ছন্দে: হার্দিকই এখন চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে নাইটদের। ফাইল চিত্র
ইডেনে কথা বলে তাঁর ব্যাট! কেকেআরের ঘরের মাঠ তাঁর কাছে যেন ঘরের বাইরে আরও একটা ঘর।
ওয়ান ডে ক্রিকেটে তাঁর রেকর্ড ২৬৪ রান এই ইডেনে। অভিষেক টেস্টে ১৭৭ রানও ইডেনেই। রয়েছে রঞ্জি ট্রফিতে দ্বিশত রানের ইনিংস। এমনকি আইপিএলেও ছয় বছর আগে ইডেনে শতরান করে মাঠ ছেড়েছিলেন রোহিত শর্মা।
এ বার যদিও আইপিএলে সেই ছন্দে দেখা যাচ্ছে না মুম্বই ইন্ডিয়ান্স অধিনায়ককে। দশ ম্যাচে তাঁর রান মোটে ২৩১। বুধবার কি ইডেনে ফের ঝলসে উঠবে রোহিতের ব্যাট?
মঙ্গলবার ইডেনে অনুশীলনে এসে রোহিত যদিও মুখে কুলুপ এঁটেই রইলেন। বিশ্বরেকর্ডের মাঠে তিনি মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের অনুশীলনে খেললেন ফুটবল। মুম্বইয়ের পেসার মুস্তাফিজুর রহমানের খেলা দেখতে ঢাকা থেকে কলকাতা এসেছেন ‘টাইগার শোয়েব’ (এই নামেই তিনি বিখ্যাত বাংলাদেশে)। যাঁকে বাংলাদেশের ক্রিকেট ম্যাচে বাঘ সেজে গ্যালারিতে দেখা যায়। বাংলাদেশের জাতীয় দলের জার্সি গায়ে সেই শোয়েব ক্লাব হাউসে দাঁড়িয়ে তাঁর বন্ধুকে বলছিলেন, ‘‘ইডেনের রাজা আগে ছিলেন মহম্মদ আজহারউদ্দিন। আর এখন রোহিত শর্মা।’’
রোহিতের হয়ে তাঁর দলে দক্ষিণ আফ্রিকার সদস্য জেপি ডুমিনি বলছেন ‘‘দর্শক রোহিতের পারফরম্যান্স নিয়ে কী বলছেন জানা নেই। তবে দলের যখন দরকার তখন তো ঠিক খেলে দিচ্ছে ও। প্রথম তিন ম্যাচ হারের পরে ব্যাঙ্গালোরের বিরুদ্ধে ৫২ বলে ৯৪ রানের ইনিংসটা ভাবুন এক বার। চাপের মুখে কী ভাবে খেলতে হবে তা জানে রোহিত। যা আমাকেও প্রেরণা দেয়।’’
চাপের মুখে ম্যাচ বার করতে মুম্বই শিবির তাকিয়ে আরও এক জনের দিকে। তিনি অলরাউন্ডার হার্দিক পাণ্ড্য। ডুমিনির কাছে তিনি মাঠে চাপ কাটাতে মুম্বইয়ের সেরা অস্ত্র। রবিবার ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে কেকেআরকে ১৩ রানে হারানোর ম্যাচে ব্যাটে ২০ বলে ৩৫ রান ও বল হাতে ১৯ রানে দুই উইকেট নিয়েছেন হার্দিক। এ বারের আইপিএলে ৯ ম্যাচে ১৬৯ রান ও ১৪ উইকেট হার্দিকের। বোলারদের মধ্যে যা যুগ্ম ভাবে তাঁকে শীর্ষে রেখেছে উমেশ যাদবের সঙ্গে (১০ ম্যাচে ১৪ উইকেট)। তাঁর সম্পর্কে ডুমিনি বলছেন, ‘‘চাপের মুখে ম্যাচ বার করার সেরা খেলোয়াড় হার্দিক। এই মুহূর্তে ওকেই আমাদের বেশি দরকার। এর আগে ওর বিরুদ্ধে খেলেছি। এখন হার্দিকের সঙ্গে খেলার সৌভাগ্য হচ্ছে। ও একজন ব্যতিক্রমী ক্রিকেটার।’’ হার্দিক যদিও এ দিন ইডেনে আসেননি। তিনি বিশ্রাম নিয়েছেন হোটেলে।
এমনিতেই আইপিএলের ইতিহাসে টুর্নামেন্টের শুরুতে ধাক্কা খেয়ে প্রবল ভাবে ফিরে আসার রেকর্ড রয়েছে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের। ২০১৫ সালে যেমন শুরুতে টানা চার ম্যাচ হারের পরেও এই ইডেনেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল তারা। এ বারও শুরুতে প্রথম তিন ম্যাচ হারলেও শেষ চার ম্যাচের মধ্যে তিনটিই জিতেছে রোহিত শর্মার দল। যার মধ্যে রয়েছে শেষ ম্যাচে কেকেআরের বিরুদ্ধে জয়। যার ফলে ১০ ম্যাচের পরে ৮ পয়েন্ট নিয়ে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স এই মুহূর্তে লিগ তালিকায় রয়েছে পঞ্চম স্থানে। বুধবার জিততে পারলে প্রথম চারে ঢুকে পড়বেন ডুমিনি, রোহিতরা।
তিন বছর আগে আট এপ্রিল ইডেনে শেষ বার মুম্বইকে হারিয়েছিল কেকেআর। গত এগারোটি আইপিএলে নয় বারই কলকাতা থেকে জিতে ফিরেছে মুম্বই। দীনেশ কার্তিকের দলের বিরুদ্ধে এই পরিসংখ্যানটাই কি মুম্বইকে বাড়তি অক্সিজেন জোগাচ্ছে? প্রশ্ন শুনেই ডুমিনি বলছেন, ‘‘ধাক্কা খাওয়ার পরে পাল্টা ঘুরে দাঁড়িয়ে কী ভাবে লড়াই করতে হয়, তা গত কয়েকদিনে দেখিয়েছি আমরা। অতীত ভেবে লাভ নেই। কেকেআরও ম্যাচটা জিততে নামবে। আর আমাদেরও ট্রফি জিততে গেলে এই জায়গা থেকে সব ম্যাচ জিততে হবে।’’