সেরা: সুব্রত কাপে অনূর্ধ্ব ১৪ পর্যায়ের দল। নিজস্ব চিত্র
সেরা: সুব্রত কাপে অনূর্ধ্ব ১৪ পর্যায়ের দল। নিজস্ব চিত্র
শালবনি বলতেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে শাল-মহুয়ার জঙ্গল। গ্রাম্য জীবনের ধারাপাত। কিন্তু তারমধ্যেই রয়েছে নিরলস লড়াই। ছোট ঘরে থেকে বড় স্বপ্ন দেখা। আর্থিক অনটনের মধ্যে থেকেও কিছু করে দেখানোর তাগিদ। সেই ধারা বজায় রেখেই ফুটবলে এগোচ্ছে মৌপাল দেশপ্রাণ বিদ্যাপীঠ।
এই স্কুল এ বার সুব্রত কাপের অনূর্ধ্ব ১৪ বিভাগে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এই পর্যায়ে মৌপালের স্কুলটি এ বারই প্রথম যোগ দিয়েছিল। প্রথম বারেই বাজিমাত করে তারা। ফাইনালে জলচক হাইস্কুলকে হারিয়ে জেলা চ্যাম্পিয়ন হয়। স্কুলে যেমন ছেলেদের ফুটবলের দল রয়েছে, তেমনই রয়েছে মেয়েদের ফুটবলের দল। স্কুলের ক্রীড়াশিক্ষক দেবব্রত সাঁতরা-সহ কয়েকজন সহ শিক্ষকের নজরদারিতে তাদের অনুশীলন চলে।
স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কথায়, “অভিভাবকেরা পাশে দাঁড়াচ্ছেন। উৎসাহ দিচ্ছেন। তাই ছেলেমেয়েরা ফুটবলে এগিয়ে যাচ্ছে।” এই স্কুলে যারা ফুটবল খেলে তাদের অনেকের ঘরেই নুন আনতে পান্তা ফুরনোর অবস্থা। সেটি স্কুল কর্তৃপক্ষের নজরে রয়েছে। তারা সেই ছেলে-মেয়েদের পাশে থাকার চেষ্টা করে। স্কুলে নিয়মিত ফুটবল প্রশিক্ষণ শিবির চলে।
শুধু ফুটবল নয়, অন্যান্য খেলাতেও পারদর্শী এই স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা। প্রতি বছর আন্তঃশ্রেণি ফুটবল ও কবাডি হয়। েসখানে এক-একটি শ্রেণির এক-একটি দল গড়া হয়। বিভিন্ন স্কুল যে সব ক্রীড়া প্রতিযোগিতা করে সেখানেও যোগ দেয় এই স্কুল। এ বার জঙ্গলমহল কাপে মহিলা ফুটবলে এই স্কুল খেলেছে।
স্কুলের ক্রীড়া শিক্ষিকা আলপনা ভুঁইয়ার কথায়, ‘‘ছেলেমেয়েদের অনেকেই ভাল ফুটবল খেলে। সবাই প্রচুর পরিশ্রম করছে। সুযোগ পেলে ওরা অনেক দূর এগোবে। সেই জন্যই স্কুলে ফুটবল প্রশিক্ষণ শিবির চালু করা হয়েছে।” ওই শিক্ষিকার কথায়, “কিছু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। সেই সব জয় করে খেলাধুলো চালিয়ে যাওয়াটাই তো সত্যিকারের চ্যালেঞ্জ।”
স্কুলে মিনি ইন্ডোর ও মাল্টিজিম রয়েছে। কিন্তু মাঠটি খেলার অনুপযোগী। সেটি অসমতল ও এবড়ো খেবড়ো। খেলতে গেলে হোঁচট খেতে হয়। সেটির সংস্কার প্রয়োজন। স্কুল মাঠের সংস্কার এবং উপযুক্ত পরিকাঠামো তৈরির চেষ্টা চলছে।