্যান্ড বল হওয়ায় থইয়ের গোল বাতিল এই সময়েই।

আরও পড়ুন:

স্মিথদের স্লেজিং উপভোগ করতে চান ঋদ্ধিমান

দুই সাইড ব্যাক ওভারল্যাপে যাচ্ছে না, মাঝমাঠ বিপক্ষের আক্রমণ ধ্বংস করতে যতটা দক্ষ, ততটা বল বাড়ানোয় নয়। উইং ধরে আক্রমণের সেই চেনা ছন্দ নেই। ফলে ডাফি একা পড়ে যাচ্ছিলেন বার বার। দ্বিতীয়ার্ধে তাই জেজে, বলবন্তকে নামিয়ে আক্রমণের ঝাঁঝ আরও বাড়াতে চেয়েছিলেন সঞ্জয়। কিন্তু ফিনিশিংয়ের অভাবে গোলের দরজা খুলতে ব্যর্থ তাঁরাও।

এ দিন ড্রয়ের ফলে আট ম্যাচের পর ১৮ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়ে গেল বাগান। কিন্তু সনির পাশাপাশি চিন্তা আরও বাড়ল। এই আট ম্যাচে কিন্তু কোনও গোল নেই অধিনায়ক কাতসুমির। শিবাজিয়ান্স ম্যাচের আগে যা মেরামত করা দরকার বাগানে।

মোহনবাগান: দেবজিৎ, প্রীতম, আনাস, এডুয়ার্ডো, সৌভিক ঘোষ, কাতসুমি, প্রণয়, সৌভিক চক্রবর্তী (জেজে), সনি, আজহার (বলবন্ত), ডাফি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন