নাটকীয় মোড় উপস্থিত হয়ে ডোপ কলঙ্ক থেকে মুক্তি পেলেও পেয়ে যেতে পারেন ভারতের তারকা গোলকিপার সুব্রত পাল। ভারতের ডোপ বিরোধী সংস্থায় (নাডা) প্রথম সাক্ষ্য দেওয়ার পরেই সুব্রতকে নিয়ে ইতিবাচক তরঙ্গ তৈরি হয়েছে। তাঁর ব্যাখ্যায় আপাতত সন্তুষ্ট হয়ে সুব্রতকে খেলার অনুমতিও দিয়েছে নাডা।
সুব্রত আগেই আবেদন করে নাডা-কে জানিয়েছিলেন, তিনি ইচ্ছাকৃত ভাবে টার্বুটালিন নেননি। সেই সময় তিনি খেলছিলেন ভারতের হয়ে। সর্দি-কাশি হওয়ায় সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের ডাক্তার নিজের স্বীকৃত প্রেসক্রিপশনে লিখে একটি কাশির ওষুধ খেতে দেন তাঁকে। সেই ওষুধের মধ্যেই টার্বুটালিন ছিল। ঘটনাচক্রে সেই সময়েই ডোপ পরীক্ষার জন্য নমুনা নেওয়া হয়েছিল ভারতীয় গোলরক্ষকের। সেই পরীক্ষার ফলই পজিটিভ আসে।
সুব্রতর আবেদনের ভিত্তিতে নাডা তাদের প্রথম শুনানি ডাকে বৃহস্পতিবার। সেখানে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের (এআইএফএফ) ডাক্তারও উপস্থিত ছিলেন বাঙালি গোলকিপারের সঙ্গে। জানা গিয়েছে, সুব্রত এবং ডাক্তারের ব্যাখ্যায় মোটামুটি ভাবে সন্তুষ্ট নাডা কর্তারা। তাঁরা জানিয়েছেন, সুব্রত এখন ইচ্ছা করলে খেলতে পারেন। অথবা স্বেচ্ছা নির্বাসনেও থাকতে পারেন। তবে তাঁর ‘বি’ নমুনা পরীক্ষা করা হবে এ বার। যদি সেই পরীক্ষাতে কিছু পাওয়া না যায় এবং নাডা পীরক্ষার রিপোর্টে সন্তুষ্ট হয়, তা হলে সুব্রতর শাস্তি হবে না। তখন তিনি ডোপের অভিযোগ থেকে পুরোপুরি মুক্ত হয়ে যাবেন। আর যদি পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসে এবং সুব্রতর শাস্তি হয়, তখন স্বেচ্ছা নির্বাসনের সময়টা শাস্তির মেয়াদের মধ্যে ধরে নেওয়া হবে। অর্থাৎ, তিনি তিন মাসের স্বেচ্ছা নির্বাসনে থাকার পরে যদি দু’বছরের জন্য সাসপেন্ড হন, তা হলে বাকি ২১ মাস বাইরে থাকবেন।
আরও পড়ুন: ঋষভে মুগ্ধ তেন্ডুলকর থেকে বিগ বি
সুব্রতর সঙ্গে বৃহস্পতিবার ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি। ফেডারেশনের পক্ষ থেকেও কেউ এ নিয়ে মুখ খোলেননি। তবে বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, প্রথম শুনানিতে ভারতীয় ফুটবলের ‘স্পাইডারম্যান’-এর ব্যাখ্যা নাডার কর্তারাও একেবারে উড়িয়ে দিতে পারেননি। তার উপর ডোপ-বিরোধী সংস্থার তালিকা অনুযায়ী, টার্বুটালিন এখনও পুরোপুরি নিষিদ্ধ দ্রব্য নয়। ‘স্পেসিফায়েড সাব্সট্যান্স’ হিসেবে তালিকাভূক্ত রয়েছে। ক্রীড়াবিজ্ঞানীরা এখনও নিশ্চিত নন, এটা পারফরম্যান্স-বর্ধক ড্রাগ কি না। যদিও এর ইচ্ছাকৃত ব্যবহার ডোপিং সংস্থার নিয়মে দণ্ডনীয় অপরাধ। অন্তিম পরীক্ষার ফলে কী থাকবে, তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। আপাতত, সুব্রত পালের জন্য বিরাট স্বস্তি হচ্ছে, নাডা তাঁর ইচ্ছা মেনে খেলার অনুমতি দিয়েছে। তাঁর ব্যাখ্যাও উড়িয়ে দিতে পারেনি।