মোহনবাগান জিতলেও রেফারির সেই ‘হার’

কলকাতা লিগের রেফারিরা আছেন স্বমেজাজেই! গত সোমবার তাঁদের মহাবিতর্কিত সিদ্ধান্তের পরে চোখে জল নিয়ে মোহনবাগান মাঠ ছাড়তে হয়েছিল টালিগঞ্জ অগ্রগামী কোচ রঞ্জন চৌধুরীকে। চার দিন পরে শুক্রবার সেই মাঠেই ম্যাচের পর রুমালে চোখ মুছছিলেন ইউনাইটেড স্পোর্টসের কোচ পার্থ সেন। সৌজন্যে সেই বিতর্কিত রেফারিং।

Advertisement

দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৪:১৪
Share:

ডাফি-বিদেমির যুগলবন্দি। শুক্রবার। ছবি-শঙ্কর নাগ দাস

মোহনবাগান-৩ : ইউনাইটেড স্পোর্টস-১

Advertisement

(বিদেমি-২, ডাফি) (বুদিরাম)

কলকাতা লিগের রেফারিরা আছেন স্বমেজাজেই!

Advertisement

গত সোমবার তাঁদের মহাবিতর্কিত সিদ্ধান্তের পরে চোখে জল নিয়ে মোহনবাগান মাঠ ছাড়তে হয়েছিল টালিগঞ্জ অগ্রগামী কোচ রঞ্জন চৌধুরীকে।

চার দিন পরে শুক্রবার সেই মাঠেই ম্যাচের পর রুমালে চোখ মুছছিলেন ইউনাইটেড স্পোর্টসের কোচ পার্থ সেন। সৌজন্যে সেই বিতর্কিত রেফারিং।

এবং দু’টো ম্যাচেই একটা প্রতিপক্ষ দল কমন— মোহনবাগান!

এ দিনের ম্যাচের তখন ৫২ মিনিট। ১-২ পিছিয়ে ইউনাইটেড। মোহনবাগান পেনাল্টি বক্সে বুদিরামদের জন্য বল বাড়িয়েছিলেন ইউনাইটেডের আমোদ কুমার। বক্সের মধ্যে সেই বলে হাত লাগাল বাগানের রাজু গায়কোয়াড়। রেফারি দেবাশিস মান্ডি বলের কাছাকাছিই ছিলেন। ইউনাইটেডের নিশ্চিত পেনাল্টি। কিন্তু তাদের ফুটবলাররা রেফারির দিকে তাকিয়ে দেখলেন তিনি খেলা চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

ম্যাচ শেষে চার দিন আগের মতো আর পুলিশ পাহারায় নয়। সহকারীদের নিয়ে রে‌ফারি দেবাশিস মান্ডি মোহনবাগান মাঠ ছাড়লেন সবুজ-মেরুন সমর্থকদের হর্ষধ্বনির ভেতর। সোমবারের মতো তো আর বাগানের ড্র ম্যাচ পণ্ড নয়। ডাফিরা বরং শুক্রবার বিজয়ী।

ইউনাইটেড কিন্তু ওই পেনাল্টি পেলে ভক্তচাপের সঙ্গে সঙ্গে রক্তচাপও বেড়ে যেত বাগান কোচ-ফুটবলার এবং কর্তাদের। বদলে দিনের শেষে মহার্ঘ তিন পয়েন্ট নিয়ে হাইভোল্টেজ হাসি ডাফি, বিদেমিদের মুখে। সঙ্গে জুতসই সংলাপ, ‘‘আমরা তৈরি। ডার্বিতেও গোল করে দলকে জেতাতে চাই।’’

অন্য ধারের রিজার্ভ বেঞ্চ থেকে ডাফিদের দিকে তখন নীরব তাকিয়ে ইউনাইটেডের হয়ে ব্যবধান কমানো বুদিরাম। শ্যামনগরের ছেলে ডার্বিতে বাগানের ৫-৩ জেতার মরসুমে ইস্টবেঙ্গলে ভাইচুংয়ের সঙ্গী স্ট্রাইকার ছিলেন। এ দিন ইউনাইটেড ০-১ পিছিয়ে থাকার সময় বুদিরাম দুরন্ত ইনসাইড টার্নিংয়ে দুই বাগান ডিফেন্ডারকে ছিটকে দিয়ে যে দর্শনীয় গোল করে গেলেন তা সচরাচর টিভিতে বিদেশি লিগে দেখা যায়। গোলের পর আনন্দে জার্সি খুলে ফেলে কার্ড দেখেন তিনি। ম্যাচ শেষে কিন্তু তীব্র হতাশার গলায় বলছিলেন, ‘‘ন্যায্য পেনাল্টিটা পেয়ে গেলে হেরে ফিরতাম না।’’

পিয়ারলেস আর পরিত্যক্ত টালিগঞ্জ অগ্রগামী ম্যাচ—পরপর দুই ম্যাচ থেকে পুরো পয়েন্ট আসেনি বাগানে। তার উপর এ দিনের বিপক্ষ ইউনাইটেড শেষ তিন ম্যাচে ১০ গোল করেছে। বাগান কোচ শঙ্করলাল তাই শুরুতেই গোল পাওয়ার জন্য জোড়া স্ট্রাইকারে আক্রমণে ঝড় তুলেছিলেন। সেই পরিকল্পনা সফল হলেও কিন্তু গোল খাওয়ার রোগ যায়নি বাগানে।

হাফটাইমের আগে ডাফির হেডে বাগান এগোলেও মাঝমাঠে ব্লকিং বা স্ন্যাচিং কিছুই ঠিকঠাক হচ্ছিল না। দুই সেন্ট্রাল ডিফেন্ডারের বোঝাপড়ার অভাবে অনেকবার চাপে পড়ে যাচ্ছিল তারা। তার উপর এ দিন কার্ড সমস্যায় প্রবীর দাস না থাকায় পাল্টা আক্রমণ করার লোক ছিল না। অবশেষে দ্বিতীয়ার্ধে পঙ্কজ মৌলার পাস থেকে বিদেমির দ্বিতীয় গোলে ৩-১ হতে এতক্ষণ টেনশনে থাকা সবুজ-মেরুন গ্যালারি শান্ত হয়।

বাগান শান্ত হলেও মিডফিল্ড আর ডিফেন্সের ভুল দেখে ডার্বিতে নিশ্চিন্ত হওয়া যাচ্ছে কোথায়!

মোহনবাগান: অর্ণব, তন্ময়, সঞ্জয় (অসীম), রাজু, চন্দ্রশেখর, তপন, শরণ, পঙ্কজ, আজহার (সৌরভ), ডাফি (আমিরি), বিদেমি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন