আজ জিতলেই লিগ চ্যাম্পিয়ন মোহনবাগান

খেতাব জয়ের সামনে দাঁড়িয়ে যেন প্রহর গুনছেন দিপান্দা ডিকা। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:২৪
Share:

মহড়া: স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে প্রস্তুতি ডিকাদের। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র

খেতাব জয়ের সামনে দাঁড়িয়ে যেন প্রহর গুনছেন দিপান্দা ডিকা।

Advertisement

আই লিগ ও কলকাতা লিগ মিলিয়ে গত তিন বার লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছেন ক্যামেরুণের স্ট্রাইকার। কিন্তু নিজে ট্রফি পেলেও খেতাব জেতাতে পারেননি কোনও ক্লাবকেই। এ বার কলকাতা লিগ জয়ের সামনে দাঁড়িয়ে দশ গোল করে ফেলা ডিকা বলে দিলেন, ‘‘যদি এ বার কলকাতা লিগ জিততে পারি তা হলে সেটা হবে ভারতে আসার পর আমার সবথেকে বড় সাপল্য। ট্রফি পেলে সেটা উৎসর্গ করব আমার মেয়ে ফ্রান্সকে।’’

ডিকা যতই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য অপেক্ষা করুণ সেই ভাবনাকে দলের মধ্যে ঢুকতে নারাজ কোচ শঙ্করলাল চক্রবর্তী। মহমেডানের কাছে ইস্টবেঙ্গলের হার টিভিতে দেখার পরও মঙ্গলবার রাতে সতর্ক মোহনবাগান কোচ। বলে দিলেন, ‘‘সুবিধা একটু তো হলই। আমাদের পক্ষে পজিটিভ রেজাল্ট। তবে যা বলার বলব কাস্টমস ম্যাচের পর।’’ আসলে খেতাব মুঠোয় না আসা পর্যন্ত দলকে শান্ত রাখতে চাইছেন সবুজ-মেরুন কোচ। এ দিন সকালে অনুশীলনের পরও তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘গত চার বছর সহকারী কোচ হয়ে এতগুলো টুনার্মেন্টে শেষ মুহূর্তে এসে ডুবেছি যে এখন আর খেতাব না জেতা পর্যন্ত কোনও কিছুকেই বিশ্বাস করতে পারি না।’’ লিগ টেবলের পরিস্থিতি যা তাতে আজ বুধবার কাস্টমসকে হারাতে পারলেই আট বছর পর কলকাতা লিগের রং বদলাবে। লাল-হলুদ থেকে হয়ে যাবে সবুজ-মেরুন। সে ক্ষেত্রে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই ইস্টবেঙ্গলের চেয়ে ছয় পয়েন্টে এগিয়ে গিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাবেন শিল্টন পালরা। সেক্ষেত্রে ১৮ ডিসেম্বর মহমেডানের বিরুদ্ধে শেষ ম্যাচের কোনও গুরুত্ব থাকবে না। এ রকম অ্যাডভান্টেজ পজিসনে থেকেও সবুজ-মেরুন ড্রেসিংরুমে কোনও আলাদা উচ্ছ্বাস নেই। বারবার পালতোলা নৌকার চরায় আটকে যাওয়ার স্মৃতি যেন মনে করাচ্ছে পুরো দলকে। সেট পিস ও হালকা অনুশীলনের পর সবাই ‘আরও একটা ম্যাচ জিততে হবে’ এই মনোভাব নিয়ে বাড়ির দিকে পা বাড়ালেন এ দিন।

Advertisement

সতর্কতা অবশ্য স্বাভাবিক। কারণ কাস্টমস এ বার খুব ভাল খেলছে। এ বারের প্রিমিয়ার লিগে দু’টো ম্যাচ ড্র করলেও মসৃণ গতিতে এগিয়েছে মোহনবাগান। অপরাজিত রয়েছেন পিন্টু মাহাতোরা। আজ যাঁদের সঙ্গে পিন্টুদের খেলা সেই কাস্টমসও কিন্তু এখনও অপরাজিত। মোহনবাগান কোচ বলছিলেন, ‘‘কাস্টমসের খেলা আমি দেখেছি। ভাল তিন জন বিদেশি আছে। ইস্টবেঙ্গলের থেকে পয়েন্ট কেড়েছে ওরা। জয় অত সহজ হবে না।’’ শঙ্করলাল যে কতটা বাস্তবাবাদী তা বোঝা যায় কাস্টমস কোচ রাজীব দে-র কথা শুনলেই। বলছিলেন, ‘‘আমরা এখনও অবনমনের বাইরে নই। আমাদের পয়েন্ট দরকারই।’’ প্রিমিয়ার লিগে তিনিই একমাত্র কোচ যিনি ১৪ বছর একই ক্লাবে টানা কোচিং করাচ্ছেন। দাবি করলেন, ডিকা-হেনরি জুটিকে আটকানোর অস্ত্র তাঁর হাতে আছে।

ডার্বিতে যে দল খেলেছিল তাতে কোনও পরিবর্তন হচ্ছে না মোহনবাগানে। বেতন-সহ নানা সমস্যা জেরবার পুরো ক্লাব। কর্তারা নিজেদের মধ্যে ঝগড়ায় ব্যস্ত। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে কোনও বড় কর্তাই আসেননি মাঠে। ফুটবল সচিব এলেন অনুশীলন শেষ হওয়ার পর। সদস্য-সমর্থকরাও ডিকাদের উৎসাহ দিতে ভিড় করেননি ক্লাব তাঁবুতে। যা আশ্চর্য লেগেছে অধিনায়ক শিল্টন পালেরও। মোহনবাগান যে বার শেষ বার লিগ পায় সে বারের একমাত্র খেলোয়াড় শিল্টন শুধু রয়েছেন এ বারের দলে। বলছিলেন, ‘‘এখন আর সে দিনের কথা তেমন মনে নেই। তবে এটা মনে আছে খেতাব জেতার আগের দিনের অনুশীলনে প্রচুর সদস্য সমর্থক এসেছিলেন।’’

ডিকা এবং শঙ্করলালের প্রথম ট্রফি জেতার সৌজন্যে আট বছর পর আজ ঘরোয়া লিগ খেতাব গোষ্ঠ পাল সরণীতে ঢোকে কী না সেটাই দেখার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন