India Vs Puerto rico

একটা জয় দিয়ে কিছু হবে না: কনস্টানটাইন

ঘরের মাঠে এভাবে জ্বলে উঠবে ভারতীয় ফুটবল দলে এটা হয়তো স্বপ্নেও ভাবেননি জাতীয় দলের কোচ স্টিফেন কনস্টানটাই। এক ঝাঁক নতুন মুখকে নিয়ে পুয়ের্তো রিকোর বিরুদ্ধে দল গড়েছিলেন তিনি। ভরসার কেন্দ্রে ছিল সুনীল ছে‌ত্রী, জেজে, অর্ণব মণ্ডলদের মতো সিনিয়ররা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১৮:৩৫
Share:

জয়ের পর ভারতীয় দলের উচ্ছ্বাস।

ঘরের মাঠে এভাবে জ্বলে উঠবে ভারতীয় ফুটবল দলে এটা হয়তো স্বপ্নেও ভাবেননি জাতীয় দলের কোচ স্টিফেন কনস্টানটাই। এক ঝাঁক নতুন মুখকে নিয়ে পুয়ের্তো রিকোর বিরুদ্ধে দল গড়েছিলেন তিনি। ভরসার কেন্দ্রে ছিল সুনীল ছে‌ত্রী, জেজে, অর্ণব মণ্ডলদের মতো সিনিয়ররা। সকলেই উজাড় করে দিলেন। মুম্বইয়ের আন্ধেরি স্পোর্টস কমপ্লেক্সে প্রায় ভরা গ্যালারিকে হতাশ তো করেনইনি তাঁরা বরং ভারতের খেলা দেখে উচ্ছ্বসিত দেখাল এআইএফএফ সভাপতি প্রফুল পটেল থেকে অভিনেতা অভিষেক বচ্চনকে। অভিষেককে দেখে তো মনে হচ্ছিল চেন্নাইয়ান এফসি খেলছে আর জিতছে। ঠিক যেভাবে নিজের দলের জয়ের উৎসব করতে দেখা যায় জুনিয়র বচ্চনকে ঠিক সে ভাবেই দেশের হয়ে গলা ফাঁটালেন তিনি।

Advertisement

কনস্টানটাইন ভারতীয় দলের দ্বিতীয়বার দায়িত্ব নেওয়ার পরই বলেছিলেন অনেক বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে হবে। এবং ভারতের থেকে এগিয়ে থাকা দলের বিরুদ্ধেই খেলতে হবে। সেই পুয়ের্তো রিকোই ছিল প্রথম পদক্ষেপ। যাতে একশো শতাংশ সফল গুরপ্রীত সিংহর ভারতীয় দল। সুনীল ছেত্রীর থেকে নিয়ে অধিনায়কত্ব তুলে দিয়েছিলেন গুরপ্রীতের হাতে। গোলের নিচে যে ভাবে নিশ্চিত পতন বাঁচালেন ঠিক ততটাই পিছন থেকে নেতৃত্ব দিলেন দলকে। যার নেতৃত্বে দারুণ সফল প্রাক্তন অধিনায়ক। সরাসরি ফ্রিকিক থেকে যে গোলটি করলেন সেটা দাঁড় করিয়ে রাখল প্রতিপক্ষের ওয়াল থেকে গোলকিপারকে। যোগ্য সঙ্গত জেজে, নারায়ন, জ্যাকিচাঁদরা। যাতে ম্যাচের ফল দাঁড়াল ভারত ৪ – পুয়ের্তো রিকো ১।

যে ফ্রি কিক থেকে গোল করলেন সুনীল ছেত্রী।

Advertisement

ম্যাচ শেষে কী বললেন স্টিফেন কনস্টাইন—

খেলার গতি

আমরা সব সময়ই ধিরে শুরু করি। লাওসেও তাই হয়েছিল। ভাল শিবিরের পর আমরা তৈরি ছিলাম। বল নিয়ে পুয়ের্তো রিকো খুব ভাল। সে কারণেই একটু সময় নিচ্ছিলাম। নিজের থেকে ভাল দলের সঙ্গে খেলতে হলে বেশি সময় নষ্ট করলেও সমস্যা। তবে গোল হজমের খুব তাড়াতাড়ি গোলে ফিরতে পেরেছি সেটাই ভাল দিক। এরকমও হতে পারে আমরা ফিরতে পারলাম না। আজ আমাদের ভাগ্য ভাল ছিল দ্রুত গোলে ফিরতে পেরেছিলাম।

দলের গড় বয়স

যদি পুরো দলের দিকে তাকানো যায় তা হলে দেখা যাবে যা গড় বয়স ও তাদের আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা দিয়ে এটা সহজ ছিল না। আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা আই লিগ বা আইএসএল-এর থেকে আলাদা। খেলার গতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে সময় লাগে। বিশেষ করে প্রতিপক্ষের খেলা বুঝে উঠতে বেগ পেতে হয়। আমরা প্রতিপক্ষকে নিয়ে নিশ্চিত থাকি না। কিন্তু যতক্ষণ জিতছি ততক্ষণ গোলের ব্যবধান বাড়ানোর চেষ্টা করে যেতে হয়।

গোলের পর জেজে লালপেখলুয়ার উচ্ছ্বাস।

পুয়ের্তো রিকোকে হারানো

আমি হারতে চাই না। তাই যখন জিতছি তখন ঠিক আছে। রিন্তু একটা ম্যাচ জিতেই কাজ শেষ হয়ে যাচ্ছে না। আমাদের খেলে যেতে হবে। আরও বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে হবে র‌্যাঙ্কিংয়ে উঠে আসতে। একটি ম্যাচ জিতে সেটা হবে না। পুয়ের্তো রিকো আমাদের থেকে এগিয়ে। সেই দেশকে হারানোটা আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে। আমি আসার পর থেকে এই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছি।

দলের আমেরিকা ট্যুর

আমি চেয়েছিলাম আমেরিকা গিয়ে খেলতে। সেখানে গেলে গায়ানা, পুয়ের্তো রিকো, ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোর মতো দলের বিরুদ্ধে খেলতে। পোর্তো রিকো আমাদের থেকে ৩৮ ধাপ এগিয়ে। দক্ষিজ়ণ আমেরিকার দলের সঙ্গে খেলাটা আমাদের জন্য ভাল। পুয়ের্তো রিকোর সঙ্গে খেলাটা আর জেতাটা অনেক বড় ব্যাপার।

কোচের স্ট্র্যাটেজি

আমি যখন এসেছিলাম তখন মিটিংয়ে জানিয়ে দিয়েছিলাম যদি কেউ ভাবে রাতারতি সাফল্য এসে যাবে তেমনটা সম্ভব নয়। এমনটা আশা করা ঠিক হবে না আমরা বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন করব। সেটা সম্ভব নয়। আমরা যোগ্যতা নির্ণায়ক ম্যাচের সাতটি হেরেছি। তার মধ্যে চারটি হেরেছি ২-১ ব্যবধানে। ওরা আমাদের থেকে অনেক ভাল দল ছিল। একটা ম্যাচ জিতে গেছি মানে আমরা এশিয়া সেরা দল হয়ে যাব না। অনেক কিছু শেখার রয়েছ। যে ম্যাচগুলি হেরেছি সেখান থেকেও শিখেছি। আমার কোচিং ৩০জন ফুটবলারের আন্তর্জাতিক অভিষেক হয়েছে। আমার হাতে এত প্লেয়ার রয়েছে যে এক একটা পজিশনে নির্বাচন করতে সমস্যা হয়ে যাচ্ছে।

সুনীল ছেত্রী ও জেজে লালপেখলুয়া।

আত্মতুষ্টির জায়গা নেই

এই ম্যাচে আমরা যদি গোল করে এগিয়ে যেতাম তা হলেও আত্মতুষ্ট হয়ে পড়ার জায়গা ছিল না। যেটা ভূটানের বিরুদ্ধে হয়েছিল। ৩-১ থেকে ওরা যদি আরও একটা গোল করে দিত তা হলে ওদের আত্মবিশ্বাস অনেক বেড়ে যেতে। কিন্তু আমরা ৪-১ করার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী হতে পারতাম না। এটা মনে রাখতে হবে।

সুনীল ছেত্রীকে নিয়ে

সুনীল এই দলের মুখ। ও দারুণ প্লেয়ার। গত ১০ বছর ধরে গোল করছে। আমি ওকে মজা করে বলি, ‘তোমার সময় শেষ হয়ে এসে।’ ও বলে, ‘আরও ৪-৫ বছর খেলব।’ ও হল লিডার। ও যতদিন চাইবে খেলবে। আমার মনে হয় ওর জন্য সব থেকে ভাল পজিশন ফোরয়ার্ডদের পিছনে।

ছবি: এআইএফএফ।

আরও খবর

সুনীল ছেত্রী নন, ভারতীয় দলের অধিনায়ক গুরপ্রীত

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement