তোপ: বিশ্বকাপের আবহে ইংল্যান্ডের অস্বস্তি বাড়ালেন মন্টি। ফাইল চিত্র
বিশ্বকাপে প্রথম বল পড়ার আগেই অইন মর্গ্যানদের অস্বস্তি বাড়িয়ে দিলেন মন্টি পানেসর। তিনি জানালেন, ইংল্যান্ডের বোলাররা সচরাচর রিভার্স সুইং করার জন্য লজেন্স ব্যবহার করেন।
সদ্য প্রকাশিত হয়েছে ৩৭ বছরের বাঁ হাতি স্পিনারের আত্মজীবনী ‘দ্য ফুল মন্টি’। সেখানেই এই বিস্ফোরক কাহিনি ফাঁস করেছেন পানেসর। তিনি বলেছেন, ‘‘আমি যখন ইংল্যান্ড দলে আসি, সেই সময়ে আমার কাজই ছিল সিমারদের জন্য বল তৈরি করা।’’ সেখানেই না থেমে পানেসর আরও লিখেছেন, ‘‘ওই সময়ে বোলাররা আমাকে এসে বলত, একটি শর্তেই তুমি আমাদের সঙ্গে বোলিং করতে পার। তুমি কোনও অবস্থাতেই বলের চকচকে দিককে নষ্ট করবে না। বিশেষ করে জিমি অ্যান্ডাসরন আমাকে নির্দেশ দিত, যতটা সম্ভব বলকে শুকনো রাখার চেষ্টা কোরো।’’
বল-বিকৃতি কেলেঙ্কারিতে এক বছরের নির্বাসন কাটিয়ে সদ্য আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরেছেন অস্ট্রেলিয়ার স্টিভ স্মিথ এবং ডেভিড ওয়ার্নার। যা নিয়ে ক্রিকেটমহলে এখনও আলোচনা অব্যাহত। তারও আগে ২০১৭ অ্যাশেজ সিরিজে মেলবোর্নে চতুর্থ টেস্টে জিমি অ্যান্ডারসনের বিরুদ্ধে বল বিকৃতির অভিযোগ উঠেছিল। যদিও ইংল্যান্ড পেসার সেই অভিযোগকে ‘হাস্যকর’ বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন। তার আগের বছরেই অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে বল-বিকৃতি করেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক ফ্যাফ ডুপ্লেসি। সব মিলিয়ে এমনই এক উত্তাল মুহূর্তে পানেসর ইংল্যান্ড ক্রিকেটের এমনই অন্ধকার দিককে যে ভাবে লেখার আকারে প্রকাশ্যে নিয়ে এসেছেন, যা নিয়ে আবারও নতুন বিতর্ক তৈরি হতে পারে। আত্মজীবনীতে ২০০৯ এবং ২০১১ অ্যাশেজজয়ী ইংল্যান্ড দলের সদস্য এই বাঁ হাতি স্পিনার জানিয়েছেন, ক্রিকেটীয় স্পিরিটের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েই বল-বিকৃতি ঘটাতে প্যান্টের ‘জ়িপ’ও ব্যবহার করেছেন। পানেসর বলেছেন, ‘‘আমরা বুঝেছিলাম, লজেন্স খাওয়ার পরে মুখের লালা এবং সান ক্রিম ঠিক মতো ব্যবহার করলে ভাল রিভার্স সুইং পাওয়া যায়। আমিও তো অনেক সময়ে প্যান্টের জ়িপে বল ঘষতাম। তাতে বলের আকার পাল্টে যেত। উপকার পেত বোলাররা।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘হতে পারে এটা ক্রিকেটীয় আদর্শের পরিপন্থী। তবে নিয়মে তো এটাও বলা রয়েছে যে, বলের পালিশ ঠিক রাখতে পোশাককে ব্যবহার করা যেতে পারে। আমি সেটাই কাজে লাগিয়েছি।’’ সেই বিতর্কিত অধ্যায় বাদ দিলে আত্মজীবনীতে পানেসর লিখেছেন, মানসিক ব্যধি (ডাক্তারি পরিভাষায় স্কিৎজ়োফ্রেনিয়া) সারিয়ে তিনি এখন সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেছেন। আবারও বাইশ গজে ফিরে আসার স্বপ্ন দেখেন। তিনি লিখেছেন, ‘‘২০১৩ সালের পর থেকে আমি ওই অদ্ভুত মানসিক ব্যধিতে আক্রান্ত হয়ে পড়ি। সন্দেহ করতাম সকলকে। যা আমার পরিবারের সদস্যদের উপরেও ভয়ঙ্কর প্রভাব ফেলেছিল।’’ তিনি আরও লিখেছেন, ‘‘সেই সময়ে পিটার গিলমোর বলে এক ব্যক্তি বলেন, আমি খুব সম্ভবত স্কিৎজ়োফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছি। খুব হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। তখন প্রাক্তন ইংল্যান্ড অধিনায়ক মাইক ব্রিয়ারলি আমাকে খুব সাহায্য করেছিলেন। আমাকে মনোবিদের কাছেও নিয়ে যান। এখন কিন্তু আমি সম্পূর্ণ সুস্থ।’’