FIFA U-17 World Cup

‘নামী বাবার ছেলে হওয়ার চাপ নিতে হয় না আমাকে’

ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের ডাকে একগাল হাসি নিয়ে অনেক কথা বলে যেতে কোনও ক্লান্তি নেই তিমথির। সে বিষয় যাই হোক না কেন! বাবা বা দল। ভারত বা ভারতের স্টেডিয়াম। সব বিষয়েই তিনি অনর্গল।

Advertisement

সুচরিতা সেন চৌধুরী

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৭ ১৫:০৭
Share:

তিমোথি ওয়ে।—নিজস্ব চিত্র।

ফুটবলটা যদিও আমেরিকার। আর সেখানেই সাফল্যের বিস্তৃত ইতিহাস লেখার কথা মনে মনে ভাবছে এক ১৭ বছরের ছেলে। সেই স্বপ্ন দেখার পথকে প্রশস্ত করে চলেছেন এক ব্যালন ডি’ওর পাওয়া বাবা। হোক না তা আফ্রিকার কোনও দেশের হয়ে পাওয়া প্রথম ব্যালন ডি’ওর। তাঁর নামের খ্যাতি তো বিশ্বজোড়া। এ বার ভারতের মাটিতে যেন স্বমহিমায় ফিরে এসেছেন সেই জর্জ উইয়া। তা-ও আবার ছেলের হাত ধরে! ছেলে যদিও আমেরিকার জাতীয় দলের প্রতিনিধি।

Advertisement

১৭ বছরের তিমোথি উইয়া। এই মুহূর্তে সে ইউএসএ দলের হয়ে খেলতে হাজির দিল্লিতে। ভারতের সঙ্গে প্রথম ম্যাচ জিতেও নিয়েছে তার দল। এই তিমথিকে নিয়ে কিন্তু মাতামাতির শেষ নেই। কারণ, তিনি যে জর্জ উইয়ার ছেলে। জনতার এই মাতোয়ারা মনোভাব দেখে বেশ বিরক্ত ইউএস কোচ হ্যাকওয়ার্থ। কিন্তু, ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের ডাকে একগাল হাসি নিয়ে অনেক কথা বলে যেতে কোনও ক্লান্তি নেই তিমথির। সে বিষয় যাই হোক না কেন! বাবা বা দল। ভারত বা ভারতের স্টেডিয়াম। সব বিষয়েই তিনি অনর্গল।

মাঠে তখন তিমোথি উইয়া। ছবি সৌজন্যে এআইএফএফ।

Advertisement

যেন বাবার দেখানো পথেই হেঁটে যাওয়া। সেই পথ ধরেই আজ ফুটবলে সে। অনূর্ধ্ব-১৭ জাতীয় দল থেকে পিএসজি। বাবার মতোই বেছে নেওয়া আক্রমণ। মাঠের মধ্যে যতটা স্বচ্ছন্দ তিমোথি, ঠিক ততটাই কথায়। তাই বাবা থেকে তার নিজের কেরিয়ার— কোনও কিছু নিয়েই বলতে ক্লান্তি নেই। এমনকী, বাবার সঙ্গে তুলনা চলে এলেও তার কিন্তু কোনও জড়তা নেই। যেমন, জর্জের খেলার সঙ্গে কোথায় মিল তিমথির? প্রশ্নটা শুনে এক মিনিটও সময় নিল না ভবিষ্যতের স্ট্রাইকার। বলল, ‘‘বাবার অনেক কিছুর সঙ্গেই তো আমার মিল রয়েছে। বিশেষ করে স্পিড আর জাম্প।’’

আরও খবর
খেলায় পরাজয়, কিন্তু ভারতের মন জয়

জর্জের কথা উঠতেই যেন আরও চনমনে হয়ে উঠল ১৭ বছরের তিমোথি। নামী বাবার ছেলে হওয়ার চাপটা যে এখন থেকেই সামলাতে হচ্ছে তাকে। যদিও সে এটাকে চাপ বলে মানতে নারাজ। তিমথি বলছিলেন, ‘‘নামী বাবার ছেলে হওয়াটা আমার কাছে চাপের নয়। কারণ? বাবা তো আমাকে সারা ক্ষণ উপদেশ দেয় ফুটবল নিয়ে। সব সময় আমাকে সমর্থন করে। কখনও চাপ দেয় না। সব সময়ই বলে, নিজের খেলাটা খেলতে।’’ এর পরেই মজা করে একগাল হাসি নিয়ে তিমথির মন্তব্য, ‘‘বাড়়িতে বাবা কিন্তু মায়ের উপদেশেই চলে!’’

ভারতের প্রশংসায় পঞ্চমুখ জুনিয়র জর্জ ওয়ে। তবে, প্রথম ম্যাচের জন্য একটা ছোট্ট আফসোসও যে থেকে গেল। গোলটা করেই ফেলেছিলেন! কিন্তু অফ সাইডের জন্য তা বাতিল হয়। সত্যিই কি অফ-সাইড ছিল? প্রশ্ন শুনে হেসে ফেলল তিমথি। তার পর মন্তব্য করল, ‘‘আমার তো মনে হয়, আমি অন-সাইডে ছিলাম। গোলটা হলে হয়তো দারুণ গোল হত।’’ ফের হাসি।

কাভানি ও নেইমারের ভক্ত। দু’জনেই খেলেন পিএসজিতে। ওই দলে সম্প্রতি যোগ দিয়েছে তিমথিও। তাঁর পছন্দের দুই তারকা ফুটবলারের ইগোর লড়়াই সাম্প্রতিক কালে বহু চর্চিত। তা নিয়ে যদিও তিমথির কোনও মাথাব্যথা নেই। কিন্তু, কেমন লাগল ভারতীয় দলকে? তিমথি বলল, ‘‘দারুণ দল। শেষ পর্যন্ত লড়়াই দিয়েছে। আমি এর আগে ভারতের বিরুদ্ধে কখনও খেলিনি। এই দল ভবিষ্যতে আরও ভাল কিছু করবে। বিশ্বের বড়় দলের বিরুদ্ধে খেলার ক্ষমতা রয়েছে।’’ সঙ্গে জুড়়ে দিল, ‘‘ভারতে আসার পর থেকে দেখছি এখানকার মানুষও খুব ভাল। তাদের ব্যবহার, কথাবার্তা খুব ভাল লাগছে।’’

আরও খবর
ফুটবল ঘিরে বাংলার চোখ ডিজিটালে

তবে, শেষ বেলায় একটাই টার্গেট ছাপিয়ে যাচ্ছে সব কিছুকে। বিশ্বকাপে নিজের সেরাটা দিয়ে পিএসজি-র প্রথম দলে জায়গা করে নিতে হবে যে দ্রুত। বাবা তো রয়েছেনই। সঙ্গে ভবিষ্যতের সাফল্যটাও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন