হাবিবুল বাশার, খালেদ মাসুদ, জাভেদ ওমর, মোহাম্মদ রফিক, মাশরাফি, এই পাঁচজনকে বাদ দিলে অন্য কারও বয়স তখন ২০ পেরয়নি। এমন একটি অনভিজ্ঞ দল লর্ডসে মাইকেল ভন, ট্রেসকোথিকস, ফ্লিনটফদের বিপক্ষে খেলবে কী করে? এই প্রশ্নটা যখন উঠছে তখন বাংলাদেশ কোচ হোয়াটমোর একটু বেশিই ঝুঁকি নিয়ে ফেললেন। লর্ডস টেস্টে নামিয়ে দিলেন দলের সর্বকনিষ্ঠ ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিমকে। ১৬ বছর ২৬৭ দিন বয়সে লর্ডসে কনিষ্ঠতম টেস্ট ক্রিকেটার হিসেবে অভিষেক হল মুশফিকুর রহিমের। ইংল্যান্ড সফরে সাসেক্সের বিপক্ষে হোভে তিন দিনের ম্যাচে ৬৩ এবং নর্দাম্পটনশায়ারের বিপক্ষে ট্রেন্টব্রিজে ১১৫ রানের নট আউট ইনিংসে লর্ডস টেস্টে অভিষেকের দাবিটা তুলেছিলেন মুশফিকুর রহিম।
বগুড়ার ছেলে বলে স্থানীয়দের দাবি মেটাতে ৯ মাস পর টেস্টে সুযোগ ফিরে পাওয়া। সেখানেও ব্যর্থ মুশফিকুর রহিম ( ২ ও ০)। ২০০৭ বিশ্বকাপে ত্রিনিদাদে ভারতের ম্যাচ উইনিং ফিফটিতেও টেস্টে নিজের জায়গাটা স্থায়ী হয়নি। ওয়ানডে ক্রিকেটে খালেদ মাসুদ পাইলটের জায়গাটা নিয়ে টেস্টে উইকেট কিপার কাম ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে জায়গাটা পাকা করতে লেগেছে মুশফিকুরের আরও ১ বছর। শ্রীলঙ্কা সফরের প্রথম টেস্টে খালেদ মাসুদ পাইলট ব্যর্থ হওয়ায় পি সারায় সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে ২৩৫ মিনিটের ক্লাসিক ইনিংসে ৮০ রান। সেই থেকে বাংলাদেশের হয়ে টানা ৪৭ টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন একটানা।
চট্টগ্রাম টেস্টে উইকেটের পিছনে দাঁড়িয়ে উইকেটের রেকর্ডে খালেদ মাসুদ পাইলটকে ছাপিয়ে গিয়েছেন। তিন ফরম্যাটের ক্রিকেট মিলিয়ে ৩০০ আউটের রেকর্ডটাও হয়ে গিয়েছে ওই টেস্টে। ২৭০ ম্যাচ খেলা মুশফিকুর রহিমের সামনে শুক্রবার টেস্ট ম্যাচ খেলার হাফ সেঞ্চুরির লক্ষ্য। আশরাফুল (৬১), হাবিবুল বাশারের (৫০)-এর পর তৃতীয় বাংলাদেশি হিসেবে টেস্টের হাফ সেঞ্চুরির সামনে দাঁড়িয়ে মুশফিকুর রহিম। একই ম্যাচে ইংল্যান্ড ক্রিকেট ইতিহাসে ১৪তম ক্রিকেটার হিসেবে শততম টেস্টের সামনে দাঁড়িয়ে স্টুয়ার্ট ব্রড। হাফ সেঞ্চুরির সামনে দাঁড়িয়েও রোমাঞ্চিত নন মুশফিকুর রহিম, ‘‘বাংলাদেশের একজন ক্রিকেটার হিসেবে ৫০টি টেস্ট খেলা মোটেও সহজ নয়। চেষ্টা করব মাইলস্টোন ম্যাচকে নিজের এবং দলের জন্য স্মরনীয় করে রাখতে। তবে ৫০ টেস্ট খেলতে এত সময় লাগছে বলেই দু:খ রয়েছে। টেস্ট আমরা খুবই কম খেলি। বাংলাদেশ দলে এমন ক্রিকেটার আছেন যিনি শুধু টেস্টই খেলেন তাঁর কষ্টটা ভাবুন।’’ লম্বা লম্বা বিরতিতে টেস্ট খেলতে হচ্ছে বলে প্রতিটি টেস্টকেই অভিষেক মনে করে তৃপ্তি পান মুশফিকুর। ‘‘১২ কিংবা ১৩ মাস বিরতির পর টেস্ট খেলেছি বলেই আমার কাছে প্রত্যেকটা টেস্টই নতুন নতুন মনে হয়। প্রতিটি টেস্ট খেলতে নেমে মনে হয়,এটাই বুঝি আমার অভিষেক টেস্ট।’’
আরও পড়ুন: ঢাকা টেস্টে বাংলাদেশ দলে আরও দু’জনের অভিষেক